রিসোর্টে দম্পতির অন্তরঙ্গ দৃশ্য ধারণ করে টাকা দাবি
দুই কর্মচারী গ্রেফতার
শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) প্রতিনিধি
প্রকাশ: ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২১, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জেলার কুলাউড়া থেকে পর্যটন নগরী শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে এসেছিলেন এক দম্পতি। রাত্রীযাপনে ওঠেছিলেন উপজেলার মৌলভীবাজার সড়কে তামিম রিসোর্ট নামে এক রেস্ট হাউজে। সেখানে ভয়াবহ বিপদের সম্মুখীন হন এই দম্পতি। কক্ষের টিস্যু বক্সের ভেতরে গোপন ক্যামেরা লাগিয়ে রাখে রিসোর্টের দুই কর্মচারী। দম্পতির অন্তরঙ্গ দৃশ্য ধারণ করে ব্লাকমেইল করে মোটা অঙ্কের টাকা দাবি করে আসছিল ওই রিসোর্টের দুই কর্মচারী। এ ঘটনায় শ্রীমঙ্গল থানায় বুধবার রাতে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে দুজনকে আসামি করে মামলা করেন ভিকটিম রিয়াজউদ্দিন। এমন স্পর্শকাতর ঘটনায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শ্রীমঙ্গল থানার এসআই আল আমিনের নেতৃত্বে একদল পুলিশ মামলার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে কানাইঘাট উপজেলা থেকে রেজোয়ান ও শহরের বিরাইমপুর এলাকা থেকে খালেদকে গ্রেফতার করে।
শ্রীমঙ্গল থানা সূত্রে জানায়, গত বছরের ২৯ জুলাই কুলাউড়া থেকে শ্রীমঙ্গলে বেড়াতে আসেন ওই দম্পতি। উপজেলার মৌলভীবাজার সড়কের তামিম রিসোর্টের দুই কর্মচারী কিছুদিন পর একটা মোবাইল ফোনে মামলার বাদী রিয়াজউদ্দিনের ইমো নাম্বারে ফোন করে। তাদের ছবি ও ভিডিও আছে এবং ম্যাসেঞ্জারে যোগাযোগ করতে বলে ফোনের লাইন কেটে দেয় রেজোয়ান। তারপর তারা গত বছরের ২১ অক্টোবর ‘নাদিরা আক্তার রুমি’ নামে একটি ভুয়া আইডি থেকে ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে রিয়াজউদ্দিনের কাছে তাদের গোপন মেলামেশার দৃশ্যের ছবি পাঠায়। ওই নাম্বার থেকে বাদীর ইমো নাম্বারে কল করে হুমকি দিয়ে জানায়, এই ছবি ও ভিডিও ফেরত পেতে হলে তাদের ৫০ হাজার টাকা দিতে হবে। যদি টাকা না দেয়া হয় তাহলে তাদের এই ভিডিও ও ছবি ইন্টারনেটে ভাইরাল করে দেবে বলে হুমকি দিতে থাকে।
এদিকে এমন স্পর্শকাতর ঘটনায় রিয়াজউদ্দিন দম্পতি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। তিনি তাদের সঙ্গে আপসের চেষ্টা চালিয়ে যান। আইনের আশ্রয় নেবেন কিনা চিন্তা করতে থাকেন। বাদীর কাছ থেকে কোনো সাড়া না পেয়ে তারা ফেসবুকে তাদের বন্ধু ও আত্মীয়-স্বজনের কমেন্ট ও ম্যাসেঞ্জারে তাদের ছবি ও ভিডিও পোস্ট করতে থাকে। শেষমেশ এই দম্পতি শ্রীমঙ্গল থানা পুলিশের শরণাপন্ন হন। ফলে পুলিশ দ্রুত তাদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। এ সময় তাদের কাছ থেকে দুটি মোবাইল ফোন ও একটি ল্যাপটপ উদ্ধার করে এর মধ্যে দম্পতির বিভিন্ন শারীরিক মেলামেশার ছবি ও ভিডিও পাওয়া যায় বলে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আল-আমিন জানান। প্রাথমিকভাবে আসামিরা পুলিশের কাছে তাদের অপকর্মের স্বীকারোক্তি দেয় বলে জানা যায়। তামিম রিসোর্টের স্বত্বাধিকারী হারুন মিয়া বলেন, এ ঘটনার আমি কিছু জানি না। তারা এক সময় আমার এখানে ছিল, এখন নাই।
শ্রীমঙ্গল থানার ওসি তদন্ত হুমায়ুন কবির যুগান্তরকে জানান, আসামিদের রিমান্ডের আবেদন জানানো হবে। এ ঘটনায় মালিকপক্ষের কোনো সংশ্লিষ্টতা রয়েছে কিনা তা তদন্ত করে বের করা হবে বলে তিনি জানান। রেজোয়ান (২৩) সিলেট জেলার কানাইঘাট উপজেলার চড়িপারা এলাকার আবুল কালামের ছেলে ও খালেদ মিয়া (২৭) শহরের বিরাইমপুর এলাকার মৃত শফিক মিয়ার ছেলে বলে জানা গেছে।
