Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

জ্বালানি তেলের দাম বিতর্ক, পরিশোধন সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ১২ আগস্ট ২০২২, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

জ্বালানি তেলের দাম বিতর্ক, পরিশোধন সক্ষমতা বাড়ানো জরুরি

‘জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি এড়ানো যেত কিনা’-এ বিষয়ে বুধবার এক সংলাপের আয়োজন করেছিল বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি)।

এ সংলাপে অংশ নেওয়া বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) গত সাত বছরে জ্বালানি খাত থেকে ৪৬ হাজার কোটি টাকা মুনাফা করেছে। সরকার এ খাতকে রাজস্ব আয়ের বড় মাধ্যম হিসাবে ব্যবহার করছে।

জ্বালানি তেলের শুল্ক প্রত্যাহার করে বা কমিয়ে মূল্যবৃদ্ধি এড়ানো যেত। কিন্তু এ খাত জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের কাছে রাজস্বের বড় উৎস হওয়ায় তারা ছাড় দেবে না। বিশেষজ্ঞরা আরও বলেছেন, বিশ্ববাজারে প্রতি ব্যারেল জ্বালানি তেল ১১০ ডলার হলেও দেশে সব মিলিয়ে প্রতি লিটারের খরচ ৮২ টাকার কাছাকাছি। সেটি ৮৫ টাকায় বিক্রি করলেও কিছু লাভ হবে।

অথচ সরকারের অদক্ষতায় উচ্চমূল্যের দায় জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিশেষজ্ঞরা সরকারের কাছে তেলের দাম পুনঃনির্ধারণের জোর সুপারিশ করেছেন। অন্যদিকে একই দিনে অনুষ্ঠিত এক সংবাদ সম্মেলনে বিপিসির চেয়ারম্যান এবিএম আজাদ বলেছেন, সরকারের কাছ থেকে কোনো ভর্তুকি না নিয়ে প্রকল্পের জন্য বরাদ্দ করা টাকা থেকে গত পাঁচ মাসের জ্বালানি তেলের অতিরিক্ত দাম সমন্বয় করা হয়েছে। এই পাঁচ মাসে তাদের লোকসান হয়েছে ৮ হাজার ১৪ কোটি টাকা।

তিনি আরও বলেছেন, আন্তর্জাতিক বাজারের যে দর উল্লেখ করা হচ্ছে তা আসলে অপরিশোধিত তেলের দাম। বিপিসি মাত্র ১৫ লাখ টন অপরিশোধিত তেল আমদানি করে, সেখান থেকে ২০ শতাংশ ডিজেলের জোগান আসে। বাকি ৮০ শতাংশ পরিশোধিত ডিজেল সরাসরি আমদানি করতে হয়, যার বর্তমান দর ১১৮ দশমিক ৭৩ ডলার। এর সঙ্গে প্রিমিয়াম, ভ্যাট-ট্যাক্স ও অন্যান্য কমিশন যোগ করলে যা দাঁড়ায়, তাতে এখনো তাদের লোকসান হচ্ছে।

দেখা যাচ্ছে, সিপিডির সংলাপ ও বিপিসির সংবাদ সম্মেলনে জ্বালানি তেলের দাম নিয়ে দুই ধরনের বক্তব্য উঠে এসেছে। সেক্ষেত্রে আমাদের বক্তব্য হলো, এমন একটি পথ বের করতে হবে যাতে সরকারের লোকসান না হয়, আবার জনগণও হয় দুর্ভোগমুক্ত।

এ লক্ষ্যে জ্বালানি খাতে বিদ্যমান অব্যবস্থা, দুর্নীতি ও অপচয় দূর করতে হবে কঠোরভাবে। জ্বালানি তেলের ভর্তুকি প্রদানের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার নির্ধারণ করতে হবে সঠিকভাবে। দেশে জ্বালানি তেলের পরিশোধন সক্ষমতা বাড়াতে হবে জরুরি ভিত্তিতে। এতে এ খাতে খরচ বাঁচবে অনেকটাই।

হঠাৎ করে জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির ফলে যে অভিঘাত পড়েছে সাধারণ মানুষের ওপর, সেটিও অনুধাবন করতে হবে সরকারকে। দাম নির্ধারণের এ ধরনের প্রক্রিয়া থেকেও সংশ্লিষ্টদের বেরিয়ে আসা প্রয়োজন।

 

Jamuna Electronics

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম