Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

কলমের খোঁচায় সাংবাদিকের মর্যাদা কেড়ে নিয়েছে বিএনপি : তথ্যমন্ত্রী

Icon

সাংস্কৃতিক রিপোর্টার

প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

কলমের খোঁচায় সাংবাদিকের মর্যাদা কেড়ে নিয়েছে বিএনপি : তথ্যমন্ত্রী

তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের বিশেষ মর্যাদা দিয়েছিলেন। আর বিএনপি ২০০৬ সালে ক্ষমতায় গিয়ে এক কলমের খোঁচায় তা কেড়ে নিয়েছিল। আওয়ামী লীগ সেই মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠায় কাজ করছে।

বুধবার বিকালে রাজধানীর কাকরাইলে বাংলাদেশ প্রেস ইন্সটিটিউট- পিআইবি মিলনায়তনে ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৫তম শাহাদতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস’ উপলক্ষে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন- বিএফইউজের সহায়তায় বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্ট আয়োজিত সভায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন জাতীয় প্রেস ক্লাব সভাপতি ও যুগান্তর সম্পাদক সাইফুল আলম, বিএফইউজে সভাপতি মোল্লা জালাল, জাতীয় প্রেস ক্লাব সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন, বিএফইউজে মহাসচিব শাবান মাহমুদ, ডিইউজে সভাপতি কুদ্দুস আফ্রাদ, ডিইউজে সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান তপু। উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের সদস্য কাশেম হুমায়ুন, বিএফইউজের যুগ্ম মহাসচিব আবদুল মজিদ। সভাপ্রধান ছিলেন তথ্যসচিব ও বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাস্টি বোর্ডের ভাইস চেয়ারম্যান কামরুন নাহার। এতে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাফর ওয়াজেদ। সঞ্চালনা করেন বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের উপপরিচালক মনিরুল ইসলাম কবীর।

তথ্যমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু সাংবাদিকদের অনেক উচ্চাসনে বসিয়েছিলেন। বঙ্গবন্ধুর হাত ধরে প্রেস ইন্সটিটিউট, প্রেস কাউন্সিল গঠিত হয়, তার হাত ধরেই ওয়েজবোর্ড গঠিত হয়। তিনি সাংবাদিকদের বিশেষ মর্যাদা দিতেন। যেটি ২০০৬ সালে বেগম খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রী থাকাকালে এক কলমের খোঁচায় কেড়ে নিয়ে তাদের শ্রমিক বানিয়ে দিলেন। সাংবাদিকদের বিশেষ মর্যাদাটা কেড়ে নেয়া হল। অর্থাৎ তারা (বিএনপি) সাংবাদিক এবং শ্রমিকের মধ্যে কোনো পার্থক্য রাখলেন না, যা অত্যন্ত দুঃখজনক, ন্যক্কারজনক ও নিন্দনীয়, বলেন ড. হাছান মাহমুদ।

প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশনায় সেই আইন সংশোধনের কাজ চলছে এবং সংশোধিত আইনের খসড়া ইতোমধ্যেই নীতিগত অনুমোদন পেয়েছে বলে জানান তথ্যমন্ত্রী। খসড়া আইনটি এখন আইন মন্ত্রণালয়ের নিরীক্ষাধীন রয়েছে, যা সমাপনান্তে শিগগিরই মন্ত্রিসভা হয়ে সংসদে উত্থাপনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। তথ্যমন্ত্রী বলেন, সংশোধিত আইনটি পাস হলে সাংবাদিকদের যে মর্যাদা হরণ করা হয়েছিল, তা পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হবে।

মূল প্রবন্ধে জাফর ওয়াজেদ বলেন, বাঙালির জীবনের সবচেয়ে বড় অধ্যায় বঙ্গবন্ধু। জাতির পিতা তিনি। পরাধীনতার অন্ধকার থেকে আন্দোলন-সংগ্রাম আর সশস্ত্র যুদ্ধের মাধ্যমে একটি স্বাধীন দেশের নির্মাতা তিনি। পঁচাত্তরপরবর্তী জান্তা ও নির্বাচিত শাসকরা তার নামোচ্চারণ নিষিদ্ধ করেছিল। ইতিহাসসহ সব স্থাপনা থেকে মুছে ফেলা হয়েছিল তার নাম। কিন্তু তা বেশি দিন সম্ভব হয়নি। সব দুর্ভেদ্য অন্ধকার ভেদ করে তিনি আলোকিত হয়ে উঠেছেন ক্রমাগত।

সাইফুল আলম বলেন, বাংলাদেশের অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার জন্ম না হলে বাংলাদেশের সৃষ্টি হতো না। তিনি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি। কথাগুলো আমরা সচরাচর বলি এবং মনেপ্রাণে বিশ্বাসও করি। কিন্তু বঙ্গবন্ধু যে জীবনাচারের মধ্য দিয়ে বঙ্গবন্ধুতে পরিণত হয়েছেন, জাতির পিতা হয়েছেন সেটা আমরা কতটা অনুসরণ করি, সেখান থেকে কতটা অনুপ্রেরণা নিচ্ছি, জীবনে প্রয়োগ করছি তা ভাবতে হবে।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধু সারা জীবন গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলন থেকে ১৯৪৭-এর পাকিস্তান সৃষ্টির সংগ্রামেও ছিলেন। সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে তার আপোসহীন চেতনা ছিল। শেখ হাসিনার সরকার জাতির জন্য অনেক কাজ করেছে। তার মধ্যে দুটি উল্লেখযোগ্য কাজ হল, বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার ও যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করা হয়েছে। আমি আরেকটি কাজকে প্রাধান্য দিতে চাই। বঙ্গবন্ধুর লেখা তিনটি বই ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’, ‘কারাগারের রোজনামচা’ ও ‘আমার দেখা নয়াচীন’ প্রকাশ হয়েছে। এ তিনটি বই বিপ্লব ঘটাতে পারে। বইগুলোতে রাজনীতি, সমাজনীতি, অর্থনীতি ও সময়ের প্রতিচ্ছবি আছে। আগামী প্রজন্মকে উদ্বুদ্ধ করতে আমরা বইগুলো যদি পড়ার ব্যবস্থা করতে পারি, আত্মস্থ করতে পারি, প্রয়োগ করতে পারি তাহলে বঙ্গবন্ধু হাজার হাজার বছর বেঁচে থাকবেন।

মোল্লা জালাল বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ছাড়া বাংলা সাহিত্যের অস্তিত্ব যেমন থাকে না, ঠিক একইভাবে বাঙালির আশা, আকাক্সক্ষা, সংগ্রাম, ইতিহাস বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে ছাড়া ভাবা যায় না।

ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, বঙ্গবন্ধু মানে একটি পতাকা, একটি দেশ, জাতিসত্তা। প্রজন্মের পর প্রজন্মে তাকে ছড়িয়ে দিতে হলে পাঠ্যপুস্তকে বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আসতে হবে। শাবান মাহমুদ বলেন, একটি শক্তি এখনও বাংলাদেশের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে লিপ্ত। সুযোগ পেলেই তারা আবার বাংলাদেশের বিপক্ষে রুখে দাঁড়াবে। এদেরকে চিরতরে নির্বাসিত করতে হবে। কুদ্দুস আফ্রাদ বলেন, বঙ্গবন্ধু আমাদেরকে একটি দেশ উপহার দিয়েছেন। তিনি আমাদের অগ্রগতির চেতনা ও আদর্শ। সাজ্জাদ আলম খান তপু বলেন, বঙ্গবন্ধু ভৌগোলিক স্বাধীনতার পর এ দেশে অর্থনৈতিক মুক্তির জন্য দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি শুরু করেছিলেন। আজকের এই কঠিন বাস্তবতায় দ্বিতীয় বিপ্লবের কর্মসূচি বাস্তবায়ন আমাদের জন্য সহায়ক হতে পারে। সভাপ্রধানের বক্তৃতায় তথ্য সচিব কামরুন নাহার বলেন, আমাদের নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শে গড়ে তুলতে হবে। তাহলেই ঘরে ঘরে গড়ে উঠবে লক্ষ মুজিব, বাংলাদেশ হবে জাতির পিতার স্বপ্নের সোনার বাংলা।

তথ্যমন্ত্রী

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম