Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

অর্থনীতির অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা

সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে কাটিয়ে ওঠা সম্ভব

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ২৯ মার্চ ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

অর্থনীতির অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা

দেশে বিদ্যমান অর্থনৈতিক সংকটের কারণ শুধু বৈশ্বিক নয়, অভ্যন্তরীণ দুর্বলতাও। বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বাজেট প্রস্তাব নিয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

এ প্রসঙ্গে বলা হয়েছে, দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের অব্যবস্থাপনার দায় নিতে হচ্ছে জনগণকে। এসব খাতের অব্যবস্থাপনা, অদক্ষতা ও প্রক্রিয়াগত দুর্বলতার কারণে ভর্তুকি বাড়ছে। এসব খাতে অতিরিক্ত ক্যাপাসিটির জন্য যে বাড়তি চার্জ দিতে হচ্ছে, এর দায় ভোক্তার ঘাড়ে চাপানো মোটেই গ্রহণযোগ্য নয়।

সিপিডির মতে, এই ক্যাপাসিটি চার্জের মতো কার্যক্রম থেকে সরকারকে বের হয়ে আসতে হবে। আগামী দিনে নতুন প্রকল্প নেওয়া এবং পুরোনো প্রকল্প নবায়নের ক্ষেত্রে ‘নো ইলেকট্রিসিটি নো পে’-এ ধরনের পদক্ষেপ নেওয়া হলে ভর্তুকির দায় থেকে বিদ্যুৎ খাত বের হয়ে আসতে পারবে বলে মনে করে প্রতিষ্ঠানটি।

বস্তুত দেশে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতের এসব দুর্বলতার কথা অর্থনীতিবিদরা দীর্ঘদিন ধরেই বলে আসছেন। আর এ খাতের সমস্যা দূর হলে তা যে দেশের অর্থনৈতিক সংকট লাঘবে বড় অবদান রাখবে, তা বলাই বাহুল্য।

দেশের অর্থনীতিতে আরও কিছু দুর্বলতা রয়েছে, যার সঙ্গে বৈশ্বিক সংকটের কোনো সম্পর্ক নেই। বরং সম্পর্ক রয়েছে দেশের ব্যাংকব্যবস্থার। যেমন: মাত্রাতিরিক্ত খেলাপি ঋণ ব্যাংকগুলোর মূলধন ঘাটতির অন্যতম কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। খেলাপি ঋণ দেশের সামগ্রিক অর্থনীতিতেই ঝুঁকি তৈরি করেছে।

মাত্রাতিরিক্ত খেলাপির প্রভাব পড়ছে ঋণ ব্যবস্থাপনায়। এ কারণে এগোতে পারছেন না প্রকৃত উদ্যোক্তারা। ফলে বাড়ছে না বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান। খেলাপি ঋণের লাগাম টানতে না পারা নীতিনির্ধারকদের একটি বড় দুর্বলতা সন্দেহ নেই। অর্থনীতির আরেকটি দুর্বল দিক হলো, দেশ থেকে বিপুল অঙ্কের অর্থ পাচার হয়ে যাচ্ছে; কিন্তু তা রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না। এসব কারণে ব্যাংকগুলোর অবস্থা দিনদিন খারাপ হচ্ছে। এ থেকে উত্তরণে ব্যাংক কমিশন গঠন করা প্রয়োজন বলে মনে করে সিপিডি।

এছাড়া অর্থনীতির অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা কাটাতে আরও কিছু সুপারিশ করেছে প্রতিষ্ঠানটি। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো-বিদ্যুৎ ও জ্বালানির ভর্তুকি তুলে বাজারের ওপর এসবের মূল্য নির্ধারণের বিষয়টি ছেড়ে দেওয়া, মাসে একবার মূল্য পর্যালোচনা করা, গ্যাস উত্তোলনে বিনিয়োগ বাড়ানো,

শক্তিশালী রপ্তানি খাতে ভর্তুকি বন্ধ এবং সম্ভাবনাময় খাতে ভর্তুকি প্রদান প্রভৃতি। বৈশ্বিক সংকট আমরা নিরসন করতে পারব না; কিন্তু সঠিক পদক্ষেপের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ দুর্বলতা কাটিয়ে ওঠা সম্ভব। আমাদের নীতিনির্ধারকরা সেদিকে গুরুত্ব দেবেন-এটাই কাম্য।

 

অর্থনীতি

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম