Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

করোনায় রফতানি বাণিজ্যে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে বাংলাদেশ

অর্থবছরের জুলাইয়ে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে আয় বেশি হয়েছে ৪৬ কোটি ১৯ লাখ ডলার * পোশাক খাতের সঙ্গে চামড়া খাতেও রফতানি আয় বেড়েছে

Icon

যুগান্তর রিপোর্ট

প্রকাশ: ০৪ আগস্ট ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

করোনার মধ্যেও রফতানি আয়ে আশার আলো জাগিয়েছে। যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে রফতানি আয় বন্ধ আছে, সেখানে বাংলাদেশে চলতি অর্থবছরের (২০২০-২১) জুলাইয়ে পণ্য রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ৪৬ কোটি ১৯ লাখ ডলার বেশি আয় হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় বেশি হয়েছে ১৩ দশমিক ৩৯ শতাংশ। আর গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় বেশি হয়েছে শূন্য দশমিক ৫৯ শতাংশ। মঙ্গলবার রফতানি উন্নয়ন ব্যুরোর সর্বশেষ প্রকাশিত রফতানি আয়ের পরিসংখ্যান পর্যালোচনায় এসব তথ্য উঠে এসেছে।

পরিসংখ্যানে বলা হয়েছে, চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৪৪ কেটি ৯০ লাখ ডলার। যার বিপরীতে আয় হয়েছে ৩৯১ কোটি শূন্য ৯ লাখ ডলার। ইপিবির রফতানি আয়ের পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, জুলাইয়ে তৈরি পোশাক খাত ও চামড়া খাতে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন হয়েছে। অর্থবছরের জুলাইয়ে চামড়া ও চামড়াজাত পণ্যে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭ কোটি ৭৪ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৮ কোটি ৯৯ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় বেশি হয়েছে ১৬ দশমিক ২২ শতাংশ। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় এখাতে রফতানি আয় কমেছে ১৫ দশমিক ২৩ শতাংশ।

অন্যদিকে চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে তৈরি পোশাক খাতে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ২৮৪ কোটি ২০ লাখ ডলার। আয় হয়েছে ৩২৪ কোটি ৪৯ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় বেশি হয়েছে ১৪ দশমিক ১৮ শতাংশ। তবে গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ কমেছে।

জানতে চাইলে ইপিবির একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, করোনার মধ্যেও রফতানি খাত সচল রাখতে বাণিজ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সব ধরনের কার্যক্রম অব্যাহত আছে। যাতে এ মহামারীর মধ্যেও দেশে রফতানি খাত থেকে বেশি করে আয় হয় ও দেশের অর্থনীতি ভালোভাবে চলমান থাকে এ জন্য প্রত্যেকটি দেশের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত রাখা হচ্ছে। অনেক দেশ ইতোমধ্যে সাড়া দিয়েছে। দেশ থেকে বিভিন্ন পণ্য ও সেবা রফতানি হতে শুরু করেছে। আয়ও বাড়তে শুরু করেছে। তিনি বলেন, দেশে করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও রফতানি বাণিজ্যে দেশ ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করেছে। তাই আশা করা যায়, কয়েক মাসের মধ্যে আমরা সম্পূর্ণ ভাবে ঘুরে দাঁড়াব। ইপিবির তথ্যমতে, চলতি অর্থবছরের জুলাইয়ে পাট ও পাটজাত পণ্যে রফতানির আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯ কোটি ৮২ লাখ ডলার। যার বিপরীতে আয় হয়েছে ১০ কোটি ৩৫ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলানায় আয় বেশি হয়েছে ৫ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এছাড়া গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেড়েছে ৩৮ দশমিক ২৩ শতাংশ। কৃষিপণ্য খাতে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৯ কোটি ডলার। আয় হয়েছে ১০ কোটি ১০ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় বেশি হয়েছে ১২ দশমিক ২৮ শতাংশ। আর গত অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় আয় বেশি হয়েছে ৩০ দশমিক ৯২ শতাংশ।

এছাড়া দেশে উৎপাদিত পণ্য (সিমেন্ট, লবণ ইত্যাদি) খাতে চলতি অর্ধবছরের জুলাইয়ে রফতানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ৩৩১ কোটি ৭ লাখ ডলার। এর বিপরীতে আয় হয়েছে ৩৭৬ কোটি ৭৩ লাখ ডলার। লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় আয় বেশি হয়েছে ১৩ দশমিক ৭৯ শতাংশ। এদিকে ইপিবির তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বের বড় কয়েকটি ব্র্যান্ড স্থগিত ও বাতিল করা ক্রয়াদেশের পণ্য আবারও নিতে শুরু করায় পোশাক রফতানি জুন থেকে বেশ খানিকটা ঘুরে দাঁড়িয়েছে। পোশাক খাতের সংশ্লিষ্টরা বলছেন, করোনার মধ্যেও বাতিল হওয়া ও স্থগিতাদেশ হওয়া সেই পণ্য নিতে শুরু করেছেন বিদেশি ক্রেতারা। পাশাপাশি নতুন করে আসছে ক্রয়াদেশও। এরই মধ্যে কিছু কারখানায় সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কাজ করার মতো ক্রয়াদেশ চলে এসেছে। ফলে করোনাভাইরাসের শুরুর দিকে বিপর্যস্ত রফতানি আয়ের শীর্ষ এ খাতটি ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে।

এ বিষয়ে বিজিএমইএর সাবেক সভাপতি আবদুস সালাম মুর্শেদী বলেন, সাধারণ ছুটির মধ্যে কারখানা খুলে দেয়ার মতো চ্যালেঞ্জিং সিদ্ধান্ত নেয়া এবং শ্রমিকদের মধ্যে করোনা সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণ করতে পারায় বড় কারখানাগুলো টিকে থাকার মতো ক্রয়াদেশ ফিরে পেয়েছে। তাই করোনার মধ্যেও রফতানি আয়ে আশার আলো দেখা যাচ্ছে। তবে অন্যান্য খাতের জন্যও দীর্ঘ পরিকল্পনা নিয়ে রফতানি আয় আরও বাড়াতে হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম