আরও দৃষ্টিনন্দন হচ্ছে রবীন্দ্র কুঠিবাড়ি
হক ফারুক আহমেদ
প্রকাশ: ০৫ মে ২০১৯, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কুষ্টিয়ার শিলাইদহের কুঠিবাড়িটি শুধু দৃষ্টিনন্দনই নয়, এর ঐতিহাসিক গুরুত্বও অপরিসীম। আর সাহিত্যপ্রেমী এবং শিক্ষার্থীদের জন্য এ যেন ইতিহাস ও সাহিত্যের মেলবন্ধন। এই কুঠিবাড়ি ও পুকুর পাড়ে বসেই বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নোবেলজয়ী কাব্যগ্রন্থ ‘গীতাঞ্জলি’র বেশিরভাগ কবিতা লিখেছিলেন।
পর্যটন ও ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিবেচনায় রবীন্দ্র কুঠিবাড়িকে আরও দৃষ্টিনন্দন করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার।
ভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় আগামী বছরই কুঠিবাড়িটির সম্প্রসারণ কাজ শেষ হবে। মূল নকশায় কিছু সংশোধন এবং দখলকৃত জমি উদ্ধারে সময় লাগায় সম্প্র্রসারণ কাজ শুরুতে কিছুটা দেরি হয়। বর্তমানে নকশা অনুযায়ী নতুন কমপ্লেক্স ও আনুষঙ্গিক কাজের প্রায় ৬০ শতাংশ শেষ হয়েছে।
কুষ্টিয়া প্রতিনিধি জানান, ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে কুঠিবাড়িতে কমপ্লেক্স নির্মাণ করছে গণপূর্ত বিভাগ। কমপ্লেক্সের ভেতরে থাকছে গ্রিক থিয়েটারের আদলে একটি মঞ্চ ও এমফি থিয়েটার, দ্বিতল ভবনবিশিষ্ট ক্যাফেটেরিয়া, লাইব্রেরি কাম ডকুমেন্টেশন সেন্টার, দ্বিতল ভবনবিশিষ্ট অত্যাধুনিক গেস্ট হাউস, টয়লেট ও আনসার শেড। প্রবেশমুখে থাকছে কুঠিবাড়ির আদলে নির্মিত অত্যাধুনিক গেট ও টিকিট কাউন্টার। কুঠিবাড়ির কাস্টোডিয়ান মুখলেছুর রহমান জানান, ২০২০ সালের মধ্যেই ভবনটির নির্মাণ কাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, ‘আমি কয়েকবার কাজ পরিদর্শন করেছি। খুব সুন্দর কাজ হচ্ছে এবং কাজের গুণগত মান অনেক ভালো। আগামী বছর কাজ শেষ হবে বলে আশা করছি।’
২০১৩ সালের মার্চে ভারতের তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখার্জি শিলাইদহ সফরে এসে কুঠিবাড়ির নানা সমস্যা অনুধাবন করে কমপ্লেক্স নির্মাণে অর্থায়নের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০১৫ সালের ৭ জুন প্রকল্পটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ২০১৭ সালের ৬ মে কুঠিবাড়ির বকুলতলায় দুই দেশের মধ্যে এ বিষয়ক একটি আর্থিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এরপর কুঠিবাড়ির প্রধান ফটকের সামনে দীর্ঘদিন ধরে অন্যের দখলে থাকা ৬ একর জমি উদ্ধার করে স্থানীয় প্রশাসন। সেখানেই নির্মিত হচ্ছে নতুন কমপ্লেক্স। এটির ডিজাইন করেছেন দেশের খ্যাতনামা স্থপতি রবিউল হুসাইন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা যুগান্তরকে জানান, নানা ধরনের জটিলতা কাটিয়ে কুঠিবাড়ির কমপ্লেক্সসহ অন্যান্য স্থাপনা নির্মাণের কাজ চলছে। এতে শুধু রবীন্দ্রপ্রেমীরাই নন, পর্যটকরাও মুগ্ধ হবেন। এলাকার পর্যটন শিল্প বিকশিত হবে।
এদিকে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ১৫৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে কুঠিবাড়ির বকুলতলায় সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় তিন দিনব্যাপী অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসন। বাংলা ২৫ বৈশাখ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ। সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের আরেকটি সূত্র জানিয়েছে, রবীন্দ্র কুঠিবাড়িটিকে একটি সাংস্কৃতিক কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সেখানে নিয়মিত সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে।
