ইবি’র শিক্ষক রাজনীতি
জিয়া পরিষদ ভেঙে সাদা দলের যাত্রা শুরু
অনৈক্য থেকে এ ভাঙন
সরকার মাসুম, ইবি
প্রকাশ: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জ্ঞান, শান্তি ও সংহতি মূলমন্ত্র সামনে রেখে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) বিএনপিপন্থী বেশ কয়েকজন শিক্ষককে নিয়ে আত্মপ্রকাশ করেছে ‘সাদা দল’। জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী জিয়া পরিষদ থেকে বের হয়েই এ দলের আত্মপ্রকাশ ঘটেছে। ৬ সেপ্টেম্বর জিয়া পরিষদ নেতা প্রফেসর ড. মতিনুর রহমানকে আহ্বায়ক ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের প্রফেসর ড. এএসএম শরফরাজ নেওয়াজকে সদস্য সচিব করে বিএনপি ও জামায়াতপন্থী ২৬ শিক্ষক নিয়ে দলের কমিটি গঠিত হয়েছে। এছাড়া কমিটিতে যুগ্ম আহ্বায়ক পাঁচজন, উপদেষ্টা ছয়জন ও সদস্য রয়েছেন ১৩ জন শিক্ষক। মূল সংগঠন থেকে বের হয়ে ভিন্ন দল গঠন করায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিষয়টি নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে চলছে নানা সমালোচনা।
জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জামায়াত ও বামপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন রয়েছে চারটি। এর মধ্যে বঙ্গবন্ধু পরিষদ, আওয়ামী লীগ ও বামপন্থী শিক্ষকদের শাপলা ফোরাম, বিএনপির জিয়া পরিষদ ও জামায়াতের গ্রিন ফোরাম। আওয়ামীপন্থী বঙ্গবন্ধু পরিষদে আগে থেকেই বিভক্তি রয়েছে। এবার বিভক্তি সৃষ্টি হয়েছে জিয়া পরিষদে। নতুন এ দল গঠনের মধ্য দিয়ে মূলত বিএনপির ঐক্যে ভাঙন ধরল। এ ভাঙনের পেছনে বিএনপি নেতা প্রফেসর ড. মতিনুর রহমানকে দায়ী করছেন জিয়া পরিষদের নেতাকর্মীরা।
দলীয় নেতাকর্মীদের অভিযোগ- বর্তমান জিয়া পরিষদ সভাপতির সাথে মতপার্থক্য রয়েছে ড. মতিনুরের। এ থেকেই এ বছর শিক্ষক সমিতির নির্বাচনে পরিষদ থেকে বের হয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে সভাপতি-সম্পাদক পদে অংশ নেন সাদা দলের আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব। এর মধ্য দিয়ে দলের মধ্যে ভাঙনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে। শিক্ষক সমিতি নির্বাচনে বিএনপি-জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকরা পূর্ণ প্যানেলে নির্বাচনে অংশ নেয়। ১৫ সদস্যের কমিটিতে সাধারণ সম্পাদকসহ পাঁচজন শিক্ষক জয়লাভ করে। বিএনপি থেকে সরে গিয়ে স্বতন্ত্রভাবে নির্বাচনে অংশ নেয়ায় পূর্ণ প্যানেলে জয়ী হতে পারেনি বলে অভিযোগ জিয়া পরিষদের। প্রফেসর ড. মতিনুর ২০১১ সালে জিয়া পরিষদের ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি হিসেবে দলের নেতৃত্ব দিয়েছেন। দলের গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকেও কেন তিনি নতুন দল গঠন করেছেন, এমন প্রশ্ন জিয়া পরিষদের নেতাকর্মীদের।
তবে, একটি স্বচ্ছ প্লাটফর্ম থেকে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো কিছু করার প্রত্যাশা ব্যক্ত করে সাদা দলের আহ্বায়ক প্রফেসর ড. মতিনুর যুগান্তরকে বলেন, সাদা দল এর আগেও ছিল, তবে এর কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বিশ্ববিদ্যালয় জ্ঞান অর্জনের স্থান। শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে শান্তি সংহতির সমন্বয় রাখতে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের সব কাজে আমরা ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে চাই। আমরা অন্যায়কে অন্যায় বলতে চাই।
জিয়া পরিষদ সভাপতি প্রফেসর ড. তোজাম্মেল হোসেন যুগান্তরকে বলেন, আমাদের ঐক্যে ফাটল ধরাতে আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের ইশারায় সাদা দল গঠন করা হয়েছে। এ কমিটিতে যাদের নাম এসেছে তাদের বেশির ভাগই এসব বিষয়ে জানে না। তারা জিয়া পরিষদে থাকতে চায়। এর আগেও দল থেকে বের হয়ে বিতর্কিত কার্যক্রমে অংশ নিয়ে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হয়েছে।
