টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বীকৃতি ভারত নেওয়ায় প্রতিবাদ
জাফর আহমেদ, টাঙ্গাইল
প্রকাশ: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
টাঙ্গাইল শাড়ির ভৌগোলিক নির্দেশক (জিআই) স্বীকৃতি ভারতের নেওয়ায় প্রতিবাদ ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ব্যবসায়ী ও সুধীজনরা। ভারতের জিআই বাতিল করে বাংলাদেশের পণ্য হিসাবে টাঙ্গাইল শাড়ির জিআই স্বীকৃতির দাবি করেছেন তারা। এ নিয়ে টাঙ্গাইলের সচেতন মহল মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন জেলা প্রশাসক।
টাঙ্গাইল তাঁত শাড়ির সঙ্গে জড়িতরা জানান, টাঙ্গাইলের স্লোগান-নদী চর খাল বিল গজারির বন, টাঙ্গাইল শাড়ি তার গর্বের ধন। ২০০ বছরের ঐতিহ্যের ধারক-বাহক টাঙ্গাইলের শাড়ি। এ শাড়ি পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে সুনাম কুড়িয়েছে। সদর উপজেলার বাজিতপুর, কৃষ্ণপুর, দেলদুয়ারের পাথরাইল, কালিহাতীর বল্লাসহ বিভিন্ন এলাকায় এ শাড়ি তৈরি হয়। তবে টাঙ্গাইল শাড়ির রাজধানী হিসাবে দেলদুয়ারের পাথরাইল খ্যাত।
বৃহস্পতিবার ভারতের সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজের একটি পোস্টে বলা হয়েছে, ‘টাঙ্গাইল শাড়ি, পশ্চিমবঙ্গ থেকে উদ্ভূত একটি ঐতিহ্যবাহী হাতে বোনা মাস্টারপিস। এর মিহি গঠন, বৈচিত্র্যময় রং এবং সূক্ষ্ম জামদানি মোটিফের জন্য বিখ্যাত। এটি এ অঞ্চলের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রতীক। টাঙ্গাইলের প্রতিটি শাড়ি ঐতিহ্য ও সমৃদ্ধ সৌন্দর্যের মেলবন্ধনে দক্ষ কারুকার্যের নিদর্শন।’ এ পোস্টের পর টাঙ্গাইলসহ সারা দেশে প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। শনিবার টাঙ্গাইল শাড়ি বাংলাদেশি পণ্য হিসাবে জিআই স্বীকৃতির দাবিতে মানববন্ধন করেছে সচেতন নাগরিক সমাজ। এতে শিশুদের জন্য ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মুঈদ হাসান তড়িৎ, সমাজকর্মী নাদিউর রহমান আকাশ, আহসান খান আকাশ, মির্জা রিয়ান প্রমুখ বক্তব্য দেন। তারা বলেন, ভারতীয় সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের পোস্টের নিন্দা জানান। একইসঙ্গে এ বিষয়ে তারা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
টাঙ্গাইল শাড়ি ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি রঘুনাথ বসাক বলেন, টাঙ্গাইল শাড়ি বলতে-টাঙ্গাইলে তৈরি শাড়িকেই বোঝায়। এখানকার নাতিশীতোষ্ণ আবহাওয়া এ শাড়ি তৈরির জন্য উপযোগী। ভিন্ন মান ও ভিন্ন দক্ষতায় টাঙ্গাইল শাড়ি তৈরি হয়। এ দক্ষতায় অন্য জায়গায় শাড়ি তৈরি হলেও সেটা টাঙ্গাইল শাড়ি না। টাঙ্গাইল শাড়ি নিজেদের দাবি করে অন্যদের জিআই স্বীকৃতি নেওয়া আমাদের জন্য দুঃখজনক। এর প্রতিবাদ জানাই। এর বিরুদ্ধে সবাইকে সোচ্চার হতে হবে। টাঙ্গাইল সাধারণ গ্রন্থাগারের সাধারণ সম্পাদক কবি মাহমুদ কামাল বলেন, কয়েকশ বছর আগে থেকে টাঙ্গাইল শাড়ি পৃথিবী বিখ্যাত। সেটি অন্য দেশের জিআই পণ্য হিসাবে কিভাবে স্বীকৃতি পায়, সেটি আমি বুঝতে পারছি না। এটি বাতিল করে বাংলাদেশ পণ্য হিসাবে টাঙ্গাইল শাড়িকে জিআই পণ্য হিসাবে স্বীকৃতির দাবি জানাই। জেলা প্রশাসক কায়ছারুল ইসলাম জানান, টাঙ্গাইল শাড়ি, মধুপুরের আনারস ও জামুর্কির সন্দেশ জিআই পণ্য হিসাবে স্বীকৃতি পেতে আমরা আবেদন প্রক্রিয়া শুরু করেছি। টাঙ্গাইলের তাঁত শাড়ি আড়াইশ বছরের পুরাতন। জিআই পণ্যের স্বীকৃতি আমরা পাব-এ ব্যাপারে অবশ্যই আমরা আশাবাদী। আমাদের পদক্ষেপের বিষয়ে আমরা স্টাডি শুরু করেছি। এ বিষয়ে কিভাবে আবেদন করা যায়-সে ব্যাপারে জরুরি সভা করেছি।
