ঢাকায় গুলিতে নিহত হন মাগুরার ৩ জন
মাগুরা প্রতিনিধি
প্রকাশ: ০৩ আগস্ট ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কোটা সংস্কার আন্দোলনে ঢাকায় একই দিনে নিহত হন মাগুরার তিনজন। তারা হচ্ছেন-মুগুরা সদর উপজেলার আজমপুর গ্রামের কালাম মোল্যার ছেলে রাজু আহমেদ (২৪), শ্রীপুর উপজেলার বরইচারা গ্রামের আক্কাস মোল্যার ছেলে মুসতাকিন বিল্লাহ (২৮) ও নহাটা গ্রামের আবদুর রাজ্জাকের ছেলে আসিফ ইকবাল রাব্বি (৩৪)। নিহতদের মধ্যে রাজু মাগুরা আদর্শ কলেজে ডিগ্রি শ্রেণিতে ভর্তি হলেও পারিবারিক অসচ্ছলতার কারণে লেখাপড়া বাদ দিয়েছেন তিন বছর আগে।
বাবা কালাম মোল্যা একজন দিনমজুর। অন্যের জমিতে শ্রম দিয়েই সাংসারিক ব্যয় নির্বাহ করেন। রাজুর বড়ভাই মালয়েশিয়ায় চাকরি করতেন। তিন মাস আগে শারীরিক অসুস্থতা নিয়ে দেশে ফিরেছেন। এ কারণে নিরুপায় হয়েই বাড়ি ছাড়তে হয়েছে রাজুকে। গত তিন মাস ধরে তিনি ঢাকায় জননী কুরিয়ার সার্ভিসে বুকিং অফিসার হিসাবে কাজ করছিলেন। কিন্তু কোটা সংস্কার আন্দোলন শুরু হলে প্রায় প্রতিদিনই তিনি কাজের ফাঁকে অংশ নিতেন বলে তার ঘনিষ্ঠজনরা জানিয়েছেন। এরই মধ্যে ১৯ জুলাই রাজুসহ তার কয়েক বন্ধু কালো পাঞ্জাবি পরে ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় ছাত্র আন্দোলনে অংশ নেন। সেখানেই গুলিবিদ্ধ হয়ে নিহত হন তিনি। রাজুর বড়ভাই অসুস্থতা নিয়ে দেশে ফিরে আসার পর রাজু চাকরি নিয়ে ঢাকায় গেলে বাবা-মা খুব খুশি হয়েছিলেন। নিয়মিত বাড়িতে টাকা পাঠাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎ রাজুর মৃত্যুতে একেবারেই ভেঙে পড়েছে তার পরিবার। বুধবার দুপুরে আজমপুর গ্রামের নিহত রাজুর বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মা নাসিমা খাতুন রাজুর পোশাক, পড়ার বই-ব্যাগ, কাঁথা-বালিশ হাতে নিয়ে বিলাপ করছেন। মা নাসিমা বেগম বলেন, ‘আগের রাতেও রাজুর সঙ্গে কথা হয়েছে। মোবাইল ফোনে সবার খবর নিয়েছে। ছেলে মিছিল মিটিংয়ে যাচ্ছে জানতে পারলে কখনোই যেতে দিতাম না। কিন্তু নিয়তি এমন ছিল বলেই ঘুণাক্ষরেও জানতে পারিনি।’ ঢাকায় নিহত আসিফ ইকবাল রাব্বি ঢাকায় একটি বায়িং হাউসে কর্মরত ছিলেন। গত ১৯ জুলাই তিনি মিরপুর-১০ এর ফলপট্টি এলাকায় পুলিশের গুলিতে নিহত হন। অন্যদিকে মুসতাকিন বিল্লাহ মিরপুরের একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে কাজ করতেন। তিনিও ১৯ জুলাই মিরপুর-১০ এর ফায়ার সার্ভিস গেটে পুলিশের গুলিতে নিহত হন।
