Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

ঝিমিয়ে পড়ছে ভিসি ট্রেজারার শূন্য ইবি

আটকে গেছে চারশ’ ফাইল * অনুমোদন না দেয়ায় বেতন অনিশ্চিত

Icon

সরকার মাসুম, ইবি

প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

২১ আগস্ট শেষ হয়েছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের-ইবি ভিসি ও ট্রেজারারের মেয়াদ। ১ মাস পার হলেও গুরুত্বপূর্ণ এ পদ দুটিতে এখন পর্যন্ত কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। ব্যাহত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাভাবিক কার্যক্রম। এছাড়াও ‘মড়ার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হয়ে দাঁড়িয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের গুরুত্বপূর্ণ পদ দুটির অভিভাবক শূন্যতা। প্রধান দুই কর্তাব্যক্তি না থাকায় অনেকটা ঝিমিয়ে পড়ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক, প্রশাসনিক ও চলমান উন্নয়নমূলক কাজ। করোনা মহামারীতে বেতন-ভাতা আটকে থাকায় মানবেতর জীবনযাপন করছেন অনেকে। বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এসএম আবদুল লতিফ যুগান্তরকে বলেন, ভিসি ও ট্রেজারার না থাকায় গুরুত্বপূর্ণ ফাইলগুলো আটকে আছে। শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা দেয়া সম্ভব হচ্ছে না। চলতি মাসের মধ্যে দুই পদে সরকার নতুন কাউকে নিয়োগ না দিলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাউকে বেতন দেয়া সম্ভব হবে না।মহামারী করোনার কারণে বন্ধ ক্যাম্পাসে বিকল্প শিক্ষাদান হিসেবে চলমান রয়েছে অনলাইনভিত্তিক শিক্ষা কার্যক্রম। এতে একাডেমিক অঙ্গনে কিছুটা গতিশীলতা ফিরে আসে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিভাবক না থাকায় অধিকাংশ বিভাগের শিক্ষা কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে অভিযোগ শিক্ষার্থীদের। বেশি প্রভাব পড়েছে প্রশাসনিক কাজে। রেজিস্ট্রার দফতরে আটকে আছে প্রায় চারশ’ ফাইল। বেশ কয়েকটি বিভাগে সভাপতির মেয়াদ পূর্ণ হলেও নতুন সভাপতি নিয়োগ দান সম্ভব হচ্ছে না। ইতোমধ্যে বিভিন্ন বিভাগের স্নাতক পরীক্ষা শেষ হলেও ফল প্রকাশে হেলদোল নেই কর্তৃপক্ষের। ফলে স্বাক্ষরের অভাবে শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীদের পদোন্নতিসহ আটকে আছে ফাইলপত্র। বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন দফতর খোলা থাকলেও কার্যত কাজ শূন্য দফতরগুলো। বর্তমান প্রোভিসি প্রশাসনিক কাজ কিছুটা জোড়াতালি দিয়ে এগিয়ে নেয়ার চেষ্টা করছেন। তবে এখতিয়ার না থাকায় প্রয়োজনীয় ফাইল স্বাক্ষর ও অর্থনৈতিক কোনো কার্যক্রম চলমান রাখা সম্ভব হচ্ছে না। অনুমোদন না দেয়ায় আগস্ট মাসের বেতন তুলতে পারেননি শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীসহ ১৯৪ জন। একই সঙ্গে সেপ্টেম্বরের বেতন পাওয়া নিয়েও অনিশ্চয়তার প্রহর গুনছেন তারা। এর মধ্যে রয়েছেন ইবি ল্যাবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ২০ জন শিক্ষক-কর্মকর্তা, ৯৪ জন নিরাপত্তকর্মী (আনসার সদস্য) এবং ৮০ জন থোক (চুক্তিভিত্তিক মজুরি) কর্মচারী।

জানা যায়, মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার দিন বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ভিসি ও ট্রেজারার শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন-ভাতা প্রদানের অনুমতি ফাইল স্বাক্ষর করেন। তবে নিু আয়ের এই ১৯৪ জনের বেতন-ভাতা প্রদানে অনুমতি দেয়া হয়নি। ফলে স্কুলের প্রায় আট লাখ টাকা, আনসার সদস্যদের প্রায় ১২ লাখ টাকা এবং থোক কর্মচারীদের সাড়ে ১২ লাখ টাকা বেতন আটকে আছে।

ইবি ল্যবরেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ গোলাম মামুন বলেন, শিক্ষকরা খুবই অমানবিক জীবনযাপন করছেন। বেতন না পেয়ে মানবেতর দিন কাটাচ্ছেন নিরাপত্তাকর্মীরাও। বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থ ও হিসাব শাখার তথ্যমতে, প্রতি মাসে বেতন-ভাতার পরিমাণ ১০ কোটি টাকা। ভিসি ও ট্রেজারার না থাকায় আটকে যাবে বেতন।

বিশ্ববিদ্যালয়ে উন্নয়ন প্রকল্পে বর্তমানে প্রায় ৭৫ কোটি টাকার ১০টি প্রকল্পের কাজ চলমান। ইতোমধ্যে কাজগুলো গড়ে ৩৫ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। চলমান কাজ ধীরে ধীরে থেমে যাচ্ছে। ভিসি ও ট্রেজারার না থাকায় কাজ করলেও ঠিকাদাররা নিয়মিত বিল তুলতে পারছেন না। শ্রমিকরাও কাজ বন্ধ রাখছেন। এছাড়া নতুন কিছু ভবনের টেন্ডার সম্পন্ন হলেও ভিসির অনুমতি ছাড়া কার্যাদেশ দেয়া যাচ্ছে না বলে যুগান্তরকে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান প্রকৌশলী আলিমুজ্জামান টুটুল।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম