থেমে নেই নির্বাচনি সহিংসতা
এসব মৃত্যু মেনে নেওয়া যায় না
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২৯ ডিসেম্বর ২০২১, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
চলমান ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) নির্বাচনে সহিংসতা-সংঘাত অব্যাহত রয়েছে। সর্বশেষ নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায় প্রাণ হারিয়েছেন তিনজন। এদের মধ্যে একজন পাবনায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক। তিনি নিহত হয়েছেন প্রতিপক্ষের গুলিতে।
কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামে নির্বাচনি বিরোধের জেরে কুপিয়ে হত্যা করা হয়েছে এক যুবককে। জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে মেম্বার প্রার্থীর সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন আরও একজন। নির্বাচনি সহিংসতায় শুধু প্রাণই ঝরছে না, চলছে ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়িতে ভাঙচুর, আগুন দেওয়া ও লুটপাটের ঘটনাও।
চলমান ইউপি নির্বাচনে দুটি সাধারণ বিষয় লক্ষ করা যাচ্ছে। একটি সহিংসতা, অন্যটি বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া। ইউপি নির্বাচনের শুরু থেকে এ পর্যন্ত সহিংসতায় ৮৩ জনের বেশি ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। আর আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) তথ্য অনুযায়ী, গত জানুয়ারি থেকে নভেম্বর পর্যন্ত সহিংসতার ঘটনা ঘটেছে ৪৪২টি।
অভিজ্ঞতা থেকে বলা যায়, আগামী নির্বাচনগুলোয়ও সহিংসতার ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে। আমরা এ প্রসঙ্গে বলতে চাই-যথেষ্ট হয়েছে, আর নয়। আমরা মনে করি, নির্বাচনি প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অংশগ্রহণ করাটাই বড় কথা, জনগণের ভোটে কে জিতল আর কে হারল তা গুরুত্বপূর্ণ নয়। গণতন্ত্রের মূল কথাই হলো, নির্বাচকমণ্ডলী তাদের বিবেচনায় যোগ্য প্রার্থীকে নির্বিঘ্নে ভোট দেবে এবং এর ফলাফল নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী সবাইকে মেনে নিতে হবে।
পরিতাপের বিষয়, নির্বাচনে যে কোনো প্রকারে নির্বাচিত হওয়ার প্রবণতা দিন দিন প্রকট হচ্ছে। আর এ প্রবণতার ফলে প্রাণ যাচ্ছে মানুষের। আমরা আশা করব, আগামী নির্বাচগুলো সহিংসতামুক্ত অবস্থায় অনুষ্ঠিত হবে। নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসতায়ও জড়াবে না কেউ। এ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। তাদের সদা-সতর্ক অবস্থায় থাকতে হবে, যাতে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাকে কেন্দ্র করে সহিংসতার সূত্রপাত না হয়।
আমরা মনে করি, যে কোনো নির্বাচন নির্বিঘ্ন ও সহিংসতামুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে নির্বাচকমণ্ডলী তথা ভোটার শ্রেণির ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। তারা যদি গণতান্ত্রিক চেতনায় ভোট প্রদানে অংশ নেয়, তাহলেই নির্বাচন সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য হতে পারে।
