Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প

এ খাতের বিকাশে চাই সর্বাত্মক সহায়তা

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০১৮, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প

দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশে সব জেলা-উপজেলায় এসএমই পরামর্শ কেন্দ্র স্থাপন করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কেন্দ্রগুলো এ শিল্পের প্রসারে ওয়ানস্টপ সার্ভিস সেন্টার হিসেবে কাজ করবে।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প উদ্যোক্তাদের জন্য এটি একটি ভালো পদক্ষেপ সন্দেহ নেই। এর মাধ্যমে উদ্যোক্তাদের পক্ষে ব্যবসাসংক্রান্ত বিভিন্ন পরামর্শ ও সেবা

পাওয়া সহজ হবে। বুধবার রাজধানীতে এসএমই মেলা উদ্বোধনকালে প্রধানমন্ত্রী এ তথ্য জানিয়েছেন। উল্লেখ্য, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উদ্যোক্তাদের পথ দেখানো এবং তাদের উৎসাহিত করার জন্যই এসএমই মেলার

আয়োজন করা হয়।

এসএমই হল অর্থনীতির প্রাণস্বরূপ। যে দেশের এসএমই যত ভালো সেই দেশ তত দ্রুত এগিয়ে যেতে পারে। বস্তুত ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প থেকেই একসময় বড় শিল্প গড়ে ওঠে। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প বিকশিত হলে একটা সময় দেশে আরও অনেক বড় শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে। স্বস্তির বিষয় হল, এ দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশ আশাব্যঞ্জক। দেশে প্রায় ৯০ শতাংশ শিল্পই এ খাতের অন্তর্ভুক্ত। জিডিপিতে এ খাতের অবদান প্রায় ২৫ শতাংশ। কাজেই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পকে উপেক্ষা করার সুযোগ নেই।

এ খাত কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে দারিদ্র্য বিমোচনে বড় ধরনের অবদান রাখছে। ভূমিকা

রাখছে নারীর ক্ষমতায়নেও। সবচেয়ে বড় কথা, এ শিল্প প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর উন্নয়ন ঘটাচ্ছে।

বাংলাদেশের কুটির শিল্পের রয়েছে গৌরবময় ইতিহাস। একসময় এদেশে তৈরি হতো বিখ্যাত মসলিন বস্ত্র। মসলিনের বিলুপ্তি ঘটলেও ঐতিহ্যবাহী জামদানি, নকশিকাঁথা, শীতল পাটি, বেত ও বাঁশের সামগ্রী এখনও বহন করছে কুটির শিল্পের ঐতিহ্য।

দেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পে নীরব বিপ্লব ঘটেছে বললে অত্যুক্তি হবে না। পোলট্রি শিল্প থেকে শুরু করে নানা ধরনের খামার, হস্তশিল্প, প্যাকেজিং শিল্প ইত্যাদির বিকাশের মাধ্যমেই এটি সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে এ শিল্প সারা দেশেই ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে। দেশীয় প্রযুক্তির ক্ষুদ্র যন্ত্রাংশ উদ্ভাবন, উৎপাদন ও বাজারজাতকরণে বদলে গেছে অর্থনীতির দৃশ্যপট।

বাংলাদেশে তৈরি মেশিনারিজ এখন চীন-ভারতের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বিশ্ববাজারে ঠাঁই করে নিচ্ছে। কিছুদিন আগেও অতিপ্রয়োজনীয় যেসব যন্ত্রপাতি-মেশিনারিজ ছিল শতভাগ আমদানিনির্ভর, সেসব আজ এখানেই তৈরি হয়ে দেশের চাহিদা মিটিয়ে রফতানি করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ যে আজ নিম্ন-মধ্যম আয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে, এর পেছনে এ খাতের ভূমিকা অস্বীকার করার সুযোগ নেই।

ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের বিকাশে বড় ভূমিকা রেখেছে ঢাকার ধোলাইখালের মোটর পার্টস ও মেশিনারিজ শিল্পও। কেরানীগঞ্জের জিনজিরা বহুমুখী শিল্পাঞ্চল ছাড়াও অনেক স্থানেই আমাদের মনোযোগের আড়ালে গড়ে উঠছে একেকটি যুগান্তকারী শিল্পকারখানা।

সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা পেলে এসব হালকা ও মাঝারি শিল্পের আরও বিকশিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিকে এগিয়ে নেবে। তাই এ খাতের উদ্যোক্তাদের সহায়তা করতে সরকার সর্বতোভাবে এগিয়ে আসবে, এটাই কাম্য।

সম্পাদকীয়

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম