Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

নবীন উদ্যোক্তাদের মূল্যায়ন হোক

Icon

সানজানা হোসেন অন্তরা

প্রকাশ: ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

নবীন উদ্যোক্তাদের মূল্যায়ন হোক

বেকারত্বের হার কমিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে নতুন উদ্যোক্তাদের সামাজিক স্বীকৃতি প্রদানের বিকল্প নেই। বর্তমানে উদ্যোক্তার সংখ্যা বাড়ছে। একজন ব্যক্তি যখন নিজের কর্মসংস্থানের কথা চিন্তা করে নিজে থেকেই কোনো ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার চেষ্টা করে বা তার পরিকল্পনা করে তখন তাকে উদ্যোক্তা বলা যায়। ব্যবসায় উদ্যোক্তার উদ্যোগ যখন সফল হয় তখন তাকে বলা যায় ব্যবসায়ী। বর্তমানে দেশে বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থীই উদ্যোক্তা। আবার বহু শিক্ষার্থী নিজেদের উদ্যোক্তা হিসেবে গড়ে তুলতে চায়। তবে শিক্ষার্থীদের উদ্যোক্তা হওয়ার প্রবল আগ্রহ থাকার পরও অনেকেই এ ক্ষেত্রে সফল হতে পারে না। এর একটি কারণ- এ দেশে উদ্যোক্তাদের সঠিক মূল্যায়ন করা হয় না। যখন কেউ নিজ উদ্যোগে কিছু করতে চায়, আশপাশের মানুষ ভ্রু কুঁচকে তাকায়। এতে অনেকে উৎসাহ হারিয়ে ফেলে।

আমাদের সমাজ চিন্তাভাবনায় এখনও অনেক পিছিয়ে। অনেকে শিক্ষার্থীদের যোগ্যতা একমাত্র সরকারি চাকরিতেই খুঁজে পায়। অথচ বর্তমান পরিস্থিতিতে চাকরির বাজার যেন সোনার হরিণ, যেখানে একটা মনমতো চাকরি প্রায় অসাধ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। এ অবস্থায় নিজের ও দেশের উন্নতির কথা ভেবে কেউ যখন কিছু করতে চায় তখন আমাদের সমাজ তাকে সময় নষ্ট হিসেবে বিবেচনা করে। অথচ বিশ্বের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিগুলো উদ্যোক্তা হয়েই কাজ শুরু করে সফল ব্যবসায়ীতে পরিণত হয়েছেন।

উদ্যোক্তারা কাজ শুরু করে নিজের মেধা, শ্রম ও ইচ্ছা দিয়ে। তাদের শুধু দরকার আপনজনের ও সমাজের কাছ থেকে উৎসাহ। কিন্তু আমাদের সমাজে উদ্যোক্তারা এখনও সঠিক মূল্যায়ন পায় না। অনেকে সফল উদ্যোক্তা হওয়ার পরও শুধু প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি না থাকায় যথাযথ সম্মান থেকে বঞ্চিত হয়। প্রত্যেক পেশার সঠিক মূল্যায়ন ও সম্মান অতীব জরুরি।

দেশের অনেক শিক্ষিত তরুণ ফ্রিল্যান্সার বা উদ্যোক্তা হিসেবে ভালো আয় করে; কিন্তু তাদের সামাজিক স্বীকৃতি নেই। বর্তমান সরকার উদ্যোক্তাদের নিয়ে ইতোমধ্যে ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে। আশা করছি, সরকার অতিদ্রুত বেশকিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করবে, যা উদ্যোক্তাদের সামাজিক ও প্রাতিষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে সাহায্য করবে। তবে সরকারের একার পক্ষে সম্ভব নয়, নাগরিক হিসেবে প্রত্যেকের দায়িত্ব দেশকে বেকারত্বের অভিশাপ থেকে মুক্ত করা। সে জন্য নিজেদের মনোভাব আগে পরিবর্তন করতে হবে।

একজন উদ্যোক্তা যখন নিজের চেষ্টা, শ্রম, মেধা দিয়ে এবং অন্যদের অনুপ্রেরণায় নিজেকে সফল ব্যবসায়ী হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে, তখন সে আরও অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করে দিতে পারবে। এরকম হাজার উদ্যোক্তার উদ্যোগ যদি সফল হয়, তাহলে দেশে বেকারত্বের হার যেমন কমবে, তেমনি অনেক কর্মহীন মানুষ সম্মানের সঙ্গে আত্মনির্ভরশীল হয়ে বাঁচতে পারবে। আমাদের দেশের নারীরা এখনও পিছিয়ে, তবুও তাদের মাঝেও বর্তমানে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রবল আগ্রহ। অধিক জনসংখ্যার অভিশাপ থেকে দেশকে তখনই রক্ষা করা সম্ভব, যখন এই বিপুল জনগোষ্ঠীর কাজের ব্যবস্থা করা সম্ভব হবে। আর সে জন্য উদ্যোক্তাদের উদ্যোগকে সফল করতে, নতুন নতুন কাজের সুযোগ সৃষ্টি করতে তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে।

সানজানা হোসেন অন্তরা : শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়

 

বেকারত্ব

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম