চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
jugantor
চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা
বেহাল দশা কাটানোর পদক্ষেপ নিতে হবে

  সম্পাদকীয়  

১৫ মার্চ ২০২৩, ০০:০০:০০  |  প্রিন্ট সংস্করণ

দেশে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনারও বেহাল দশা। এক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতিও লক্ষ করা যাচ্ছে না। প্রচুর অর্থ বরাদ্দ করা না হলে দেশে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা সম্ভব নয়।

সারা দেশে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি থাকলেও মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উদাসীনতা প্রদর্শন করা অনুচিত। কারণ এক্ষেত্রে উদাসীন হলে দেশবাসীর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে।

জানা যায়, হাসপাতালে উৎপাদিত বর্জ্যরে ৮০ শতাংশ সাধারণ এবং ২০ শতাংশ ক্ষতিকারক। তবে ব্যবস্থাপনা ত্রুটির কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সবই ক্ষতিকারক বর্জ্যে পরিণত হচ্ছে, যা থেকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগ ছড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চিকিৎসা বর্জ্যরে সঙ্গে যেসব রাসায়নিক পদার্থ ও হেভি মেটাল থাকে, তা থেকে অসংক্রামক রোগও ছড়ায়।

এমনকি অবহেলার কারণে এক্ষেত্রে ক্যানসারের মতো রোগ হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। দেশের চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গাইডলাইন অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ বর্জ্যকে ১১ শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। বর্জ্যরে ধরন অনুযায়ী তা সংরক্ষণের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে।

রোগীর বিছানার পাশের পর্দার স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম কীভাবে পরিষ্কার করতে হবে তারও নীতিমালা রয়েছে।

সরেজমিন একাধিক সরকারি হাসপাতাল ঘুরে এসব ক্ষেত্রে হতাশাজনক চিত্র দেখা গেছে। এক গবেষণা থেকে জানা যায়, বর্জ্য বহনকারীদের উল্লেখযোগ্য অংশের রক্তে হেপাটাইটিস-বি শনাক্ত হয়েছে; তাদের বেশিরভাগই জানেন না তারা রোগটিতে আক্রান্ত।

সম্প্রতি প্রকাশিত ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশের বহু হাসপাতালে বর্জ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেই; বহু হাসপাতালে নেই বর্জ্য শোধনাগার।

টিআইবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল, হাসপাতালের কর্মীদের একাংশ মেডিকেল বর্জ্য নষ্ট বা ধ্বংস না করে সংক্রমিত অবস্থাতেই ভাঙারি দোকান ও রিসাইক্লিং কারখানায় বিক্রি করে দেয়।

টিআইবির হিসাব অনুযায়ী, বহু বর্জ্যকর্মী নিয়োগ পেয়েছেন দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে। হতাশার বিষয় হলো, বহু বর্জ্যকর্মীর প্রশিক্ষণ নেই; বহু বর্জ্যকর্মী নিজের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য জানেন না।

চিকিৎসা বর্জ্য পরিবেশ বিপর্যয়েরও বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর মেডিকেল বর্জ্য যত্রতত্র রাখা হলেও এসব কি দেখার কেউ নেই? দেশে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বহু অবৈধ ক্লিনিক-হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

এসব প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার নামে মানুষ প্রতিনিয়ত ভয়াবহ প্রতারণার শিকার হচ্ছে। কাজেই এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান অব্যাহত না থাকলে এ খাতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকেই যায়।

চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা

বেহাল দশা কাটানোর পদক্ষেপ নিতে হবে
 সম্পাদকীয় 
১৫ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

দেশে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে ওঠেনি। চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনারও বেহাল দশা। এক্ষেত্রে কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতিও লক্ষ করা যাচ্ছে না। প্রচুর অর্থ বরাদ্দ করা না হলে দেশে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা সম্ভব নয়।

সারা দেশে আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় ত্রুটি থাকলেও মেডিকেল বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় উদাসীনতা প্রদর্শন করা অনুচিত। কারণ এক্ষেত্রে উদাসীন হলে দেশবাসীর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়বে।

জানা যায়, হাসপাতালে উৎপাদিত বর্জ্যরে ৮০ শতাংশ সাধারণ এবং ২০ শতাংশ ক্ষতিকারক। তবে ব্যবস্থাপনা ত্রুটির কারণে অধিকাংশ ক্ষেত্রে সবই ক্ষতিকারক বর্জ্যে পরিণত হচ্ছে, যা থেকে বিভিন্ন ধরনের সংক্রামক রোগ ছড়াচ্ছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, চিকিৎসা বর্জ্যরে সঙ্গে যেসব রাসায়নিক পদার্থ ও হেভি মেটাল থাকে, তা থেকে অসংক্রামক রোগও ছড়ায়।

এমনকি অবহেলার কারণে এক্ষেত্রে ক্যানসারের মতো রোগ হওয়ার আশঙ্কাও রয়েছে। দেশের চিকিৎসা বর্জ্য ব্যবস্থাপনা গাইডলাইন অনুযায়ী স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ বর্জ্যকে ১১ শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। বর্জ্যরে ধরন অনুযায়ী তা সংরক্ষণের জন্য সুনির্দিষ্ট নীতিমালা রয়েছে।

রোগীর বিছানার পাশের পর্দার স্ট্যান্ড ও অন্যান্য সরঞ্জাম কীভাবে পরিষ্কার করতে হবে তারও নীতিমালা রয়েছে।

সরেজমিন একাধিক সরকারি হাসপাতাল ঘুরে এসব ক্ষেত্রে হতাশাজনক চিত্র দেখা গেছে। এক গবেষণা থেকে জানা যায়, বর্জ্য বহনকারীদের উল্লেখযোগ্য অংশের রক্তে হেপাটাইটিস-বি শনাক্ত হয়েছে; তাদের বেশিরভাগই জানেন না তারা রোগটিতে আক্রান্ত।

সম্প্রতি প্রকাশিত ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, দেশের বহু হাসপাতালে বর্জ্য সংরক্ষণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেই; বহু হাসপাতালে নেই বর্জ্য শোধনাগার।

টিআইবির প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছিল, হাসপাতালের কর্মীদের একাংশ মেডিকেল বর্জ্য নষ্ট বা ধ্বংস না করে সংক্রমিত অবস্থাতেই ভাঙারি দোকান ও রিসাইক্লিং কারখানায় বিক্রি করে দেয়।

টিআইবির হিসাব অনুযায়ী, বহু বর্জ্যকর্মী নিয়োগ পেয়েছেন দুর্নীতি ও অনিয়মের মাধ্যমে। হতাশার বিষয় হলো, বহু বর্জ্যকর্মীর প্রশিক্ষণ নেই; বহু বর্জ্যকর্মী নিজের দায়িত্বের অন্তর্ভুক্ত গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য জানেন না।

চিকিৎসা বর্জ্য পরিবেশ বিপর্যয়েরও বড় কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর মেডিকেল বর্জ্য যত্রতত্র রাখা হলেও এসব কি দেখার কেউ নেই? দেশে কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে বহু অবৈধ ক্লিনিক-হাসপাতাল-ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

এসব প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসার নামে মানুষ প্রতিনিয়ত ভয়াবহ প্রতারণার শিকার হচ্ছে। কাজেই এসব অবৈধ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে জোরালো অভিযান অব্যাহত না থাকলে এ খাতে বড় ধরনের বিপর্যয়ের আশঙ্কা থেকেই যায়।

 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন