Logo
Logo
×

বাংলার মুখ

চট্টগ্রাম ষোলশহর রেল স্টেশনে জুয়ার আসর

অংশ নিচ্ছে শিক্ষার্থীরাও

Icon

চট্টগ্রাম ব্যুরো

প্রকাশ: ২৮ জুন ২০১৯, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

চট্টগ্রামের ষোলশহর রেলস্টেশন ঘিরে দোকানে-দোকানে বসছে জুয়ার আসর। রেললাইনের পাশে অস্থায়ী স্থাপনায় রয়েছে শতাধিক দোকান। এর মধ্যে ২৫ দোকানে প্রতিদিন বসানো হয় জুয়ার আসর। অভিযোগ রয়েছে, সরকারদলীয় নেতা, স্থানীয় পাঁচলাইশ ও জিআরপি থানার কতিপয় পুলিশ ও রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের ম্যানেজ করে এসব অপরাধ কর্মকাণ্ড চালিয়ে আসছে একটি চক্র। এছাড়া দীর্ঘদিন ধরে রেলস্টেশন ও আশপাশে চুরি, ছিনতাই, মাদক ব্যবসা, পতিতাবৃত্তি থেকে শুরু করে সব ধরনের অপরাধ কর্মকাণ্ড চলছে। সবমিলিয়ে ষোলশহর রেলস্টেশন এখন অপরাধীদের নিরাপদ আখড়ায় পরিণত হয়েছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়, এমনকি বিভিন্ন স্কুল-কলেজের অনেক শিক্ষার্থী এসব জুয়ার আসরে অংশ নিয়ে বিপদগামী হচ্ছে। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিকাংশ শিক্ষার্থী ষোলশহর রেলস্টেশন থেকে শাটল ট্রেনে যাতায়াত করেন। স্টেশন এলাকায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত থাকে শিক্ষার্থীদের আনাগোনা। অনেক কলেজ শিক্ষার্থী ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী আড্ডার সময় পার করতে স্টেশন এলাকা বেছে নেয়। ফলে সহজে স্কুল-কলেজের অনেক শিক্ষার্থী জুয়ার আসরে জড়িয়ে পড়ছে। সরেজমিন নগরীর ষোলশহর রেলস্টেশনে গিয়ে দেখা যায়, স্টেশনের প্রবেশপথে হাতের বামদিকে হেঁটে চলার পথ রয়েছে। রেললাইনের পাশে অবস্থিত এই সড়কে রয়েছে বেশ কিছু দোকান। এসব দোকানের যে কয়টিতে জুয়ার আসর চলে সেসব দোকানের সামনে রয়েছে মানুষের জটলা। কাছে গিয়ে দেখা যায়, দোকানগুলোর সামনের দিকে ব্যবসায় কার্যক্রম কেবল নামমাত্র। কিন্তু তাদের মূল ব্যবসা দোকানের পেছনের অংশে। জুয়ার আসর চলে এমন দোকানের মধ্যে রয়েছে- চায়ের দোকান, পান-সিগারেট, ভাতের হোটেল, রিকশার গ্যারেজ, গাড়ির গ্যারেজ ও পুরাতন জিনিসপত্রের (ভাঙারি) দোকান।

পাঁচ ধরনের জুয়া খেলা চলে আসরগুলোতে। ক্যারাম, পয়সা দিয়ে (চান-ফুল) খেলা, মারবেল দিয়ে (মুন্না-দরি), লুডু ও ক্রিকেট নিয়ে জুয়া খেলা হয়। প্রতিটি দোকানে ২০-৩০ জন জুয়ায় অংশ নেয়। বর্তমানে বিশ্বকাপ ক্রিকেট খেলা নিয়েও চলছে জমজমাট জুয়ার আসর। বছরের অন্যান্য সময় এসব জুয়ার আসরে বিপিএল, আইপিএল, বিশ্বকাপ, ওয়ানডে, এমনকি দেশ-বিদেশের টেস্ট খেলা ঘিরে চলে রমরমা জুয়া। স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিদিন স্থানীয় নেতাকর্মী, রেলওয়ে ও পাঁচলাইশ থানা পুলিশকে ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে থাকেন জুয়াড়ি রমজান।এক শিক্ষার্থীর অভিভাবক নুরুল আলম অভিযোগ করে বলেন, বাসা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্দেশে বের হয়ে ষোলশহর রেলস্টেশনের জুয়ার আসরে জড়িয়ে পড়েছে তার একমাত্র সন্তান। কয়েক মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ে যাচ্ছে না এমন খবর পেয়ে বিষয়টি জানতে পারেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে স্টেশন এলকায় ভ্রাম্যমাণ ফল ব্যবসা করেন আবদুর রহিম। তিনি বলেন, দৈনিক ও মাসিক হারে পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে জুয়ার আসরগুলো চালানো হয়। চট্টগ্রাম রেলওয়ে থানার ওসি মোস্তাফিজুর রহমান ভূঁইয়া বলেন, ষোলশহর রেলস্টেশন এলাকায় জুয়ার আসর চলছে এমন তথ্য আমার কাছে নেই। তবে এ ধরনের কোনো কিছু থাকলে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।’ জানতে চাইলে ষোলশহর রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির আইসি মো. জাকির হোসেন জানান, তিন বছর ধরে ষোলশহর রেলস্টেশনে থাকাকালীন জুয়ার আসর বসছে- এমন কোনো তথ্য তিনি জানেন না। তবে বিভিন্ন সময় অভিযোগ পেয়েছেন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম