নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং
কোনোরকম অনিশ্চয়তা কাম্য নয়
নতুন শিক্ষাক্রমের পরীক্ষামূলক (পাইলটিং) কার্যক্রম শুরু নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি মোটেই কাম্য নয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বছর মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ এবং প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম পাইলটিং হওয়ার কথা। অথচ ষষ্ঠ শ্রেণির কাজ অনেকটা শেষ হওয়ার পথে থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রথম শ্রেণির পাঠ্যবই লেখাই শুরু হয়নি।
শুধু তাই নয়, শিক্ষক প্রশিক্ষণসহ আনুষঙ্গিক আরও অনেক কাজও বাকি রয়েছে বলে জানা গেছে। এর বিপরীতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সংশ্লিষ্ট শাখা শুধু শিক্ষাক্রম তৈরি করে বসে আছে, যা কোনোমতেই মেনে নেওয়া যায় না।
অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষাক্রমের রূপরেখা তৈরির সূচনাকাল থেকেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছিল, যা অপনোদনের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এর ফলে বর্তমানে সমন্বয়হীনতার বিষয়টি প্রকটভাবে দৃশ্যমান হয়েছে।
মূলত নতুন শিক্ষাক্রমে অভিজ্ঞতাভিত্তিক পড়ালেখাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, যে কাজে নেতৃত্ব দিয়ে থাকে এনসিটিবির মাধ্যমিক উইং। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই মাধ্যমিক স্তরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এ উদ্যোগ ফলপ্রসূ হয়েছে। অন্যদিকে প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবইসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রমের সংস্থান হয় প্রাথমিক শিক্ষা খাত উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি) থেকে।
উপরন্তু প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা কর্মকাণ্ডের নিয়ন্ত্রক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। অভিযোগ উঠেছে, সেখান থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা তো পাওয়াই যায়ইনি; বরং নীতিনির্ধারণী বিভিন্ন বৈঠকে ভিন্ন অবস্থান প্রকাশের ঘটনাও ঘটেছে।
এর ফলে যা হওয়ার তা-ই হয়েছে; অর্থ বরাদ্দ ও প্রশাসনিক অনুমোদনসংক্রান্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে জটিলতা। বস্তুত গোড়া থেকে শিক্ষার দুটি শাখা ভিন্ন দুটি পথে হাঁটায় নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং কার্যক্রম দীর্ঘসূত্রতার ফাঁদে পড়েছে, যা থেকে উত্তরণের উপায় খোঁজা জরুরি বলে মনে করি আমরা।
মূল্যায়ন ও শিখন পদ্ধতিতে বড় রকমের পরিবর্তন এনে শিক্ষাক্রম রূপরেখা তৈরি করেছে সরকার। গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখার অনুমোদন দিয়েছেন। সে অনুযায়ী প্রণীত হবে শিক্ষাক্রম।
এর ফলে এখন প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রম বদলে যাবে। তবে তা চূড়ান্ত বাস্তবায়নের আগে পরীক্ষামূলকভাবে প্রবর্তনের যে নিয়ম রয়েছে, সে অনুযায়ী যথাযথ পাইলটিং শেষে ২০২৩ সালে প্রথম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে নতুন বই যাওয়ার কথা রয়েছে। এ অবস্থায় সবকিছু মিলে প্রথম শ্রেণির শিক্ষাক্রম নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার লক্ষ্যে একটি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, এটাই প্রত্যাশা।
নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং
কোনোরকম অনিশ্চয়তা কাম্য নয়
সম্পাদকীয়
১৫ জানুয়ারি ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
নতুন শিক্ষাক্রমের পরীক্ষামূলক (পাইলটিং) কার্যক্রম শুরু নিয়ে অনিশ্চয়তা সৃষ্টি মোটেই কাম্য নয়। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ বছর মাধ্যমিক স্তরের ষষ্ঠ এবং প্রাথমিকের প্রথম শ্রেণিতে নতুন শিক্ষাক্রম পাইলটিং হওয়ার কথা। অথচ ষষ্ঠ শ্রেণির কাজ অনেকটা শেষ হওয়ার পথে থাকলেও এখন পর্যন্ত প্রথম শ্রেণির পাঠ্যবই লেখাই শুরু হয়নি।
শুধু তাই নয়, শিক্ষক প্রশিক্ষণসহ আনুষঙ্গিক আরও অনেক কাজও বাকি রয়েছে বলে জানা গেছে। এর বিপরীতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের (এনসিটিবি) সংশ্লিষ্ট শাখা শুধু শিক্ষাক্রম তৈরি করে বসে আছে, যা কোনোমতেই মেনে নেওয়া যায় না।
অভিযোগ রয়েছে, শিক্ষাক্রমের রূপরেখা তৈরির সূচনাকাল থেকেই প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা দিয়েছিল, যা অপনোদনের বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। এর ফলে বর্তমানে সমন্বয়হীনতার বিষয়টি প্রকটভাবে দৃশ্যমান হয়েছে।
মূলত নতুন শিক্ষাক্রমে অভিজ্ঞতাভিত্তিক পড়ালেখাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে, যে কাজে নেতৃত্ব দিয়ে থাকে এনসিটিবির মাধ্যমিক উইং। এর ফলে স্বাভাবিকভাবেই মাধ্যমিক স্তরে স্বয়ংক্রিয়ভাবে এ উদ্যোগ ফলপ্রসূ হয়েছে। অন্যদিকে প্রাথমিক স্তরের পাঠ্যবইসহ আনুষঙ্গিক কার্যক্রমের সংস্থান হয় প্রাথমিক শিক্ষা খাত উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি) থেকে।
উপরন্তু প্রাথমিক স্তরের শিক্ষা কর্মকাণ্ডের নিয়ন্ত্রক প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়। অভিযোগ উঠেছে, সেখান থেকে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় সহায়তা তো পাওয়াই যায়ইনি; বরং নীতিনির্ধারণী বিভিন্ন বৈঠকে ভিন্ন অবস্থান প্রকাশের ঘটনাও ঘটেছে।
এর ফলে যা হওয়ার তা-ই হয়েছে; অর্থ বরাদ্দ ও প্রশাসনিক অনুমোদনসংক্রান্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে দেখা দিয়েছে জটিলতা। বস্তুত গোড়া থেকে শিক্ষার দুটি শাখা ভিন্ন দুটি পথে হাঁটায় নতুন শিক্ষাক্রমের পাইলটিং কার্যক্রম দীর্ঘসূত্রতার ফাঁদে পড়েছে, যা থেকে উত্তরণের উপায় খোঁজা জরুরি বলে মনে করি আমরা।
মূল্যায়ন ও শিখন পদ্ধতিতে বড় রকমের পরিবর্তন এনে শিক্ষাক্রম রূপরেখা তৈরি করেছে সরকার। গত ১৩ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শিক্ষাক্রম রূপরেখার অনুমোদন দিয়েছেন। সে অনুযায়ী প্রণীত হবে শিক্ষাক্রম।
এর ফলে এখন প্রাক-প্রাথমিক থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পাঠ্যক্রম বদলে যাবে। তবে তা চূড়ান্ত বাস্তবায়নের আগে পরীক্ষামূলকভাবে প্রবর্তনের যে নিয়ম রয়েছে, সে অনুযায়ী যথাযথ পাইলটিং শেষে ২০২৩ সালে প্রথম ও ষষ্ঠ শ্রেণিতে নতুন বই যাওয়ার কথা রয়েছে। এ অবস্থায় সবকিছু মিলে প্রথম শ্রেণির শিক্ষাক্রম নিয়ে যে সংকট তৈরি হয়েছে, তা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। নিরবচ্ছিন্ন শিক্ষা কার্যক্রম চালু রাখার লক্ষ্যে একটি কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে, এটাই প্রত্যাশা।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023