Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ

পারস্পরিক আস্থা তৈরির ওপর গুরুত্ব দিন

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৮ মে ২০২২, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সংসদ নির্বাচনে সব দলের অংশগ্রহণ

ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সভায় অংশগ্রহণকারীরা প্রতিপক্ষ বিএনপিকে আগামী সংসদ নির্বাচনে আনতে উদ্যোগ গ্রহণের ওপর গুরুত্ব আরোপ করছেন বিষয়টি নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। বস্তুত আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের গ্রহণযোগ্যতা ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যেই যে দলীয় নেতারা এমন পরামর্শ রেখেছেন, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। অন্যদিকে গত রোববার একটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আওয়ামী লীগের ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক সম্পর্কে বলতে গিয়ে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ আওয়ামী লীগ সব দলকে নিয়ে নির্বাচন করতে চায় বলে উল্লেখ করেছেন। মন্ত্রীর এ বক্তব্যকেও ইতিবাচক বলে মনে করি আমরা। আগামী সংসদ নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ জরুরি-এ ব্যাপারে কোনো সংশয় নেই। তবে নির্বাচনে বিএনপির অংশগ্রহণ ও তা অর্থবহ করার ক্ষেত্রে নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের দায়িত্বও কম নয়। বস্তুত আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির সঙ্গে আওয়ামী লীগের দূরত্ব কমিয়ে আনার সুযোগ তৈরি হয়েছে। আওয়ামী লীগ এ সুযোগ কতটা সদ্ব্যবহার করতে আগ্রহী-সেটাই এখন দেখার বিষয়।

বলার অপেক্ষা রাখে না, রাজনৈতিক দল-বিশেষ করে দেশের প্রধান দুটি রাজনৈতিক দলের সম্পর্ক শত্রুতায় পর্যবসিত হওয়ায় গণতন্ত্র ও উন্নয়ন-অগ্রগতি হুমকির মুখে পড়েছে। গত দুই দশকেরও বেশি সময় ধরে দেশের দুই বড় রাজনৈতিক দলের মধ্যে যে বৈরী সম্পর্ক চলছে, তার কুফল ভোগ করছে দেশবাসী। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের উপায় হচ্ছে, পারস্পরিক সহনশীলতা ও সমঝোতার পরিবেশ সৃষ্টি করা। দেশে সমঝোতার রাজনীতি, সহনশীল আচরণ ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের কোনো বিকল্প নেই। অবশ্য এক্ষেত্রে বিএনপিকেও যথেষ্ট দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। আমাদের বিশ্বাস, উভয় দলের রাজনীতিকরা যদি পরিচ্ছন্ন ও রুচিশীল মন-মানসিকতার ধারক-বাহক হয়ে দেশে গণতন্ত্র সমুন্নত রাখার বিষয়ে ঐকমত্যে পৌঁছতে সক্ষম হন, তাহলে আগামী সংসদ নিয়ে দেশবাসীর মনে যে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও হতাশা বিরাজ করছে, তার অপনোদন ঘটবে।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে সংঘাত, সহিংসতা, এমনকি সাংবিধানিক সংকট তৈরি হলে অসাংবিধানিক পন্থায় ক্ষমতার পালাবদল একেবারেই উড়িয়ে দেওয়া যায় না। এ রকমটি ঘটলে গণতন্ত্র বিপন্ন হবে, যা কারও কাম্য নয়। রাজনৈতিকভাবে অসহিষ্ণু এ দেশটিতে নির্বাচন, বিশেষ করে জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে দেশে সহিংস পরিস্থিতির সৃষ্টি হলে কেবল সাধারণ মানুষ নিরাপত্তা ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে না; অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আমদানি-রফতানি কার্যক্রম এবং দেশের ব্যবসায়-বাণিজ্য ও বিনিয়োগসহ সরকারের রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। তাছাড়া সহিংস রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে বিভিন্ন উৎপাদনশীল খাত ও রফতানিমুখী শিল্প ক্ষতির সম্মুখীন হতে পারে, যার ফলে এসব শিল্পের ওপর নির্ভরশীল হাজার হাজার শ্রমিকের ভাগ্যও হয়ে পড়বে অনিশ্চিত। সবচেয়ে বড় কথা, রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে সক্ষম না হলে বিনিয়োগ ও উন্নয়নে কাঙ্ক্ষিত সাফল্য আসবে না। এসব বিষয় মাথায় রেখে ন্যায়নিষ্ঠ ও পরিচ্ছন্ন মন-মানসিকতার পরিচয় দিয়ে সরকার ও বিরোধীদলীয় সব রাজনৈতিক দল যূথবদ্ধভাবে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সফল ও অর্থবহ করে তুলবে, এটাই প্রত্যাশা।

সংসদ নির্বাচন

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম