Logo
Logo
×

নগর-মহানগর

যশোরে ডায়রিয়ার প্রকোপ

হাসপাতালে রোগীর চাপ, কেমিক্যাল তরমুজে সন্দেহ

Icon

যশোর ব্যুরো

প্রকাশ: ৩১ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

যশোরে ডায়রিয়ার প্রকোপ বেড়েছে। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সংক্রমণ ওয়ার্ডে রোগী রাখার জায়গা নেই। তিন শয্যার বিপরীতে ভর্তি থাকছে ৬০ থেকে ৭০ জন রোগী। জায়গা না হওয়ায় গাদাগাদি অবস্থায় বারান্দা ও মেঝেতে চলছে চিকিৎসা। বাড়তি রোগীর চাপ সামলাতে হিমশিম হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ।

আবহাওয়া পরিবর্তন, রমজানে খাদ্যাভ্যাস বদল, দূষিত পানি পান ও পচাবাসি খাবার খাওয়ায় বেশি মানুষ ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছেন বলে চিকিৎসকরা জানান। এসব বিষয়ে সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন তারা।

যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে সংক্রমণ ওয়ার্ডে ডায়রিয়া রোগীদের জন্য বরাদ্দ মাত্র তিনটি শয্যা। এর বিপরীতে চিকিৎসাসেবা নিচ্ছেন অর্ধশতাধিক রোগী। ৭০ জন রোগীকে মেঝে ও বারান্দায় চিকিৎসা নিতে হচ্ছে। বাড়তি রোগীর জন্য নেই পর্যাপ্ত পাবলিক টয়লেট ও পানির ব্যবস্থা। ফলে রোগী ও তার স্বজনরা ভুগান্তিতে পড়ছেন।

হাসপাতালে ভর্তি রোগীর অধিকাংশই যশোর সদর উপজেলার বাসিন্দা। শহরের আবরপুর, ধর্মতলা, ঝুমঝুমপুর ও চুড়ামনকাঠি এলাকার মানুষ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। তিন বছরের শিশু থেকে ৬৫ বছরের বৃদ্ধা রয়েছেন ডায়রিয়া আক্রান্তের তালিকায়। হঠাৎ ডায়রিয়া বেড়ে যাওয়ায় বিষয়টি নিয়ে কাজ করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাসহ সরকারি, বেসরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। ইতোমধ্যে হাসপাতাল থেকে চিঠি পাঠানো হয়েছে সিভিল সার্জন অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও পৌরসভায়।

কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে ধারণা করা হচ্ছে দূষিত পানি পানে ডায়রিয়া হতে পারে। তবে কেউ কেউ বলছেন, তরমুজে কেমিক্যাল পুশ করে বাজারজাত করছে অসাধু ব্যবসায়ীরা। যে কারণে ওই তরমুজ খেয়ে ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে অনেকেই। ঝুমঝুমপুর থেকে নাতনির চিকিৎসা করাতে আসা নাছিমা বেগম জানান, আগে তার মেয়ে অসুস্থ ছিল। হাসপাতালে একদিন এক রাত থাকার পর মেয়ে সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছে। আজ আবার অসুস্থ নাতনিকে নিয়ে আসতে হয়েছে। তার বাড়িতে মোট পাঁচজন ডায়রিয়াতে আক্রান্ত। যশোর সদর উপজেলার চুড়ামনকাঠি এলাকার ইয়াছিন আরাফাত (১৪) বলেন, রোজা থাকার পর ভাজাপোড়া খাবারে ইফতারি করেছিলাম। এরপর ডায়রিয়াতে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছি।

ছোট বাচ্চাকে হাসপাতালে ভর্তি করেছেন শহরের আরবপুর দিঘিরপাড়ের আজিজুর রহমান। তিনি জানান, বাজার থেকে ২-৩ দিন আগে তরমুজ কিনে খাওয়ানোর পর হঠাৎ করে তার তিন বছরের বাচ্চা ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে।

ডায়রিয়া ইউনিটের দায়িত্বরত নার্সরা জানিয়েছেন, তিনটি বেডের বিপরীতে ৫০-৬০ জন রোগী ভর্তি থাকে। এখানে বাথরুম রয়েছে একটি। ডায়রিয়ায় আক্রান্ত রোগী ঘন ঘন বাথরুম ব্যবহার করে। পর্যাপ্ত বাথরুম না থাকার কারণে রোগীসহ তাদেরও ভোগান্তি হচ্ছে।

সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. হারুন অর রশিদ জানান, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত বেড়েছে। স্বাভাবিক সময়ে ডায়রিয়া রোগী ভর্তি থাকত ২০ বা তারও কম। গত কয়েক দিনে এটি ৫০-৬০ এ ওঠানামা করছে। শহরের আরবপুর এবং ধর্মতলা এলাকার রোগীর সংখ্যা বেশি। আমরা ঊর্ধ্বতন প্রতিষ্ঠান আইইডিসিআরকে রিপোর্ট করেছি। তারা দ্রুত বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন। তাছাড়া সিভিল সার্জন অফিস, পৌরসভায় চিঠি দিয়েছি।

তিনি পরামর্শ দেন, রোজার সময় যেন বাইরের খোলা ইফতারি কেউ না খায়। সাথে সাথে বিশুদ্ধ খাবার পানিও পান করতে হবে।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম