রাসিক কাউন্সিলর পদ
বিএনপি প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছে আ.লীগ-যুবলীগ
তানজিমুল হক, রাজশাহী
প্রকাশ: ২৭ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) ২২ নম্বর ওয়ার্ডে কাউন্সিলর পদে নির্বাচনে বিএনপি-আওয়ামী লীগ মিলেমিশে একাকার। কাউন্সিলর প্রার্থী বিএনপি নেতা মির্জা পারভেজ রিপনকে বিজয়ী করতে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগ নেতারা মরিয়া। রিপনকে সঙ্গে নিয়ে দিনভর চালাচ্ছেন প্রচারণা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট দিয়ে করছেন ভোট প্রার্থনা।
এ ঘটনায় আওয়ামী লীগ এবং সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ ও অসন্তোষ বিরাজ করছে। চলছে তোলপাড়। তারা বলছেন, বর্তমান রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট অত্যন্ত জটিল। সারা দেশেই আওয়ামী লীগের সঙ্গে বিএনপির রাজনৈতিক লড়াই চলছে। গুরুত্বপূর্ণ পদে থেকে বিএনপির প্রার্থীর সঙ্গে তারা কীভাবে হাত মেলালেন? তাদের রাজনৈতিক আদর্শ এখন প্রশ্নবিদ্ধ। বিএনপি নেতা রিপনের পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নেওয়া নেতাদের মধ্যে অন্যতম রাজশাহী মহানগর আওয়ামী লীগের কৃষিবিষয়ক সম্পাদক মীর তৌফিক আলী ভাদু। তিনি বলেন, রিপন আমার মামাত ভাই। ভাই হিসাবে তার নির্বাচনি কর্মকাণ্ডের সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছি। সে অন্য আদর্শের হতে পারে। তাই বলে ভাইকে তো অস্বীকার করতে পারি না।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির সাবেক সভাপতি এবং সিটির সাবেক মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন বুলবুল জানান, তিনি যখন রাজশাহী মহানগর যুবদলের সভাপতি ছিলেন তখন মির্জা পারভেজ রিপন ২২ নম্বর ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। এ ছাড়া তিনি যখন মহানগর বিএনপির সভাপতি তখন রিপন ওই ওয়ার্ডের সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেন। এ ছাড়া রিপনের আপন ছোট ভাই মির্জা মুন্না মহানগর যুবদলের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক। ২০১৮ সালে রাসিক নির্বাচনে রিপন ২২ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হিসাবে কাউন্সিলর পদে নির্বাচন করে পরাজিত হন।
বিএনপি নেতা রিপনের পক্ষে নির্বাচনি কর্মকাণ্ডে ভাদু ছাড়াও আরও অংশ নিয়েছেন-ভাদুর ছেলে রাজশাহী মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মীর তৌহিদুর রহমান কিটু, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মাহমুদ হাসান রাজিব, রাজশাহী মহানগর যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মনিরুজ্জামান খান মনির, মহানগর ছাত্রলীগের সহসভাপতি ফজলে রাব্বি, বোয়ালিয়া থানা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মির্জা জনি এবং ২২ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সহসভাপতি মীর মিঠু।
বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ আলী কামাল মোবাইল ফোনে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আমি জানি না। তারা যদি বিএনপি নেতার পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণায় নামে, তাহলে কী কারণে নামল সেটি সম্পর্কে জানব। এরপর মন্তব্য করব।
মহানগর ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রাজিব বলেন, রিপন আমার চাচাত ভাইয়ের বন্ধু। এ কারণে আমি তার কাছে যাই। আমি তার পক্ষে নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিইনি।
মহানগর যুবলীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক মনির বলেন, কাউন্সিলর পদে নির্বাচন দলীয়ভাবে হচ্ছে না। তাই তাকে যোগ্য প্রার্থী মনে করে সমর্থন করেছি। তার নির্বাচনি প্রচারণায় অংশ নিয়েছি।
এ প্রসঙ্গে বিএনপি নেতা রিপন বলেন, এ নির্বাচনে রাজনৈতিক কোনো বিষয় নেই। বর্তমানে আমি বিএনপির কোনো পদেও নেই। সবাই আমার ঘনিষ্ঠ। আমি বিএনপি থেকে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই পদত্যাগ করব।
রাজশাহী মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক এরশাদ আলী ঈশা বলেন, রিপনের এ ধরনের কর্মকাণ্ড অত্যন্ত দৃষ্টিকটূ। শুধু রিপন নয়, দলীয় সিদ্ধান্তের বাইরে যারা ভোট করছেন তাদের বিএনপি থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হবে।
