বন্ধুবান্ধবের টাকায় নির্বাচন করছেন আ.লীগ প্রার্থী!
মো. আজমল খান, সিলেট
প্রকাশ: ০১ জুন ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
সিলেট সিটি করপোরেশন নির্বাচন এখনো জমে ওঠেনি। যদিও ভোটগ্রহণের বাকি আর মাত্র ১৯ দিন। বিএনপিবিহীন এই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর সঙ্গে টক্কর দেওয়ার মতো শক্ত কোনো প্রার্থী না থাকায় অনেকটাই নিরুত্তাপ ভোটের মাঠ। প্রতিদ্বন্দ্বীরা আওয়ামী লীগ প্রার্থীর চেয়ে তুলনামূলক দুর্বল। তাই সহজেই নৌকার প্রার্থীর বৈতরণী পার হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে। নির্বাচনি খচরও অনেকটা কম লাগবে। তারপরও নির্বাচনে যে অর্থ ব্যয় হবে সেই টাকা তিনি পাবেন কোথায়? কারণ নির্বাচনি হলফনামায় তিনি যে সম্পদের কথা উল্লেখ করেছেন তা দিয়ে নির্বাচনি ব্যয় মেটানো সম্ভব নয়। তবে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী বলেছেন, ‘নির্বাচনি ব্যয়ের টাকা তিনি পাচ্ছেন বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে।’
হলফনামায় দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর তেমন কোনো সম্পদ নেই। দেশে তার ব্যবসা-বাণিজ্যও নেই। হলফনামায় তার দেওয়া এমন তথ্য জানাজানির পর তোলপাড় চলছে। নেট দুনিয়ায় ভাইরাল হয়েছে। এ নিয়ে খোদ প্রশাসনের কর্মকর্তারাও ফিসফাস করছেন। তবে কেউই মুখ খুলে কিছু বলতে চাইছেন না।
নির্বাচন কমিশনে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বার্ষিক আয় ২ লাখ ৯৫ হাজার ৮৪ টাকা। এই হিসাবে তার মাসিক আয় মাত্র ২৪ হাজার ৫৯০ টাকা ৩৩ পয়সা। এই সামান্য পরিমাণ আয় দিয়ে নির্বাচনের এত বড় ব্যয়ভার কীভাবে চালাবেন তা নিয়েও নানা প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী একজন মেয়র প্রার্থী সর্বোচ্চ ১৫ লাখ টাকা ব্যয় করতে পারবেন। কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে বড় দলের মেয়র পদের প্রার্থীরা কয়েক কোটি টাকা ব্যয় করেন। কাউন্সিলর পদের অনেকে কোটি টাকার বাজেট নিয়ে মাঠে রয়েছেন। এটাই হলো ভোটের মাঠের প্রকৃত চিত্র।
হলফনামার তথ্য অনুযায়ী, আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরীর বার্ষিক আয়ের মধ্যে কৃষি খাত থেকে ১ লাখ, দোকান ভাড়া ৪৭ হাজার ৫৪২, ব্যবসা থেকে ১ লাখ ৪৭ হাজার ৫৪২ টাকা আয় হয়। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ ৪১ লাখ ৮৪ হাজার ৮৪৮ টাকা, ২টি টিভি, ১টি রেফ্রিজারেটর, ২টি এসি, দুই সেট সোফা, চারটি খাট, একটি টেবিল, ১০টি চেয়ার ও ২টি আলমারি। স্থাবর সম্পদের মধ্যে ৩ বিঘা কৃষিজমি, ২৩ শতক অকৃষি জমি, একটি দালান ও একটি বাড়ি। তার স্ত্রীর অস্থাবর সম্পদের মধ্যে আছে ৪৭ ভরি স্বর্ণ।
এই তথ্যের ব্যাপারে আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, বাধ্যবাধকতা না থাকায় নির্বাচন কমিশনে তিনি যুক্তরাজ্যের আয়ের তথ্য উল্লেখ করেননি। পরিবারের সঙ্গে তিনি যুক্তরাজ্যে থাকেন। লন্ডনে ভাইদের ব্যবসা রয়েছে। স্ত্রী ও সন্তান চাকরি করেন। তারা নির্বাচনে খরচ করবেন। এছাড়া প্রবাসী অনেক বন্ধুবান্ধবও অনুদান দেবেন।
১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় : বুধবার নগরীর একটি অভিজাত হোটেলে ১৪ দলের নেতাদের সঙ্গে জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগ নেতাদের মতবিনিময় হয়। মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাসুক উদ্দিন আহমদের সভাপতিত্বে ও জেলার সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নাসির উদ্দিন খানের পরিচালনায় সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি শফিকুর রহমান চৌধুরী, মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক জাকির হোসেন, জেলা জাসদের সভাপতি লোকমান আহমদ, সাধারণ সম্পাদক কেএ কিবরিয়া চৌধুরী, মহানগর জাসদের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস আহমদ, দীনবন্ধু পাল, মাহমুদ চৌধুরী, জুনেদুর রহমান, আরিফ মিয়া, মারুফ আহমদ, সিকন্দর আলী, ইসমত ইবনে ইসহাক, সত্য রঞ্জন দাস, শহিদুর রহমান, ইফতেখার আহমদ, ব্রজ গোপাল চৌধুরী, শ্রী নিবাস চক্রবর্তী, মোশাহিদ আহমদ প্রমুখ।
