পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান বলেছেন, দেশে টাকার অভাব নেই। তবে এখন থেকে লক্ষ্যভিত্তিক অর্থব্যয়ের দিকে যাচ্ছে সরকার। গত একনেক বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অর্থ ব্যয় কোথায় হচ্ছে সেটি দেখতে হবে। তাই এখন থেকে ব্যয়টা লক্ষ্যভিত্তিক করা হচ্ছে। এর মধ্যে প্রধান লক্ষ্য থাকবে পানি। সেই সঙ্গে হাইজিন ও স্যানিটেশন।

‘পানি, স্যানিটেশন ও হাইজিন বিষয়ক ন্যায্যতা ভিত্তিক বাজেট বরাদ্দ’ শীর্ষক এক ওয়েবিনারে বৃহস্পতিবার প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সভায় বাজেটে ওয়াশ (ওয়াটার, স্যানিটেশন ও হাইজিন) খাতের বরাদ্দ বৃদ্ধির তাগিদ দিয়েছেন বক্তারা। ২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় এশিয়া প্যাসিফিক অর্থমন্ত্রী সভা-২০২০ উপলক্ষে যৌথভাবে এ আলোচনার আয়োজন করেছে ডেভেলপমেন্ট জার্নালিস্ট ফোরাম অব বাংলাদেশ (ডিজেএফবি) এবং ডরপ।

পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, আমরা উন্নত দেশের সারিতে যেতে চাচ্ছি। উন্নত দেশের প্রধান পরিচয় হবে সার্বক্ষণিক বিদ্যুৎ ও পানি সরবরাহ। আমরা সেই চেষ্টা চালাচ্ছি। অনেকটা সফলও হয়েছি। কিন্তু তারপরও আরও কাজ করতে হবে। বাজেটে ওয়াশ খাতে বরাদ্দ আরও বাড়ানো প্রয়োজন। আমাদের অর্থ খরচের টার্গেট নিয়ে নানা ঝামেলা হয় অনেক সময়। নানা ধরনের চাপ থাকে। এজন্য এক রাতেই ওয়াশ খাতে বেশি বরাদ্দ দেয়া হয়তো সম্ভব হবে না। কিন্তু সরকার বরাদ্দ বাড়াচ্ছে এবং সেটি অব্যাহত থাকবে। সম্প্রতি হাওর এলাকায় বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য ৮শ’ কোটি টাকার একটি প্রকল্প অনুমোদন দিয়েছে একনেক। স্যানিটেশনের জন্যও প্রকল্প হচ্ছে।

ডিজেএফবির সদস্য সুশান্ত সিনহার সঞ্চালনায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের সদস্য (সিনিয়র সচিব) ড. শামসুল আলম। আলোচনায় অংশ নেন এসডব্লিউএর দক্ষিণ এশিয়া প্রতিনিধি ও ডরপের গবেষণা পরিচালক যোবায়ের হাসান, স্থানীয় সরকার বিভাগের পলিসি সাপোর্ট ব্রাঞ্চের যুগ্ম সচিব ইমদাদুল হক চৌধুরী, ইউনিসেফের ওয়াস স্পেশালিস্ট মনিরুল আলম, ডিজেএফবির সভাপতি এফএইচএম হুমায়ন কবীর, ক্যাম্পেইন ফর টোব্যাকো ফ্রিকিডসের গ্রান্ডস ম্যানেজার আবদুস ছালাম মিয়া, বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর উপ-পরিচালক আলমগীর হোসেন এবং ওয়াটার এইড বাংলাদেশের রঞ্জন ঘোষ প্রমুখ।

মূল প্রবন্ধে ড. শামসুল আলম বলেন, উন্নয়নের জন্য ওয়াশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রার (এসডিজি) গোল-৬ এর সঙ্গে যুক্ত এটি। ওয়াশ বাস্তবায়ন না হলে এসডিজির অনেক অভীষ্টই অর্জন হবে না। এসডিজির লক্ষ্য পূরণে বাজেটে ওয়াশ খাতের ব্যয় কয়েকগুণ বাড়াতে হবে। বিশ্বে এখন ৭০ কোটি মানুষ খোলা আকাশের নিচে মলত্যাগ করেন। দেশেও এখনও অনেক মানুষ খোলা জায়গায় মলত্যাগ করেন।