Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

হুন্ডিতে পাকিস্তানি থ্রিপিসের কারবার

কঠোরভাবে প্রতিরোধ করা দরকার

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২০ সেপ্টেম্বর ২০২০, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

হুন্ডিতে পাকিস্তানি থ্রিপিসের কারবার

ফাইল ছবি

কাস্টমসে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে হুন্ডিতে পাকিস্তানি থ্রিপিস (লন) এনে দেশীয় বাজারে বিক্রি করার চাঞ্চল্যকর তথ্য বেরিয়ে এসেছে যুগান্তরের অনুসন্ধানে। জানা গেছে, দীর্ঘদিন ধরে দেশে অবস্থানরত পাকিস্তানিদের বড় একটি চক্র এ কারবারে জড়িত। তারা ট্যুরিস্ট ভিসায় প্রবেশ করে দীর্ঘদিন বসবাসের সুবাদে টাকার বিনিময়ে বাংলাদেশি জাতীয় পরিচয়পত্র ও পাসপোর্ট নিয়েছে।

 এ দেশে ব্যবসা করলেও তারা আয়কর ও ভ্যাট ফাঁকি দিয়ে সেই টাকা হুন্ডির মাধ্যমে পাকিস্তানে পাচার করছে। এর ফলে মোটা অঙ্কের রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার। সেই সঙ্গে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশীয় বস্ত্রশিল্প। এ খাতে আসছে না নতুন বিনিয়োগ। উদ্যোক্তারা পরিণত হচ্ছেন ঋণখেলাপিতে।

সবচেয়ে বড় কথা, এর ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের সামগ্রিক অর্থনীতি। কাজেই এদিকে সরকারের জরুরি ভিত্তিতে দৃষ্টি দেয়া দরকার।

বিস্ময়ের ব্যাপার হল, শুল্ক ফাঁকি দিয়ে পাকিস্তানি থ্রিপিসের এ কারবার দীর্ঘদিন ধরে চললেও তা প্রতিরোধে সরকারের কোনো সংস্থার তৎপরতা লক্ষ করা যায়নি।

অথচ রাজধানীর বড় বড় শপিংমলে এ চক্রের শোরুম রয়েছে। জানা গেছে, ঢাকা কাস্টমস হাউস দিয়ে আসে বেশিরভাগ থ্রিপিস। এ ক্ষেত্রে মিথ্যা ঘোষণায় অভিনব কায়দায় শুল্ক ফাঁকি দেয়া হয়।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড থ্রিপিসের ন্যূনতম আমদানি শুল্ক নির্ধারণ করে দিয়েছে। এ শুল্ক ফাঁকি দিতে কাস্টমসে থ্রিপিসকে কাপড়ের রোল হিসেবে ঘোষণা দেয়া হয়।

এ উদ্দেশ্যে পাকিস্তান থেকে আমদানির সময় থ্রিপিস আলাদা প্যাকেটে না এনে একটি থ্রিপিসের উপর আরেকটি পেঁচিয়ে রোল বানানো হয়। উল্লেখ্য, এ ক্ষেত্রে শুল্ক কম পড়ে। প্রশ্ন হল, এভাবে মিথ্যা ঘোষণায় কী করে থ্রিপিস আনা সম্ভব হচ্ছে?

কী করছে কর্তৃপক্ষ? বোঝাই যাচ্ছে, কাস্টমস, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, স্থানীয় প্রশাসন, স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী এবং মার্কেট কমিটির নেতাদের ‘ম্যানেজ’ করেই তা সম্ভব হয়। সুষ্ঠু তদন্তের মাধ্যমে এ বিষয়টি উদ্ঘাটন করা যেতে পারে। বাংলাদেশ ব্যাংক ও কাস্টমসের পাকিস্তান থেকে থ্রিপিস আমদানির তথ্য এবং শপিংমলগুলো পরিদর্শন করলেই হুন্ডিতে থ্রিপিস আমদানির চিত্র বেরিয়ে আসবে।

বস্তুত দেশে পাকিস্তানি ব্যবসায়ীদের বস্ত্রের অবৈধ কারবারের বিষয়টি নতুন নয়।

২০১৪ সালে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর রাজধানীর গুলশানে অভিযান চালিয়ে চোরাকারবারে জড়িত এক পাকিস্তানি ব্যবসায়ীকে আটক এবং ৫ কোটি টাকা মূল্যের শাড়ি ও থ্রিপিস জব্দ করেছিল।

এতেই এ ধরনের কারবার বন্ধ হয়ে গেছে, এমনটি মনে করার কারণ নেই। দেশীয় বস্ত্র বাজারে অবৈধ কারবার প্রতিরোধে নিয়মিত মনিটরিং হওয়া দরকার। এ ক্ষেত্রে কঠোর পদক্ষেপের বিকল্প নেই।

পাকিস্তান

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম