ছিনতাইকারীদের হালনাগাদ তালিকা
এবার দমনমূলক ব্যবস্থা নিন
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ০৮ জুলাই ২০২১, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
রাজধানীতে ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য কতটা বেড়েছে তা বোঝা যায় সম্প্রতি একজন মন্ত্রীর মোবাইল ফোন ছিনতাই হওয়ার ঘটনায়।
প্রশ্ন উঠেছে, যেখানে স্বয়ং মন্ত্রী ছিনতাইয়ের শিকার হন, সেখানে সাধারণ মানুষের নিরাপত্তা কোথায়? এমনকি পুলিশ সদস্যরাও ছিনতাইকারীদের হাত থেকে রেহাই পাচ্ছেন না।
রীতিমতো বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ছিনতাইকারীরা। তাদের হাতে সর্বস্ব খোয়ানোর পাশাপাশি হতাহতও হচ্ছেন অনেকে। মানুষের কষ্টে উপার্জিত টাকা ও মূল্যবান সামগ্রী দুর্বৃত্তরা হাতিয়ে নেবে, এটা কোনোমতেই মেনে নেওয়া যায় না। যেহেতু এটি একটি আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতিজনিত সমস্যা, সেহেতু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে যে কোনো উপায়ে তা প্রতিরোধ করতে হবে।
জানা গেছে, রাজধানীর ছিনতাইকারীদের থানাওয়ারি তালিকা হালনাগাদ করেছে পুলিশ। এতে পাঁচ শতাধিক ছিনতাইকারীর নাম-ধাম উল্লেখ করা হয়েছে। এ তালিকা অনুযায়ী রাজধানীতে সবচেয়ে বেশি ছিনতাইকারী তালিকাভুক্ত হয়েছে ভাটারা থানায়। এছাড়া মিরপুর, উত্তরা, শাহবাগ ও পুরান ঢাকার বিভিন্ন এলাকায়ও ছিনতাইকারীদের দৌরাত্ম্য বেশি। ছিনতাইয়ের রয়েছে বিভিন্ন ধরন। কেউ অজ্ঞান পার্টি, কেউ মলম পার্টি, আবার কেউ সালাম পার্টির সদস্য। অজ্ঞান পার্টির তৎপরতা চলে মূলত বাসের ভেতর। এই শ্রেণির ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে অনেকে প্রাণও হারিয়েছেন। কাজেই ছিনতাইকারীদের দমন করতে হবে কঠোরভাবে। বছরের পর বছর ধরে চলতে থাকা এই অপরাধের লাগাম টেনে ধরতে না পারায় পুলিশের ভূমিকা নিয়েও রয়েছে নানা প্রশ্ন। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে প্রশ্ন তা হলো, পুলিশ ছিনতাইকারীদের ব্যাপারে বিস্তারিত জানলেও ছিনতাই থামানো যাচ্ছে না কেন? এর একটি কারণ ছিনতাইকারীদের গ্রেফতার করা হলে তারা জামিনে বেরিয়ে এসেই আবার ছিনতাইয়ের সঙ্গে জড়িয়ে পড়ে। কাজেই তারা যাতে সহজে জামিন পেতে না পারে, সেজন্য এ সংক্রান্ত আইনের ফাঁক বন্ধ করতে হবে আগে।
ছিনতাইকারী চক্রের নতুন সদস্যরা কোনো অপরাধ সংঘটনের পর গা ঢাকা দিয়ে এলাকা পরিবর্তন করে থাকে। সেক্ষেত্রে গোয়েন্দা পুলিশের তৎপরতা বাড়িয়ে ছিনতাইকারীদের গতিবিধির ওপর সার্বক্ষণিকভাবে নজর রাখতে হবে।
বেশিরভাগ ছিনতাইকারী হয়ে থাকে নেশাগ্রস্ত। নেশার টাকা জোগাতে তারা এ পথ বেছে নেয়। অপরাধ বিশেষজ্ঞদের ধারণা, মাদকের ব্যবসা বন্ধ করতে না পারলে মাদকাসক্তদের ছিনতাই থেকে ফেরানো সম্ভব নয়। কারণ যখনই তারা নেশাদ্রব্য গ্রহণের ইচ্ছা পোষণ করে, তখনই তাদের প্রয়োজন হয় টাকার।
আর রাস্তাঘাটে ছিনতাই করা অর্থ দিয়ে তারা সেই ইচ্ছা চরিতার্থ করে। কাজেই ছিনতাই প্রতিরোধের কার্যক্রমটি হতে হবে ব্যাপকভিত্তিক। পুলিশ ছিনতাইকারীদের তালিকা হালনাগাদ করেছে, এবার তাদের কঠোরভাবে দমন করা হবে-এটাই দেখতে চায় মানুষ।
