শুরু হচ্ছে ভর্তি কার্যক্রম: ডিজিটাল সেবা সুলভ করা হোক
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২০ জুলাই ২০২০, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
করোনা মহামারীর কারণে অন্যান্য খাতের মতো শিক্ষাক্ষেত্রেও বড় ধরনের বিপর্যয় সৃষ্টি হয়েছে। ভয়াবহ এ পরিস্থিতি মোকাবেলায় সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগে নানামুখী পদক্ষেপ নেয়া হলেও সবাই তাকিয়ে আছে কখন সার্বিক পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়, সেদিকে।
মহামারীর কারণে সব স্তরের শিক্ষার্থীরা ক্ষতিগ্রস্ত হলেও স্কুল ও কলেজের শিক্ষার্থীদের ক্ষতির বিষয়টি বিশেষভাবে সবার চোখে পড়ে। এবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীরা সময়মতো একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারেনি। এতে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিশেষভাবে উদ্বিগ্ন ছিলেন।
বর্তমানে দেশে বিভিন্ন পর্যায়ে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের পরিধি সংকুচিত হওয়া সত্ত্বেও শিক্ষার্থীদের অভিভাবকসহ সংশ্লিষ্ট সবাই আশা করছে, শিক্ষা খাতে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সমাধানে সরকার বিশেষ পদক্ষেপ নেবে। আশার কথা, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীদের একাদশ শ্রেণিতে ভর্তি কার্যক্রম ৯ আগস্ট শুরু হচ্ছে। আশা করা যাচ্ছে, ক্লাস শুরুর সিদ্ধান্তটিও দ্রুতই জানা যাবে।
করোনাকালে বিকল্প মাধ্যমেই একাদশ শ্রেণির ক্লাস শুরু করতে হবে। ইতিমধ্যে শিক্ষার অন্যান্য স্তরে অনলাইন ও দূরশিক্ষণ পদ্ধতিতে লেখাপড়া চলছে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে আমাদের দেশে নানাবিধ সমস্যা বিরাজ করছে। এক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা হল প্রয়োজনীয় সরঞ্জামের অভাব। দেশে অনেক পরিবার রয়েছে যাদের পক্ষে স্মার্টফোন বা টেলিভিশন কেনা সম্ভব নয়।
আবার এমন অনেকেই আছেন যারা কোনো রকমে স্মার্টফোন বা টেলিভিশন ক্রয় করতে পারলেও আর্থিক সংকটের কারণে সময়মতো ইন্টারনেট বিল পরিশোধ করতে পারবেন না। অসচ্ছল পরিবারের শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল পদ্ধতির শিক্ষা কার্যক্রমের সঙ্গে কী করে যুক্ত থাকবে এটি এক বড় প্রশ্ন হয়ে দেখা দিয়েছে।
এ অবস্থায় অনলাইন শিক্ষার সুবিধার্থে শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে বা নামমাত্র মূল্যে ইন্টারনেট সেবা প্রদানের পাশাপাশি দক্ষ জনবল সংকট দূর করা প্রয়োজন। প্রযুক্তির এই অগ্রগতিকালে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ বাড়ানো না হলে আমরা অন্য দেশের তুলনায় পিছিয়ে পড়তে পারি।
শহরাঞ্চলের শিক্ষার্থীরা প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীদের তুলনায় সুযোগ-সুবিধা বেশি পেয়ে থাকে। ডিজিটাল পদ্ধতির শিক্ষা কার্যক্রম চলাকালে শহরাঞ্চলের মতো সব সুযোগ-সুবিধা প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষার্থীরাও যাতে পায় তা নিশ্চিত করা দরকার।
অনলাইনে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার ক্ষেত্রে ধীরগতির ইন্টারনেট একটি বড় সমস্যা। গতি বৃদ্ধির পাশাপাশি এ বিষয়ক অন্যান্য সমস্যার সমাধানে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নেয়া হলে আমাদের দেশের শিক্ষার্থীরা ডিজিটাল পদ্ধতির প্রকৃত সুফল পাবে কিনা এ বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যায়।
