উইমেন ইন্টারপ্রেনিয়রস সামিটে স্পিকার
নারী উদ্যোক্তাদের ঋণপ্রাপ্তি আরও সহজ করতে হবে
যুগান্তর প্রতিবেদন
প্রকাশ: ২৩ নভেম্বর ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী বলেছেন, নারী উদ্যেক্তাদের জন্য নীতিসহায়তার পাশাপাশি ঋণপ্রাপ্তি সহজ করা হয়েছে। এটি আরও সহজ করা প্রয়োজন। তবে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত সহজ শর্তে (সুদ বিহীন) ঋণ সুবিধা দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অনেকেই এ তথ্য জানেন না। ফলে এই তহবিলের অর্থ খুব বেশি ব্যয়ও হয় না। এজন্য সবার মাঝে তথ্য ছড়িয়ে দিতে হবে। তিনি বলেন, নারী উন্নয়নে এখনো ৫ ধরনের প্রধান বাধা আছে। এগুলো হলো প্রশিক্ষণ, উন্নত শিক্ষা, সম্পদ প্রাপ্তি, কাঁচামালের সহজলভ্যতা এবং বাজার সুবিধা নিশ্চিত করা। এসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা গেলে এদেশের নারী উদ্যোক্তারা আরও অনেক বেশি এগিয়ে যেতে পারবেন।
বুধবার রাজধানীর রেডিসন হোটেলে ‘ইন্টারন্যাশনাল উইমেন ইন্টারপ্রেনিয়রস সামিট-২০২২’ এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। দুদিন ব্যাপী যৌথভাবে এ সম্মেলনের আয়োজন করেছে বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিল (বিআইবিসি) এবং বাংলাদেশ ইনভেস্টমেন্ট ডেভেলপমেন্ট অথরিটি (বিডা)। প্রথম দিনে বিভিন্ন বিষয়ের ওপর একাধিক সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
স্পিকার আরও বলেন, এদেশের নারী উদ্যোক্তাদের এখনো অনেক সমস্যা আছে। সেগুলো সমাধানের ক্ষেত্রে এরকম একটি প্লাটফর্ম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে। এদেশের নারী উদ্যোক্তারা দারিদ্র্য নিরসন, বৈষম্য হ্রাস এবং কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে ব্যাপক অবদান রাখছেন। নারী উদ্যোক্তারা কখনও ঋণ খেলাপি হন না। তাহলে তাদের জন্য সহজেই ঋণপ্রাপ্তি নিশ্চিত করতে আরও বেশি জোর দেওয়া দরকার। এক্ষেত্রে সরকারি বিভিন্ন ঋণের পাশাপাশি ব্যাংক ঋণপ্রাপ্তি আরও সহজ করতে হবে। বিআইবিসি’র প্রেসিডেন্ট মানতাসা আহমেদের সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নান, প্রধানমন্ত্রীর বেসরকারি শিল্প ও বিনিয়োগবিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান, প্রধানমন্ত্রীর মূখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়া, এফবিসিসিআই’র সভাপতি জসিম উদ্দিন এবং উইমেন’স ইন্ডিয়া চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির (ডব্লিউ আইসিসিআই) প্রেসিডেন্ট ড. হারবিন অরোরা রায়। বক্তব্য দেন বিডার নির্বাহী সদস্য মহসিনা ইয়াসমীন। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সামিট গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আজিজ খান।
এমএ মান্নান বলেন, দেশের পোশাক খাত নারীদের ক্ষমতায়নে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। এরপরই রয়েছে এসএমই খাতের ভূমিকা।
গ্রামীণ উন্নয়নে এসএমই খাতের ভূমিকা অনেক। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমাদের নারী উদ্যোক্তারা সামনের দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।
সালমান এফ রহমান বলেন, সামাজিক পরিবর্তনে নারীর ভূমিকা অপরিসীম। সে সঙ্গে অর্থনৈতিক উন্নয়নেও ভূমিকা রাখছেন এদেশের নারীরা। পোশাক খাত দেশের নারীদের জীবনে ব্যাপক পরিবর্তন এনেছে। নারীদের ক্ষমতায়িত করেছে। পাশাপাশি পরিবারে নারীদের গুরুত্ব বাড়িয়ে দিয়েছে। ফলে সামাজিক খাতে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে।
ড. আহমদ কায়কাউস বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনীতিতে নারী নেতৃত্ব খুব ভালো ভূমিকা রাখছে। তেমনি অর্থনৈতিক ক্ষেত্রসহ সব ক্ষেত্রেই নারীরা এগিয়ে যাচ্ছে।
মোহাম্মদ আজিজ খান বলেন, দেশের পোশাক খাত এগিয়ে নিতে নারীদের ব্যাপক অবদান আছে। নারী উদ্যোক্তারা সৃজনশীল ও সৃষ্টিশীল কাজ করে এগিয়ে যাচ্ছেন।
জসিম উদ্দিন বলেন, ই-কমার্স বাণিজ্য নারীদের অংশগ্রহণ ব্যাপক। এলডিসি উত্তরণের পর ২০৪১ সালে উন্নত দেশে যেতে নারী উদ্যোক্তারা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। এসএমই নীতিমালা এবং জাতীয় বাজেটে নারী উদ্যোক্তাদের গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
লোকমান হোসেন বলেন, বর্তমানে দেশের মোট জনসংখ্যার একটি বড় অংশই তরুণ। এই তরুণ জনগোষ্ঠীকে কাজে লাগাতে কাজ করা হচ্ছে। নারী উদ্যোক্তাসহ সব বিনিয়োগ কারীদের জন্য বিডার ওয়ান স্টপ সার্ভিস কাজ করছে। নারীদের জন্য ব্যাংক ঋণ সহজ করা হয়েছে।
হারবিন আরোরা রায় বলেন, বাংলাদেশ ও ভারত এক সঙ্গে এগিয়ে যেতে চায়। আমরা শুধু বাংলাদেশ-ভারত বলি না। আমরা বলি বাংলাদেশ ও ভারতের নারী, বাংলাদেশ ও ভারতের যুব সমাজ। আমরা নারী সমাজকে এগিয়ে নিতে যৌথভাবে কাজ করছি।
মানতাসা আহমেদ বলেন, নারীদের শক্তিশালী করতে কাজ করবে এই সামিট। অনেক নারী উদ্যোক্তাই এখানে আসতে চেয়েছিলেন, কিন্তু আমরা জায়গা স্বল্পতার কারণে তাদের সুযোগ দিতে পারিনি। এদেশের নারী উদ্যোক্তারা নানা সমস্যার মধ্যেও এগিয়ে যাচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়া বাংলাদেশ-ইন্ডিয়া বিজনেস কাউন্সিলের মেন্টর চেয়ার জেরিন মাহমুদ হোসেইন যুগান্তরক বলেন, এ ধরনের আয়োজনের মাধ্যমে আমরা নারী উদ্যোক্তাদের এগিয়ে নিতে চাই। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আমার সঙ্গে কাজ করে নিজেদের তৈরি করার সুযোগ পাচ্ছেন।
নারী উদ্যোক্তা সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, আমি অনেক সংগ্রাম করে আজকের অবস্থানে এসেছি। আমি জামদানি শাড়ি, বাচ্চাদের শাড়িসহ বিভিন্ন শাড়ি, পাঞ্জাবি তৈরি করে বিদেশে রপ্তানি করে থাকি।
