রাজশাহী সিটি নির্বাচন
৫ বছরে লিটনের আয় বেড়েছে চারগুণ
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ২৯ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজশাহী সিটি নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটনের সম্পদ পাঁচ বছরে বেড়েছে চারগুণ। মেয়র প্রার্থী হিসাবে দাখিল করা হলফনামায় চার মেয়র প্রার্থী তাদের বার্ষিক আয়, স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ছাড়াও হাতে নগদ টাকার পরিমাণ উল্লেখ করেছেন। লিটন ছাড়া বাকি তিন প্রার্থী হলেন জাতীয় পার্টির সাইফুল ইসলাম স্বপন, জাকের পার্টির লতিফ আনোয়ার ও ইসলামি আন্দোলনের মুরশিদ আলম।
হলফনামা বিশ্লেষণে দেখা গেছে, চার মেয়র প্রার্থীর মধ্যে হাতে নগদ টাকা বেশি আছে মুরশিদ আলমের। হলফনামা জমাদানের দিন পর্যন্ত তার হাতে নগদ ছিল ১২ লাখ টাকা। লিটনের নগদ টাকার পরিমাণ ছিল সাত লাখ দুই হাজার ২৩৭ টাকা। অন্যদিকে সাইফুল ইসলাম স্বপনের হাতে নগদ আছে তিন লাখ টাকা। লতিফ আনোয়ারের হাতে নগদের পরিমাণ এক লাখ টাকা।
হলফনামার তথ্য মতে, এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন এবার তার বার্ষিক আয় দেখিয়েছেন দুই কোটি ৯৮ লাখ ১০ হাজার টাকা। বার্ষিক এ আয় হিসাবে পাঁচ বছরে লিটন মোট আয় করেছেন ১৪ কোটি ৯১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। প্রায় পাঁচ বছর আগে ২০১৮ সালে তার বার্ষিক আয় ছিল ৭৮ লাখ ৩২ হাজার ২০৮ টাকা। আগের পাঁচ বছরে তার মোট আয় ছিল তিন কোটি ৯১ লাখ ৬০ হাজার টাকা। ফলে পাঁচ বছরে তার মোট আয় বেড়েছে প্রায় ১১ কোটি টাকা।
লিটন তার হলফনামায় দেখিয়েছেন, তিনি মৎস্য চাষ থেকে বছরে দুই কোটি ৪২ লাখ টাকা, কৃষি খাত থেকে দুই লাখ ৩০ হাজার টাকা, বাড়ি ও দোকান ভাড়া থেকে ৩৭ লাখ ৭০ হাজার টাকা এবং মেয়রের সম্মানি হিসাবে ১৬ লাখ ১০ হাজার পেয়েছেন। ২০১৮ সালে লিটনের অস্থাবর সম্পদ ছিল এক কোটি ৭৫ লাখ ১৩ হাজার ৫০৮ টাকার। এ ছাড়া উপহার পাওয়া ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার ছিল। এবার তার অস্থাবর সম্পদ বেড়ে হয়েছে চার কোটি ১৭ লাখ ৬২ হাজার ৮৯৯ টাকার। পাঁচ বছরে লিটনের জমিও বেড়েছে কিছুটা। এখন তিনি ৪ দশমিক ৬৩ একর কৃষিজমির মালিক। নগরীর উপশহরে আছে একটি তিনতলা বাড়ি যেখানে তিনি বসবাস করেন। ঢাকার বনানীতে দুটি অ্যাপার্টমেন্ট আছে। আছে ৭০ লাখ ১২ হাজার ১৯০ টাকা মূল্যমানের মৎস্য খামার। ২০১৮ সালে লিটনের কৃষিজমি ছিল ১ দশমিক ৬৩ একর। এখনকার মতো তখনো রাজশাহীতে তিনতলা বাড়ি ও ঢাকায় দুটি অ্যাপার্টমেন্ট ছিল। ২০১৮ সালে লিটনের কোনো ব্যাংক ঋণ ছিল না। একটি গাড়ি কিনতে গিয়ে পূবালী ব্যাংক থেকে এবার ২০ লাখ ৭৯ হাজার ৩৭ টাকা ঋণ নিয়েছেন। লিটন হলফনামায় তার পেশা হিসেবে আইনজীবী উল্লেখ করেছেন।
এ বিষয়ে লিটন বলেন, আমি বৈধভাবেই সম্পদ উপার্জন করেছি। সম্পদ বিবরণীতে আয়ের উৎসও উল্লেখ করা আছে। আমি সব আয়ের কর পরিশোধ করি। আর আমার স্ত্রী ব্যবসা করেন। তিনিও কর দেন। কাজেই আমাদের অবৈধ কোনো সম্পদ বা টাকা নেই।
ইসলামি আন্দোলন বাংলাদেশের প্রার্থী মাদ্রাসা বোর্ড থেকে কামিল পাশ মুরশিদ আলম মহানগরীর একটি কওমি মাদ্রাসার পরিচালক ও শিক্ষক। তবে হলফনামায় শিক্ষকতা পেশার কথা উল্লেখ না করে ধর্মীয় আলোচক বলেছেন। জাকের পার্টির লতিফ আনোয়ার এলএলবি পাশ। আর আওয়ামী লীগের খায়রুজ্জামান লিটন ইংরেজিতে স্নাতক ও এলএলবি পাস। কিন্তু জাতীয় পার্টির প্রার্থী সাইফুল ইসলাম স্বপন সাক্ষরজ্ঞানসম্পন্ন।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী মুরশিদ আলমের হাতে নগদ টাকা বেশি থাকলেও বছরে আয় করেন তিন লাখ ৩০ হাজার টাকা। কিন্তু নগদ ১২ লাখ টাকার উৎস কী? জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিভিন্ন জালসা ও মাহফিলে ধর্মীয় বক্তা হিসেবে প্রাপ্ত সম্মানি থেকে এ টাকা আয় করেন।
কওমি মাদ্রাসায় শিক্ষকতা করলেও সেখান থেকে শুধু মোটরসাইকেলের তেল খরচ পান। কোনো বেতন পান না। সম্পদ বলতে ১০ ভরি স্বর্ণ ও একটি মোটরসাইকেল আছে তার।
জাতীয় পার্টির মেয়র সাইফুল ইসলাম স্বপনের পেশা ব্যবসা। মৌসুমি পণ্য বেচাকেনা করেন। তার বার্ষিক আয় তিন লাখ টাকা। হাতে নগদ তিন লাখ টাকা ছাড়াও লগ্নি প্রতিষ্ঠানে জমা আছে ৫০ হাজার টাকা। নিজের ১০ ভরি সোনা আছে। আসবাবপত্র ৮০ হাজার টাকার। কৃষিজমি আছে সাড়ে চার বিঘা আর অকৃষিজমির পরিমাণ ১২ শতক। স্ত্রী ও পরিবারের অন্য কারও নামে কোনো সম্পদ নেই। জাকের পার্টির লতিফ আনোয়ার পেশায় আইনজীবী। তার পেশা থেকে বার্ষিক আয় তিন লাখ টাকা। আসবাব আছে ৫০ হাজার টাকার।
