শীতার্ত মানুষের জন্য
ক’দিন ধরে জাঁকিয়ে বসেছে শীত। জানুয়ারি মাসে শীতের প্রকোপ বেশিই থাকে। দেশে আরও কিছুদিন শীত থাকবে। শীতের ঠান্ডা হাওয়া আমাদের দুয়ারে ভালোই আঘাত করছে।
রাতে কম্বল আর নকশিকাঁথা ব্যবহার করে অনেকে আরাম-আয়েশে ঘুমাচ্ছে। একটু খেয়াল করলে আমরা দেখব চারপাশে অনেক প্রতিবেশী আছে, যারা শীতে কষ্ট পাচ্ছে।
ফুটপাতে অসংখ্য মানুষ শীতের থাবায় জর্জরিত। রাস্তার উপর শুয়ে থাকা শিশুটি শীতে কাতরাচ্ছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ছোট ছোট শিশু ঘুমাতে পারছে না। এসব এলাকায় দেখা যায় বয়োবৃদ্ধ মানুষ আর ছোট শিশুরা প্রচণ্ডভাবে কাঁপছে। অনেক পাহাড়ি শিশু ও বৃদ্ধ খুব কষ্টের মধ্যে আছে। এই তীব্র শীতে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের যখন খালি গায়ে দেখি তখন খুব কষ্ট হয়।
আমাদের অনেকের অর্থ আছে, বিত্ত আছে, সহায়-সম্পদ আছে। এ সবকিছুর সঙ্গে আমাদের বিবেকটা জাগ্রত করতে পারলে আমরা নিজেরাই অনেক কিছুতে পরিবর্তন আনতে পারি।
আমরা একটু সচেতন হলে এসব মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। নিজের আয়ের সামান্য কিছু অংশ দিয়ে তাদের কয়েকটি কম্বল অথবা শীতবস্ত্র কিনে দিতে পারি। বড় বড় প্রতিষ্ঠান এসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে। বড় বড় ব্যবসায়ী আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে পারেন।
অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানোর মধ্যে আত্মতৃপ্তি আছে। আশার কথা, কিছু সংগঠন এখন শীতার্ত মানুষের জন্য কাজ করছে। তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আসুন, আমরা এখন থেকে পরিকল্পনা করি কীভাবে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়। আসুন, আমরা মানুষকে ভালোবাসি। মানুষকে ভালোবাসার ভেতরে আনন্দ আছে।
যেসব অসহায় মানুষ শীতে কষ্ট পাচ্ছে, তাদের পাশে থাকাটাই মানবতা। উত্তরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের শীতের সময় খুব কষ্ট। বলা হচ্ছে, সামনে আরেকটা শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে। একদিকে করোনাভীতি অন্যদিকে শীতের ঠান্ডায় আমাদের চারপাশে থাকা অসহায় মানুষ খুব কষ্টে আছে। অল্প আয়ের মানুষের দুর্ভোগও বাড়তে শুরু করেছে।
পর্যাপ্ত বস্ত্রের অভাবে অসহায় মানুষ রাতে ঘুমাতে পারছে না। আমরা যারা মোটামুটি চলতে পারছি, তারা এসব শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। উঁচু স্তরের মানুষজন একটু মমতার দৃষ্টি দিলে অনেক মানুষ আরামে ঘুমাতে পারবেন।
রেলস্টেশন আর ফুটপাতে গেলে বোঝা যায় শীতার্ত মানুষ কতটা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। মানবতার সেবা করা আমাদের সবারই উচিত। প্রত্যেক ধর্ম মানবতার সেবা করতে বলেছে। তাই আসুন, শীতার্ত মানুষের অসহায় জীবনের কথা ভেবে তাদের পাশে এসে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। আমাদের মনে রাখতে হবে, শুধু নিজে ভালো থাকলেই হবে না, আমার পাশের জনকেও ভালো থাকতে হবে।
কোনো শিশু, কোনো বৃদ্ধ যাতে শীতে কষ্ট না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের সবারই উচিত সেবামূলক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া। আরেকজনের কষ্ট নিজের অন্তর দিয়ে অনুভব করতে হবে। আসুন, আমরা মানবতার জন্য কাজ করি।
রূপম চক্রবর্ত্তী : প্রাবন্ধিক
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৪০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
শীতার্ত মানুষের জন্য
ক’দিন ধরে জাঁকিয়ে বসেছে শীত। জানুয়ারি মাসে শীতের প্রকোপ বেশিই থাকে। দেশে আরও কিছুদিন শীত থাকবে। শীতের ঠান্ডা হাওয়া আমাদের দুয়ারে ভালোই আঘাত করছে।
রাতে কম্বল আর নকশিকাঁথা ব্যবহার করে অনেকে আরাম-আয়েশে ঘুমাচ্ছে। একটু খেয়াল করলে আমরা দেখব চারপাশে অনেক প্রতিবেশী আছে, যারা শীতে কষ্ট পাচ্ছে।
ফুটপাতে অসংখ্য মানুষ শীতের থাবায় জর্জরিত। রাস্তার উপর শুয়ে থাকা শিশুটি শীতে কাতরাচ্ছে। দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় ছোট ছোট শিশু ঘুমাতে পারছে না। এসব এলাকায় দেখা যায় বয়োবৃদ্ধ মানুষ আর ছোট শিশুরা প্রচণ্ডভাবে কাঁপছে। অনেক পাহাড়ি শিশু ও বৃদ্ধ খুব কষ্টের মধ্যে আছে। এই তীব্র শীতে ছোট ছোট ছেলেমেয়েদের যখন খালি গায়ে দেখি তখন খুব কষ্ট হয়।
আমাদের অনেকের অর্থ আছে, বিত্ত আছে, সহায়-সম্পদ আছে। এ সবকিছুর সঙ্গে আমাদের বিবেকটা জাগ্রত করতে পারলে আমরা নিজেরাই অনেক কিছুতে পরিবর্তন আনতে পারি।
আমরা একটু সচেতন হলে এসব মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। নিজের আয়ের সামান্য কিছু অংশ দিয়ে তাদের কয়েকটি কম্বল অথবা শীতবস্ত্র কিনে দিতে পারি। বড় বড় প্রতিষ্ঠান এসব অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারে। বড় বড় ব্যবসায়ী আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসতে পারেন।
অসহায় মানুষের পাশে এসে দাঁড়ানোর মধ্যে আত্মতৃপ্তি আছে। আশার কথা, কিছু সংগঠন এখন শীতার্ত মানুষের জন্য কাজ করছে। তাদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আসুন, আমরা এখন থেকে পরিকল্পনা করি কীভাবে শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়ানো যায়। আসুন, আমরা মানুষকে ভালোবাসি। মানুষকে ভালোবাসার ভেতরে আনন্দ আছে।
যেসব অসহায় মানুষ শীতে কষ্ট পাচ্ছে, তাদের পাশে থাকাটাই মানবতা। উত্তরাঞ্চলের দরিদ্র মানুষের শীতের সময় খুব কষ্ট। বলা হচ্ছে, সামনে আরেকটা শৈত্যপ্রবাহ আসতে পারে। একদিকে করোনাভীতি অন্যদিকে শীতের ঠান্ডায় আমাদের চারপাশে থাকা অসহায় মানুষ খুব কষ্টে আছে। অল্প আয়ের মানুষের দুর্ভোগও বাড়তে শুরু করেছে।
পর্যাপ্ত বস্ত্রের অভাবে অসহায় মানুষ রাতে ঘুমাতে পারছে না। আমরা যারা মোটামুটি চলতে পারছি, তারা এসব শীতার্ত মানুষের পাশে দাঁড়াতে পারি। উঁচু স্তরের মানুষজন একটু মমতার দৃষ্টি দিলে অনেক মানুষ আরামে ঘুমাতে পারবেন।
রেলস্টেশন আর ফুটপাতে গেলে বোঝা যায় শীতার্ত মানুষ কতটা দুর্বিষহ জীবনযাপন করছে। মানবতার সেবা করা আমাদের সবারই উচিত। প্রত্যেক ধর্ম মানবতার সেবা করতে বলেছে। তাই আসুন, শীতার্ত মানুষের অসহায় জীবনের কথা ভেবে তাদের পাশে এসে দাঁড়ানোর চেষ্টা করি। আমাদের মনে রাখতে হবে, শুধু নিজে ভালো থাকলেই হবে না, আমার পাশের জনকেও ভালো থাকতে হবে।
কোনো শিশু, কোনো বৃদ্ধ যাতে শীতে কষ্ট না পায় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। আমাদের সবারই উচিত সেবামূলক কাজের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়া। আরেকজনের কষ্ট নিজের অন্তর দিয়ে অনুভব করতে হবে। আসুন, আমরা মানবতার জন্য কাজ করি।
রূপম চক্রবর্ত্তী : প্রাবন্ধিক