Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

ফের গণটিকা কার্যক্রম শুরু

করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সবাইকে শামিল হতে হবে

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০১ জুলাই ২০২১, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ফের গণটিকা কার্যক্রম শুরু

গতকাল সারা দেশে আবার করোনাভাইরাসের গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছে, এটি স্বস্তির বিষয়। এর আগে গত ৭ ফেব্রুয়ারি গণটিকাদান কার্যক্রম শুরু হয়েছিল।

কিন্তু ভারতের সেরাম ইনস্টিটিউট চুক্তি অনুযায়ী টিকা সরবরাহ করতে না পারায় দেশে ৫৮ লাখের কিছু বেশি মানুষকে টিকাদানের পর টিকার প্রথম ডোজ দেওয়া স্থগিত করা হয়। ফলে টিকাদান কর্মসূচি পড়ে অনিশ্চয়তার মুখে। এ অবস্থায় সরকার অন্যান্য উৎস থেকে টিকা সংগ্রহে তৎপরতা চালায়।

এ চেষ্টার ফলে টিকার আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফরম কোভ্যাক্স থেকে ফাইজার-বায়োএনটেকের তৈরি ১ লাখ ৬২০ ডোজ এবং চীনের উপহার হিসাবে দুই দফায় সিনোফার্মের তৈরি ১১ লাখ ডোজ টিকা দেশে এসেছে। এছাড়া সিনোফার্মের কাছ থেকে সরকারি পর্যায়ে দেড় কোটি ডোজ টিকা কেনার চুক্তি সম্পন্ন হয়েছে।

এ চুক্তি অনুযায়ী প্রতি মাসে ৫০ লাখ ডোজ করে টিকা পাওয়ার কথা রয়েছে। এদিকে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আবদুল মোমেন জানিয়েছেন, ২ ও ৩ জুলাই যুক্তরাষ্ট্র থেকে কোভ্যাস্কের ২৫ লাখ টিকা ঢাকায় এসে পৌঁছাবে।

এছাড়া চীন থেকে আসবে ২০ লাখ টিকা। রাশিয়ার টিকার ব্যাপারেও যথেষ্ট অগ্রগতি হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে দেশে টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তা বা জটিলতা কেটে যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস।

যেহেতু করোনার তাণ্ডব বিশ্বব্যাপী চলমান রয়েছে, সেহেতু সময়মতো প্রয়োজনীয় টিকা সংগ্রহ করা বিরাট এক চ্যালেঞ্জে পরিণত হয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, যত বেশি মানুষকে টিকার আওতায় আনা সম্ভব হবে, করোনা মহামারি নিয়ন্ত্রণে তা তত বেশি ভূমিকা রাখবে। তাই যত দ্রুত সম্ভব দেশের অন্তত ৭০ শতাংশ মানুষকে পূর্ণ ডোজ টিকার আওতায় আনতে হবে। অন্যথায়, বড় ঝুঁকিতে পড়তে পারে দেশ।

গত এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বকে রীতিমতো ওলটপালট করে দিচ্ছে করোনা নামের ভাইরাস। এ মহামারিতে বিশ্বে লাখ লাখ মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কোটি কোটি মানুষ পড়েছে আর্থিক সংকটে।

মৃত্যু, শোক আর সংকটের মধ্যে কাটিয়েছে মানুষ। এ প্রেক্ষাপটে জীবন ও জীবিকা দুটির সুরক্ষার জন্যই বড় প্রয়োজন ছিল করোনা টিকার। বিশ্বের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান টিকা আবিষ্কার করলেও সংশয় ছিল-ধনী দেশগুলোর টিকাপ্রাপ্তির প্রতিযোগিতার দৌড়ে তা কবে নাগাদ আমাদের মতো দেশগুলোয় এসে পৌঁছবে।

স্বস্তির বিষয়, সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপে বিশ্বে টিকাদান কার্যক্রম শুরু হওয়ার অল্পদিনের মধ্যেই বাংলাদেশেও এ কার্যক্রম শুরু হয়। তবে মাঝপথে টিকার প্রাপ্তি নিয়ে অনিশ্চয়তায় টিকা সংকট সৃষ্টি হওয়ার আশঙ্কা দেখা দেয়। আশার কথা, সেই আশঙ্কা কেটে গেছে আপাতত।

তবে দেশের অন্তত ৭০ শতাংশ মানুষকে যাতে পূর্ণ ডোজ টিকার আওতায় আনা সম্ভব হয় সেজন্য টিকা সংগ্রহে তৎপরতা অব্যাহত রাখতে হবে। সেই সঙ্গে দেশে করোনার টিকা উৎপাদনে সরকারের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তা প্রদান করা উচিত বলেও মনে করি আমরা।

দেশে প্রথম দফার গণটিকাদান কার্যক্রম ভালোভাবে এবং শৃঙ্খলার সঙ্গে সম্পাদিত হয়েছে। আমরা আশা করব, এবারের গণটিকাদান কার্যক্রমও সুশৃঙ্খলভাবে সম্পন্ন হবে। যারা এখনো টিকা গ্রহণে দ্বিধা-দ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছেন, তাদের উচিত দ্রুত অনলাইনে নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে শামিল হওয়া।

ফের গণটিকা কার্যক্রম শুরু

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম