শিক্ষার্থীর গাদাগাদি সিলেটে কোচিং সেন্টারের ক্লাসে
বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বার্ষিক পরীক্ষাও
সিলেট ব্যুরো
২৭ নভেম্বর ২০২০, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
শীত মৌসুমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা থেকে সরকার দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে বাতিল করা হয়েছে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষাও। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও সিলেটে ওমেকা ও ইউসিসি নামের দুটি কোচিং সেন্টার শিক্ষার্থীদের সরাসরি ক্লাস করতে উদ্বুদ্ধ করছে। সরাসরি ক্লাস নিচ্ছে। ছোট ছোট রুমে গাদাগাদি করে ক্লাস নেয়ার ফলে মানা হচ্ছে না ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধিও। এছাড়া একাধিক কোচিং সেন্টার অফলাইনে ক্লাস চালুর বিষয়ে নগরীতে লিফলেট ও পোস্টারিং করতে দেখা গেছে।
অথচ করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে সরকার চলতি বছরের এইচএসসি, এসএসসি, জেএসডি পরীক্ষা বাতিল করেছে। এসব পরীক্ষার বদলে সব শিক্ষার্থীকে ‘অটোপাস’ দেয়া হচ্ছে। আর বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া না হলেও সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, তারা প্রতিটি বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা নেবে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং সেন্টারগুলো আগ্রহী শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু করেছে। অধিকাংশ কোচিং সেন্টার অনলাইনে ক্লাসের বিষয় জানিয়ে ভর্তি ও অনলাইনে ক্লাস শুরু করলেও ‘ওমেকা কোচিং সেন্টার’ ও ‘ইউসিসি কোচিং সেন্টার’ সরাসরি ক্লাসে ভর্তি করছে শিক্ষার্থী। নিয়মের বাইরে এসে সিলেটে (বিশ্ববিদ্যালয়/মেডিকেল/ইঞ্জিনিয়ারিং/ শাবিপ্রবি স্পেশাল ব্যাচ) সরাসরি শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে ক্লাসও চলছে এ দুই কোচিং সেন্টারে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনাকালীন এ পরিস্থিতিতে ওমেকা কোচিং সেন্টার ও ইউসিসি কোচিং সেন্টার সিলেট শাখায় শিক্ষার্থীদের সরাসরি ক্লাসে উপস্থিত থেকে ক্লাস করার সুবিধা দেখিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করছে। এমনকি ওমেকা কোচিং সেন্টারের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকেও সরাসরি ক্লাস শুরুর বিষয়ে পোস্ট দেয়া হয়। ১৩ অক্টোবরে প্রদত্ত পোস্টের ভাষ্যমতে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে প্রথম দিনের ক্লাস। এভাবে প্রতিকূলতা কাটিয়ে আমরা নিজেদের প্রস্তুত করতে চাই আগামীর লক্ষ্যে। ভর্তি চলছে। প্রতি ব্যাচে ২০ জন করে।
তবে ইউসিসি সিলেটের পরিচালক রাশেদুল কবির খোকন যুগান্তরের কাছে দাবি করেন, তার প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন। তিনি সবাইকে মাস্ক পরে আসার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। কেউ মাস্ক ছাড়া এলে তাকে ক্লাসে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এছাড়া ক্লাসের ভেতর তিনি সবাইকে তিন ফিট দূরত্ব বজায় রেখে বসাচ্ছেন। সরকারি নির্দেশ অমান্য করে কেন সরাসরি ভর্তি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে কিছু শিক্ষার্থী আছে যাদের অনলাইনে ক্লাস করার সক্ষমতা নেই। কিংবা গ্রামে বসবাসের কারণে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সেবা থেকে বঞ্চিত। সেজন্য আমরা তাদের সরাসরি ক্লাসে ভর্তি করছি।
সরাসরি ক্লাসের বিষয় অস্বীকার করে ওমেকা কোচিং সেন্টার সিলেটের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মির্জা তারেক আহমদ বেগ যুগান্তরকে বলেন, প্রথমদিকে শিক্ষার্থীদের অ্যাপস বুঝিয়ে দেয়ার জন্য একদিন ক্লাস নেয়া হয়েছে। এরপর থেকে অনলাইনে ক্লাস চলছে। তবে ওমেকা সিলেটের অফিসিয়াল নম্বরে (০১৬১১৮৬৪৫১৩) যোগাযোগ করলে তারা সরাসরি ভর্তির বিষয়টি স্বীকার করেন। কিন্তু সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর তথ্য দাতা নাম প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
এ ব্যাপারে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আ.ন.ম. বদরুদ্দোজা যুগান্তরকে বলেন, আমরা বুধবার অভিযানে গিয়ে তাদের সতর্ক করে আসছি। আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে আর সরাসরি ক্লাস হবে না।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: [email protected]
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
বন্ধ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বার্ষিক পরীক্ষাও
শিক্ষার্থীর গাদাগাদি সিলেটে কোচিং সেন্টারের ক্লাসে
শীত মৌসুমে করোনাভাইরাসের সংক্রমণ বৃদ্ধি পাওয়ার শঙ্কা থেকে সরকার দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। একই সঙ্গে বাতিল করা হয়েছে স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষাও। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তায় সরকার নানা পদক্ষেপ নিলেও সিলেটে ওমেকা ও ইউসিসি নামের দুটি কোচিং সেন্টার শিক্ষার্থীদের সরাসরি ক্লাস করতে উদ্বুদ্ধ করছে। সরাসরি ক্লাস নিচ্ছে। ছোট ছোট রুমে গাদাগাদি করে ক্লাস নেয়ার ফলে মানা হচ্ছে না ন্যূনতম স্বাস্থ্যবিধিও। এছাড়া একাধিক কোচিং সেন্টার অফলাইনে ক্লাস চালুর বিষয়ে নগরীতে লিফলেট ও পোস্টারিং করতে দেখা গেছে।
অথচ করোনা পরিস্থিতির কথা বিবেচনা করে সরকার চলতি বছরের এইচএসসি, এসএসসি, জেএসডি পরীক্ষা বাতিল করেছে। এসব পরীক্ষার বদলে সব শিক্ষার্থীকে ‘অটোপাস’ দেয়া হচ্ছে। আর বিশ্ববিদ্যালয় কিংবা মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির ব্যাপারে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেয়া না হলেও সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় জানিয়েছে, তারা প্রতিটি বিভাগীয় শহরে ভর্তি পরীক্ষা নেবে। ফলে বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি কোচিং সেন্টারগুলো আগ্রহী শিক্ষার্থীদের ভর্তি কার্যক্রম ইতোমধ্যে শুরু করেছে। অধিকাংশ কোচিং সেন্টার অনলাইনে ক্লাসের বিষয় জানিয়ে ভর্তি ও অনলাইনে ক্লাস শুরু করলেও ‘ওমেকা কোচিং সেন্টার’ ও ‘ইউসিসি কোচিং সেন্টার’ সরাসরি ক্লাসে ভর্তি করছে শিক্ষার্থী। নিয়মের বাইরে এসে সিলেটে (বিশ্ববিদ্যালয়/মেডিকেল/ইঞ্জিনিয়ারিং/ শাবিপ্রবি স্পেশাল ব্যাচ) সরাসরি শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিতে ক্লাসও চলছে এ দুই কোচিং সেন্টারে।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, করোনাকালীন এ পরিস্থিতিতে ওমেকা কোচিং সেন্টার ও ইউসিসি কোচিং সেন্টার সিলেট শাখায় শিক্ষার্থীদের সরাসরি ক্লাসে উপস্থিত থেকে ক্লাস করার সুবিধা দেখিয়ে শিক্ষার্থী ভর্তি করছে। এমনকি ওমেকা কোচিং সেন্টারের অফিসিয়াল ফেসবুক পেইজ থেকেও সরাসরি ক্লাস শুরুর বিষয়ে পোস্ট দেয়া হয়। ১৩ অক্টোবরে প্রদত্ত পোস্টের ভাষ্যমতে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছে প্রথম দিনের ক্লাস। এভাবে প্রতিকূলতা কাটিয়ে আমরা নিজেদের প্রস্তুত করতে চাই আগামীর লক্ষ্যে। ভর্তি চলছে। প্রতি ব্যাচে ২০ জন করে।
তবে ইউসিসি সিলেটের পরিচালক রাশেদুল কবির খোকন যুগান্তরের কাছে দাবি করেন, তার প্রতিষ্ঠানে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীরা সবাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলছেন। তিনি সবাইকে মাস্ক পরে আসার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন। কেউ মাস্ক ছাড়া এলে তাকে ক্লাসে প্রবেশ করতে দেয়া হচ্ছে না। এছাড়া ক্লাসের ভেতর তিনি সবাইকে তিন ফিট দূরত্ব বজায় রেখে বসাচ্ছেন। সরকারি নির্দেশ অমান্য করে কেন সরাসরি ভর্তি এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আসলে কিছু শিক্ষার্থী আছে যাদের অনলাইনে ক্লাস করার সক্ষমতা নেই। কিংবা গ্রামে বসবাসের কারণে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ও ইন্টারনেট সেবা থেকে বঞ্চিত। সেজন্য আমরা তাদের সরাসরি ক্লাসে ভর্তি করছি।
সরাসরি ক্লাসের বিষয় অস্বীকার করে ওমেকা কোচিং সেন্টার সিলেটের পরিচালক ইঞ্জিনিয়ার মির্জা তারেক আহমদ বেগ যুগান্তরকে বলেন, প্রথমদিকে শিক্ষার্থীদের অ্যাপস বুঝিয়ে দেয়ার জন্য একদিন ক্লাস নেয়া হয়েছে। এরপর থেকে অনলাইনে ক্লাস চলছে। তবে ওমেকা সিলেটের অফিসিয়াল নম্বরে (০১৬১১৮৬৪৫১৩) যোগাযোগ করলে তারা সরাসরি ভর্তির বিষয়টি স্বীকার করেন। কিন্তু সাংবাদিক পরিচয় দেয়ার পর তথ্য দাতা নাম প্রকাশ করতে অপারগতা প্রকাশ করেছেন।
এ ব্যাপারে সিলেটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) আ.ন.ম. বদরুদ্দোজা যুগান্তরকে বলেন, আমরা বুধবার অভিযানে গিয়ে তাদের সতর্ক করে আসছি। আজ (বৃহস্পতিবার) থেকে আর সরাসরি ক্লাস হবে না।