Logo
Logo
×

রাজধানীর খবর

অবহেলায় খেলাঘর মাঠ

এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণে ছোট হওয়ার আশংকা

Icon

আরমান ভূঁইয়া

প্রকাশ: ১৬ জানুয়ারি ২০১৮, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

তেজগাঁও খেলাঘর মাঠ অযত্ন-অবহেলার মধ্যে পড়েছে। খেলাঘর ক্রিকেট একাডেমি থেকে জাতীয় দলের অনেক ফুটবলার ও ক্রিকেটার তৈরি হয়েছে। অথচ স্বাধীনতার ৪৬ বছর পেরিয়ে গেলেও এ মাঠটির কোনো উন্নয়ন হয়নি। এ মাঠটির ওপর দিয়ে তৈরি হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এতে সংকীর্ণ হয়ে যাচ্ছে মাঠটি।

১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকে খেলাঘর মাঠে নিয়মিত ফুটবল খেলা হতো। সে সময় ফুটবল টিমের বহু সাফল্যও রয়েছে। ১৯৮৮ সালে খেলাঘর ক্রিকেট দলের যাত্রা শুরু হয়। খেলাঘর ক্রিকেট দল ১৯৯৫ সালে প্রথম বিভাগে খেলে। বর্তমানে খেলাঘরের তিনটি ক্রিকেট টিম রয়েছে। খেলাঘর ক্রিকেট একাডেমি থেকে বেশ কিছু খেলোয়াড় বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলে খেলেছে এবং খেলছে। যার মধ্যে মরহুম মানজারুল ইসলাম রানা, আলমগীর কবীর, তানভীর ইসলাম ও জিয়াউর রহমান। জাতীয় নারী ক্রিকেট দলে নিগার সুলতানা (জ্যোতি), ফাহিমা খাতুন, রিতু মনি ও রুবাইয়া হায়দারসহ (ঝিলিক) আরও অনেকে।

খেলাঘর একাডেমির খেলোয়াড় এবং খুলনা টাইটানস সেরা ক্রিকেটার তানভীর ইসমাইল বলেন, খেলাঘর ক্রিকেটার তৈরি করে। এ খেলাঘর মাঠ থেকেই আমার মতো বহু ক্রিকেটার তৈরি হয়েছে। এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের জন্য মাঠের প্রায় অর্ধেক চলে যাচ্ছে। মাঠের পাশে আরও কিছু রেলের জায়গা আছে সেগুলো মাঠের জন্য দিলে খেলোয়াড়দের উপকার হবে। প্রতি বছর জাতীয় পর্যায়ে বহু ক্রিকেটার তৈরি হবে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, মাঠটির চারপাশে কোনো রকমে টিন ও বহু পুরাতন ভাঙা দেয়াল দিয়ে সীমানা দেয়া আছে। খেলোয়াড়দের জন্য নেই কোনো জিম বা ব্যায়ামাগার। খেলাঘর কমিটির (পরিচালনার) জন্য যে অফিস রুমগুলো রয়েছে সেগুলো বহু পুরাতন টিনসেড ঘর। এর মধ্যে মাঠটির ওপর দিয়ে অতিবাহিত হচ্ছে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্প। এতে মাঠের প্রায় ৫৬ শতাংশ জায়গা চলে যাচ্ছে।

এলাকাবাসী ও খেলাঘর কমিটির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা অভিযোগ করে বলেন, এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পটি যাওয়ায় খেলাঘর মাঠ প্রায় অর্ধেক হয়ে যাচ্ছে।

খেলাঘর ক্রিকেট একাডেমি ও বর্তমানে জাতীয় নারী ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় নিগার সুলতানা জ্যোতি বলেন, আমার মতো আরও অনেকেই এ খেলাঘর মাঠ থেকে উঠে এসেছে। যদিও মাঠটি খুব ছোট এবং খুব ভালো পরিবেশ নেই।

খেলাঘর ক্রিকেট একাডেমির কোচ ও খেলাঘর সমাজকল্যাণ সংঘের যুগ্মসম্পাদক মো. রুহুল আমিন বলেন, ১৯৫৭ সালে বাংলাদেশ রেলওয়ের জায়গায় মাঠটি হয়েছে। বর্তমানে মাঠের পাশে আরও কিছু রেলের জায়গা আছে, সে জায়গাগুলো যদি দেয়া হয় তবে মাঠটি একটি পূর্ণাঙ্গ মাঠ হিসেবে রূপ পাবে। এলাকাবাসীর হাঁটার জন্য কোনো জায়গা নেই, মাঠের ভেতরে চারপাশে একটি ওয়াকওয়ে তৈরি করা হবে।

তেজগাঁও রেলওয়ে খেলাঘর সমাজকল্যাণ সংঘের সভাপতি ও ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের (ডিএনসিসি) ২৬নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর শামিম হাসান বলেন, পুরো তেজগাঁওয়ের জন্য খেলাঘর একমাত্র খেলার মাঠ। এ মাঠে এলাকাবাসী ও খেলাঘরের প্রিমিয়ার দল ও খেলাঘর একাডেমির সদস্যরা খেলাধুলা করে। আমরা চেষ্টা করছি এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের পর মাঠটিকে আরও বড় পরিসরে করার। মাঠের পাশে আরও কয়েকটি রেল কোয়ার্টার রয়েছে। ইতিমধ্যে সেতু ও রেল মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছি এবং আলোচনা করছি। মাঠের উন্নয়ন সম্পর্কে তিনি বলেন, মাঠটিকে আরও বড় পরিসরে করতে চাই, যাতে করে প্রায় দুইশ’ খেলোয়াড় একত্রে খেলাধুলা করতে পারে। মাঠের চারপাশে হাঁটার জন্য রাস্তা করা হবে এবং গ্যালারি হবে। শিশুদের জন্য একটি বিনোদনের স্পটও করা হবে বলে জানান তিনি।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম