প্রধানমন্ত্রীর মালদ্বীপ সফর
দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৮ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছয় দিনের মালদ্বীপ সফর ছিল নানা দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ। মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম মোহাম্মদ সলিহর আমন্ত্রণে তিনি এ সফর করেন। এ সফরকালে দুই দেশের মধ্যে দক্ষ স্বাস্থ্য পেশাদারদের নিয়োগ এবং যুব ও ক্রীড়া উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহযোগিতার বিষয়ে দুটি সমঝোতা স্মারক এবং দ্বৈত আয়কর বিলোপের জন্য একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়।
এছাড়া বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে স্বাস্থ্যসেবা ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটি সমঝোতা স্মারক নবায়ন করা হয়। এ সফরকালে প্রধানমন্ত্রী মালদ্বীপের প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্ট, পিপলস মজলিসের (পার্লামেন্ট) স্পিকার এবং প্রধান বিচারপতির সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠক করেন। এছাড়া মালদ্বীপের পার্লামেন্টে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী। বন্ধুত্বের প্রতীক হিসাবে বাংলাদেশ মালদ্বীপকে ১৩টি সামরিক যান উপহার দেয়। দ্বিপাক্ষিক আলোচনা এবং উপকরণ হস্তান্তর অনুষ্ঠানের পর একটি যৌথ ইশতেহার ঘোষণা করা হয়।
সার্কভুক্ত দেশ হিসাবে মালদ্বীপের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক এমনিতেই ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ। দ্বিপাক্ষিক ও আন্তর্জাতিক ইস্যুতে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করে যাচ্ছে। বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও মানবিক সংকটে বাংলাদেশ সবসময় মালদ্বীপের পাশে দাঁড়িয়েছে। গত বছর করোনা মহামারি মোকাবিলায় বিভিন্ন সুরক্ষা সামগ্রীসহ প্রয়োজনীয় জরুরি ওষুধও দেশটিকে প্রদান করেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ও মালদ্বীপ উভয় দেশই রয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত বিপদের মারাত্মক ঝুঁকিতে। সেক্ষেত্রে দুই দেশ পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমে এ বিপদ মোকাবিলার কর্মপন্থা গ্রহণ করতে পারে। উভয় দেশ মানবসম্পদ উন্নয়নে সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং ব্যবসা-বাণিজ্য বৃদ্ধির বিষয়ে কাজ করতে পারে। বিশেষ করে বাংলাদেশ থেকে মালদ্বীপে মানবসম্পদ প্রেরণের ক্ষেত্র সম্প্রসারিত করার সুযোগ রয়েছে। এছাড়া মৎস্য সম্পদ উন্নয়ন এবং গভীর সমুদ্রে মৎস্য শিকারের বিষয়েও দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করতে পারে।
আমরা জানি, ইতঃপূর্বে বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচলের বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। আমরা মনে করি, এ জাহাজ চলাচল শুরু হলে তা থেকে উভয় দেশই লাভবান হতে পারে। এটি বাণিজ্য সম্প্রসারণের পাশাপাশি পর্যটনের বিকাশেও সহায়ক হবে। উল্লেখ্য, মালদ্বীপ পৃথিবীর অন্যতম একটি পর্যটন আকর্ষণীয় স্থান।
বর্তমানে বাংলাদেশি পর্যটকদের জন্য মালদ্বীপ ভ্রমণ কিছুটা ব্যয়সাপেক্ষ ব্যাপার। এ ব্যয় কীভাবে কমিয়ে আনা যায়, দুদেশের বিশেষজ্ঞদের উচিত তা খতিয়ে দেখা। এতে মালদ্বীপে বাংলাদেশি পর্যটকের সংখ্যা বাড়বে, যা দেশটির রাজস্ব আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। বাংলাদেশ ও মালদ্বীপের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পেলে উভয় দেশের জনগণ উপকৃত হবে বলে আশা করা যায়। এ লক্ষ্যে পারস্পরিক কূটনৈতিক তৎপরতা আরও বাড়ানো প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রীর মালদ্বীপ সফরের মধ্য দিয়ে দুই দেশের সম্পর্ক আরও জোরদার হবে, এটাই প্রত্যাশা।
