Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

কুমিল্লায় ১৮ করোনা রোগীর চিকিৎসার বিল সাড়ে ৫ কোটি টাকা

Icon

আবুল খায়ের, কুমিল্লা ব্যুরো

প্রকাশ: ১৭ জুলাই ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কুমিল্লায় ১৮ করোনা রোগীর চিকিৎসার বিল সাড়ে ৫ কোটি টাকা

কুমিল্লায় ১৮ করোনা আক্রান্ত রোগীকে চিকিৎসা দিয়ে সাড়ে ৫ কোটি টাকা বিল দাবি করছে এএফসি হেলথ ফরটিস হার্ট ইন্সটিটিউট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। জেলা স্বাস্থ্য কমিটির অনুরোধে মাত্র ২২ দিন ওই ১৮ রোগীকে এ হসপিটালের ফ্লোর ব্যবহার করতে দিয়ে স্বাস্থ্য অধিদফতরে এমন ভুতুড়ে বিল দাখিল করা হয়। এ ছাড়া ওই ১৮ রোগীকে চিকিৎসাসেবার বিল হিসেবে পুনরায় কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ (কুমেক) হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কাছেও ১২ লাখ ৭৫ হাজার ৬৩৬ টাকা বিল দাবি করা হয়। প্রতারণার মাধ্যমে দুই জায়গা থেকে অর্থ হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টার বিষয়টি জানাজানি হলে সচেতন মহলে ব্যাপক তোলপাড় সৃষ্টি হয়।

এদিকে ২৩ জুন জেলা স্বাস্থ্য কমিটির সভায় ফরটিস হসপিটালে করোনায় আক্রান্ত ১৮ রোগীকে চিকিৎসার জন্য তাদের ফ্লোর ছেড়ে দেয়ার বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়। এতে ফরটিস হসপিটাল কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনের মাধ্যমে বিষয়টি নিষ্পত্তি করা হয়। কিন্তু এরপরেও জালিয়াতির মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানটি একাধিক স্থানে বিল দাখিল করে। অপরদিকে ফরটিসের বিল পরিশোধের জন্য স্বাস্থ্য অধিদফতরের একটি চক্র ব্যাপক দৌড়ঝাঁপ করছে বলেও শোনা যায়।

এদিকে ফরটিস হার্ট ইন্সটিটিউট হাসপাতালের কনসালটেন্ট ডা. মো. রাসেল আহমেদ চৌধুরী জানান, প্রধান শাখা থেকে স্বাস্থ্য অধিদফতরে দাখিল করা বিলের বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না। কুমিল্লায় যেসব রোগীকে সেবা দিয়েছি আমরা তাদের বিষয়ে কুমিল্লায় বিল দাখিল করেছি। স্থানীয়ভাবে আমরা বিল দিয়েছি, রোগীদের আমরা খাবার দিয়েছি, ওষুধ দিয়েছি, অক্সিজেন দিয়েছি। আর স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যেটা দিয়েছে সেটা প্রধান কার্যালয় থেকে দিয়েছে, এ বিষয়ে আমরা কিছুই জানি না।

জানা যায়, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব শুরু হলে কুমিল্লা জেলা স্বাস্থ্য কমিটি প্রথমে জেলার সদর দক্ষিণ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এবং পরে কুমেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের ভবনটিকে করোনা ইউনিট ঘোষণা করে। কিন্তু কুমেক হাসপাতালে আইসিইউ না থাকায় শহরতলির আড়াইওড়াস্থ এএফসি হেলথ ফরটিস হার্ট ইন্সটিটিউট হাসপাতালের ৯টি সিসিইউ বেডকে আইসিইউতে রূপান্তর করে করোনা আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা দেয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে জেলা স্বাস্থ্য কমিটি। সে অনুযায়ী কুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুজিবুর রহমানের তত্ত্বাবধানে ১০ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত ফরটিস হার্ট ইন্সটিটিউট হাসপাতালে ১৮ করোনা আক্রান্ত আইসিইউ সেবা নেন। এ সময় কুমেক থেকে চিকিৎসক এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহারের পক্ষ থেকে চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের বেতন পরিশোধ করা হয়। আর ফরটিস হসপিটালের শুধু ফ্লোর ব্যবহার করা হয়।

পরে ৩ জুন থেকে কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের করোনা আক্রান্তদের জন্য আইসিইউ সেবাসহ পূর্ণাঙ্গ করোনা ইউনিট চালু করা হয়। এরপর ফরটিস হার্ট ইন্সটিটিউট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বিপুল অংকের বিল দাখিল করে। কুমেক হাসপাতালের পরিচালক ডা. মুজিবুর রহমান জানান, ২২ দিন চিকিৎসক, নার্স ও স্টাফ আমরা দিয়েছি। তারা শুধু তাদের ফ্লোরটি ব্যবহারের জন্য দিয়েছে। ৩ জুন কুমেক হাসপাতালে করোনা ইউনিট চালুর সময় ফরটিস হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তখন কুমিল্লা সদর আসনের এমপি আ ক ম বাহাউদ্দিন বাহার তাদেরকে জানিয়ে দেন জেলা স্বাস্থ্য কমিটির সিদ্ধান্ত অনুযায়ী তাদের হাসপাতালের আইসিইউ ব্যবহার করা হয়েছে। সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী কোনো বিল দেয়ার কথা বা চুক্তি হয়নি। কজেই বিল দাখিল করা ঠিক হয়নি। তবে তারা দাবি করলে অক্সিজেন, ইউটিলিটি বিলটা দেয়া যেতে পারে।

করোনা

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম