Logo
Logo
×

বাংলার মুখ

জলের পাখি মাছমুরাল

Icon

সমির মল্লিক, খাগড়াছড়ি

প্রকাশ: ২৭ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

পার্বত্য চট্টগ্রামের ৭২৫ বর্গকিলোমিটারজুড়ে কাপ্তাই হ্রদ। বিস্তৃত এ জলাভূমিতে অনেক পাখি বসবাস করে। সরকারিভাবে সচেতনতা বৃদ্ধির কারণে কাপ্তাই লেকে পাখি শিকার অনেকটাই কমেছে। শীতের শুরুতেই কাপ্তাই লেকের কাট্টলি বিল অংশে পাখির উপস্থিতি সারা বছরই চোখে পড়ে। কাপ্তাই লেকে প্রায়ই চোখে পড়ে মাছমুরাল। এটিকে কুরাঈগল নামেও ডাকা হয়। পাখিটি দুর্দান্ত সাহসী ও হিংস । এরা জলাশয় ছাড়া বনে বিচরণ করলেও এদের মূল বসতি জলাভূমি।

মাছমুরাল বা কুরাঈগল লম্বায় প্রায় ৫৫-৫৮ সেন্টিমিটার। এদের শরীরের বেশির ভাগজুড়ের বিস্তৃত ডানা রয়েছে। ডানার দৈর্ঘ্য ৪২-৪৫.৫ সেন্টিমিটার। ওজনে মাঝারি ধরনের মাছমুরাল পাখি ১.৬ কেজি। তবে পুরুষ মাছমুরাল থেকে স্ত্রী মাছমুরালের ডানা বড়। লম্বায় ৪৪.৫-৫১.৮ সেমি.। স্ত্রী পাখি ওজনে প্রায় ২ থেকে আড়াই কেজি। পাখিটির শরীরের তুলনায় মাথা খাটো। মাথায় বাদামি ধূসর রং। আকারে চিলের মতো। এদের পেট সাদা ও পিঠ কালচে বাদামি। ডানা বেশ লম্বা। চোখের সামনে ও পেছনে লম্বা কালো দাগ। লেজ কালচে ডোরা। চঞ্চু কালো। শক্ত-মজবুত ধারালো ঠোঁটের অগ্রভাগ বড়শির মতো বাঁকানো। চোখ হলদে। লম্বা পা সাদা পালকে ঢাকা। পায়ে বাঁকানো কালচে নখ। ঘাড় ও গলা লালচে-বাদামি। পেট সাদা। লেজ বাদামি, বৃত্তাকার ও খাটো। মাছমুরালের ইংরেজি নাম OSprey, বৈজ্ঞানিক নাম : Pandion Haliaetus।

রাঙ্গামাটির লংগদু থেকে মাছমুরালের ছবিটি তুলেছেন পাহাড়ের শৌখিন আলোকচিত্রী সবুজ চাকমা। কুরাঈগল বা মাছমুরালের প্রধান খাবার মাছ, সাপ, ইঁদুর। এরা লম্বা ঠোঁটের কারণে দ্রুত শিকার করতে পারে। এরা জলাভূমির গাছের ওপর বসে শিকারের অপেক্ষায় থাকে। শিকার খুঁজে জলাশয়ের ওপর চক্কর মেরে। ওপর থেকে নিশ্চিত হলে কেবল জলে ঝাঁপিয়ে পড়ে। মাছমুরালের প্রজননকাল নভেম্বর থেকে মে। এরা সর্বোচ্চ ২-৪টি ডিম পাড়ে। এক মাসের বেশি সময় তাপ দেয়ার পর ডিম ফুটে বাচ্চা হয়। দু’মাস বয়সে এরা উড়তে শিখে।

বাংলাদেশ ছাড়া উত্তর-পূর্ব ভারত, নেপাল, শ্রীলংকা, লাওস, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন, মালয়েশিয়া ও পশ্চিম ইন্দোনেশিয়ায় এদের দেখা যায়। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণবিষয়ক সংস্থা (আইইউসিএন) মাছমুরালকে শঙ্কামুক্ত হিসেবে তালিকাভুক্ত করেছে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম