গুলিস্তান আন্ডারপাস: ব্যবহার করতে চান না পথচারীরা
ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার * প্রায় ঘটছে দুর্ঘটনা
আরমান ভূঁইয়া
প্রকাশ: ২১ জুলাই ২০১৯, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সড়ক দুর্ঘটনা কমাতে ও জনসাধারণের নির্বিঘ্ন চলাচল করতে গুলিস্তান চার রাস্তার মোড়ে তৈরি করা হয়েছে আন্ডারপাস। কিন্তু এ আন্ডারপাস ব্যবহারে পথচারীদের অনীহা রয়েছে।
বেশির ভাগ পথচারী সড়কের উপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। আন্ডারপাসের ভেতরে রয়েছে ইলেকট্রনিক (মোবাইল সামগ্রী) বঙ্গবন্ধু স্কয়ার পাতাল সড়ক মার্কেট।
যা সবার কাছে পাতাল মার্কেট হিসেবে পরিচিত। পাতালপথে চলাচলকারী বেশির ভাগই মোবাইল ক্রেতা। পথচারীদের অভিযোগ, পাতালপথটি পথচারী চলাচলের জন্য উপযুক্ত নয়। পাতালপথ দিয়ে চলাচলকারী পথচারীদের ক্রেতা ভেবে ডাকাডাকি করেন দোকানিরা। এতে বেশ বিরক্ত বোধ করেন তারা।
তবে, দোকানিরা অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, পথচারীদের ডাকাডাকি করা হয় না। যারা মোবাইল ক্রয় এবং সার্ভিসের জন্য আসেন তাদের ডাকা হয়। পাতাল মার্কেটে পথচারীদের তুলনায় বেশির ভাগ ক্রেতা আসেন বলেও জানান দোকানিরা।
পাতালপথের চার পাশে রয়েছে আটটি প্রবেশ পথ ও বের হওয়ার রাস্তা। এসি নিয়ন্ত্রিত এই মার্কেটে রয়েছে ১০৪টি দোকান। এসব দোকানে বিক্রয় করা হয় বিভিন্ন ব্যান্ডের মোবাইল ও অ্যাক্সেসরিজ।
সরেজমিন দেখা যায়, মওলানা ভাসানী হকি স্টেডিয়ামের পাশে গুলিস্তান চার রাস্তার মোড়ে তৈরি করা হয়েছে আন্ডারপাসটি। আন্ডারপাসের রক্ষণাবেক্ষণ করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন (ডিএসসিসি)। তবে, মার্কেটের ভেতরে পরিচ্ছন্নতা, সিকিউরিটি ও সিসি ক্যামেরা নিয়ন্ত্রণ করে মার্কেট সমিতি।
পাতালপথের চার পাশে প্রবেশমুখে রয়েছে ভাসমান একাধিক দোকান। পাতালপথের ভেতরে ছড়িয়ে ছিটিয়ে রয়েছে ময়লা-আবর্জনা। স্যাঁতসেঁতে ও ঘিঞ্জি পরিবেশ।
পাতালপথ দিয়ে পারাপার হওয়া পথচারী মিলন আহমেদ বলেন, এ পাতালপথের ভেতর দিয়ে খুব সামান্য পথচারী চলাচল করে। আরেক পথচারী খোকন বলেন, আন্ডারপাস দিয়ে চলাচল করলে বেশির ভাগ দোকানদার মনে করেন ক্রেতা।
তাই দোকানিরা ডাকাডাকি করেন। তাছাড়া পারাপারের জন্য পাতাল মার্কেটের ভেতরে ডুকলে বুঝা যায় না কোন দিকে গেলে কোন দিকে বের হওয়া যায়। নেই কোনো দিক নির্দেশনা।
পাতালপথের উপরে দেখা যায় বেশির ভাগই পথচারী সড়কের ওপর দিয়ে স্বাচ্ছন্দে পারাপার হচ্ছে। ঝুঁকি নিয়ে সড়ক পারাপার হওয়া পথচারী আসাদ বলেন, আন্ডারপাস দিয়ে পারাপারের চেয়ে ওপর দিয়ে চলাচল অনেক ভালো।
পাতালপথে প্রবেশে রয়েছে প্রতিবন্ধকতা। আবার নতুনদের জন্য বের হওয়াটাও আরেক প্রতিবন্ধকতা। ভেতরে পথচারী চলাচলে নেই কোনো সুযোগ-সুবিধা। দেখা যায়, আন্ডারপাসের ওপর সড়কে মাঝে পথচারী চলাচলে কোনো প্রতিবন্ধকতা নেই।
এতে, পথচারীরা নির্বিঘ্নে সড়ক দিয়ে পারাপার হচ্ছে। এতে সড়কে যানবাহন চলাচলে যেমন প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়। তেমনি প্রায় সময় ঘটছে সড়ক দুর্ঘটনা।
ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের (ডিএসসিসি) প্রধান রাজস্ব কর্মকর্তা মো. ইউসুফ আলী সরদার বলেন, আমরা গত বছর পাতালপথ দিয়ে পথচারীদের চলাচলে কিছু কাজ করেছি। বিভিন্নভাবে পথচারীদের কাউন্সেলিং করা হয়েছে।
প্রতিটি প্রবেশমুখে ৮-১০টা স্লোগান দিয়ে ব্যানার ও সাইন বোর্ড দেয়া হয়েছে। প্রবেশ মুখের দোকান উচ্ছেদ করে ও মিনিমাম ২০ ফিট পর্যন্ত যাতে কোনো প্রকার দোকান না থাকে সে ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে।
আন্ডারপাসের ভেতরে কোনো দোকানের সামনে কোনো প্রকার মালামাল রাখা যাবে না। এমন নির্দেশনাও দেয়া হয়েছে। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন ও নিরাপত্তার বিষয় আমরা নিয়মিত তদারক করি।
তিনি বলেন, পথচারীরা যাতে পাতালপথ ব্যবহার করতে বাধ্য হয়। তাই ট্রাফিক ইনজিনিয়ারিং বিভাগের সাথে আলোচনা করে সড়কের ওপর দিয়ে পথচারী পারাপার বন্ধ করার ব্যবস্থা করা হবে। এতে, সব পথচারী বাধ্য হয়ে আন্ডারপাস ব্যবহার করবে।
