চারঘাটের ওসির বক্তব্যে তোলপাড়
১৫ বছরে আমি কাউকে বদলির সুপারিশ করিনি: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
রাজশাহী ব্যুরো
প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
রাজশাহী-৬ (চারঘাট-বাঘা) আসনের সংসদ-সদস্য ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, জনপ্রতিনিধি হিসাবে আমরা শত শত সুপারিশ করি। বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের দাবির কারণে নানা সুপারিশ করতে হয়। ১৫ বছরে কোনো কর্মকর্তাকে বদলি করতে আমি এমন সুপারিশ কখনই করিনি। ভোট করার জন্য চারঘাটে বদলি করে আনা প্রসঙ্গে চারঘাট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুল আলম যা বলেছেন তা ঠিক নয়। তাকে বদলির জন্য আমি কাউকে বলিনি। তিনি আরও বলেন, মাহবুবের বিষয়ে জেলা পুলিশ যে পদক্ষেপ নিয়েছে সেজন্য সাধুবাদ জানাচ্ছি। ‘ভোট করতে মন্ত্রী আমাকে এনেছেন’-ওসি মাহবুবের এমন বক্তব্যে শাহরিয়ার আলম নীরব ছিলেন। তবে মঙ্গলবার রাজশাহী কারা প্রশিক্ষণ কেন্দ্র উদ্বোধন শেষে তিনি সাংবাদিকদের সামনে মুখ খোলেন।
মাদক মামলায় কারাগারে থাকা এক ব্যক্তির স্ত্রীকে নিজের বিশ্রাম কক্ষে ডেকে নিয়ে ওসি মাহবুবের আলাপের একটি অডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়। তদন্তে প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় থানা থেকে মাহবুবকে প্রত্যাহার করে পুলিশ লাইন্সে সংযুক্ত করেছেন জেলার এসপি। অডিওসহ পুরো বিষয়টি তদন্ত করছে জেলা পুলিশের তিন সদস্যের একটি দল।
অডিওতে ওসি মাহবুব দাবি করেন, নির্বাচন করতে মন্ত্রী (পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী) আমাকে গাইবান্ধা থেকে চারঘাট থানায় নিয়ে এসেছেন। আমি তার কথা ছাড়া আর কারও কথা শুনি না। শুধু তাই নয়, নির্বাচনের আগে মুক্তা, সাব্বির, শুভকে (সন্ত্রাসী ও মাদক আইনের একাধিক মামলার আসামি) মন্ত্রীর অনুমতি ছাড়া তাদের গ্রেফতার করা যাবে না। ৫ লাখ টাকা দিলে মুক্তভাবে মাদক ব্যবসার সুযোগ দেওয়া ও আরও দুই লাখ দিলে ডিবির একজন পরিদর্শককে বদলির ব্যবস্থা করার কথাও ওসি বলেন। ভোট করার জন্য তাকে আনা হয়েছে-ওসি মাহবুবের এমন বক্তব্যে রাজনৈতিক মহলে তোলপাড় চলছে। রোববার তারুণ্যের রোডমার্চ শেষে রাজশাহীতে দেওয়া এক বক্তব্যে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, প্রশাসন দিয়ে নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে সরকারের গোপন চক্রান্ত ওসি মাহবুব ফাঁস করেছেন। বিষয়টি এখন আর এড়িয়ে যাওয়ার সুযোগ নেই।
উল্লেখ্য, শনিবার সন্ধ্যায় ওসি মাহবুবের অডিও ক্লিপ ফাঁসের পর পুলিশে তোলপাড় শুরু হয়। রাতেই তাকে পুলিশ লাইন্সে ক্লোজড করা হয়। ১৩ সেপ্টেম্বর রাতে থানা কম্পাউন্ডে নিজের বিশ্রামকক্ষে ওসি মাহবুব মাদক মামলার আসামি কালুর স্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেন। তাদের কথোপকথন (অডিও ক্লিপ) ফাঁস হয়।