দিনাজপুরে ট্রেনের টিকিট কালোবাজারিদের হাতে
দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১৭ আগস্ট ২০১৯, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
টিকিট কালোবাজারি সিন্ডিকেটের বেড়াজালে আবদ্ধ দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন। শুধু দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনের টিকিট নয়, এখান থেকেই তারা নিয়ন্ত্রণ করছে পার্বতীপুর, দিনাজপুর ও পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশনের টিকিট। কাউন্টারে টিকিট না মিললেও তিন থেকে চারগুণ দামে মিলছে ঢাকাগামী তিনটি আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট। এতে বিপাকে পড়েছেন ঈদের পর কর্মস্থলে ঢাকায় ফেরা দিনাজপুরের যাত্রীরা। এ ছাড়াও ঈদ উপলক্ষে তিনটি আন্তঃনগর ট্রেনের অতিরিক্ত বগি সংযোজন করা হলেও এসব বগির টিকিট ছাড়া হচ্ছে শুধু পঞ্চগড় থেকে। এ নিয়ে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে দিনাজপুরের রেলযাত্রীদের মধ্যে। এদিকে শনিবার দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে কালোবাজারিতে টিকিট বিক্রির সময় ছয়টি টিকিটসহ আমিনুল ইসলাম নামে একজনকে আটক করেছে রেলওয়ে পুলিশ। দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে সরেজমিন গিয়ে দেখা যায়, ঈদের পর কর্মস্থলে ফেরা মানুষের ট্রেনের টিকিট কাউন্টারে না মিললেও কালোবাজারিদের কাছ থেকে পাওয়া যাচ্ছে। ঈদের আগেই বিক্রির কথা বলা হলেও কালোবাজারিদের হাত থেকে তিনগুণ অথবা চারগুণ দামে মিলছে টিকিট। শোভন চেয়ার ৪৬৫ টাকার স্থলে এক হাজার ৫০০ টাকায়, এসি চেয়ার ৮৯২ টাকার স্থলে দুই হাজার ৫০০ টাকা থেকে তিন হাজার টাকায় মিলছে কালোবাজারিদের কাছ থেকে। এসব কালোবাজারি নিয়ন্ত্রণ করছে রেলওয়ের কিছু অসাধু কর্মকর্তা। দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে ঢাকাগামী ট্রেনের টিকিট না থাকলেও দিনাজপুর ও পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশনের টিকিট পাওয়া যাচ্ছে দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশন ও এর আশপাশে অবস্থানরত কালোবাজারিদের কাছ থেকে। আনিস নামে এক ব্যক্তি ও রেলওয়ে স্টেশনের সামনের ফ্লেক্সিলোডের একটি দোকান দিনাজপুর থেকেই নিয়ন্ত্রণ করছে ঢাকাগামী পঞ্চগড় রেলওয়ে স্টেশনের টিকিট। আর দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনের টিকিট নিয়ন্ত্রণ করছে আরেকটি চক্র। শনিবার আমিনুল ইসলাম নামে এসব সিন্ডিকেট চক্রের সদস্যকে দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনের ১ নম্বর প্লাটফর্মের প্রধান গেটের সামনে থেকে আটক করেছে রেলওয়ে পুলিশ। এ সময় তার কাছ থেকে ঢাকাগামী আন্তঃনগর পঞ্চগড় এক্সপ্রেস, দ্রুতযান এক্সপ্রেস ও একতা এক্সপ্রেসের ছয়টি টিকিট উদ্ধার করা হয়। আটক আমিনুল ইসলাম দিনাজপুর শহরের লালবাগ মহল্লার কফিল উদ্দীনের ছেলে। দিনাজপুর রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) থানার ওসি গুলজার হোসেন এ তথ্য নিশ্চিত করে বলেছেন, এ ব্যাপারে জিআরপি থানায় আটক আমিনুলের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। স্টেশন মাস্টার নার্গিস জানান, ঢাকাগামী তিনটি আন্তঃনগর ট্রেনের প্রতিটিতে অতিরিক্ত বগিসহ ১৪টি করে বগি নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। প্রতিটি বগিতে আসন রয়েছে ৯২টি করে। কিন্তু দিনাজপুর রেলওয়ে স্টেশনে প্রতিটি ট্রেনের মাত্র ১২৫ থেকে ১৫৭টি করে আসনের টিকিট বরাদ্দ করা হচ্ছে। এজন্য দিনাজপুরে যাত্রীদের কাছে ট্রেনির টিকিট বিক্রি করতে তাদের হিমশিম খেতে হয়েছে। টিকিট কালোবাজারি সম্পর্কে তিনি বলেন, কেউ কালোবাজারিতে ট্রেনের টিকিট বিক্রি করলে তাদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি।
