ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা
জনবল ও সরঞ্জাম সংকট দূর করুন
সম্পাদকীয়
২৫ মে ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও দুর্বল অবকাঠামোর কারণে রাজধানীসহ সারা দেশের বহু স্থাপনা মারাত্মক অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে।
এ প্রেক্ষাপটে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সার্বিক সামর্থ্য বাড়ানো জরুরি। জানা যায়, ঝুঁকির তুলনায় দেশে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে জনবল ও সরঞ্জাম ঘাটতি রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতি দশকেই সংস্থাটির সক্ষমতা প্রায় দ্বিগুণ হারে বাড়লেও একই সঙ্গে দেশে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ইমারত ও জনসংখ্যা।
ফলে ঝুঁকির তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা। সারা দেশের স্টেশনগুলোয় এখনো পর্যাপ্ত জনবল ও সরঞ্জাম দিতে পারেনি সংস্থাটি; প্রত্যাশিত বিশ্বমানের প্রশিক্ষণও পাননি অধিকাংশ কর্মী। বছরের পর বছর মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে নিজস্ব কৌশল কাজে লাগিয়ে অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজ পরিচালনা করছেন এ সংস্থার সদস্যরা। এভাবে কাজ করতে গিয়ে অনেকের মৃত্যুও হয়েছে। এমন বাস্তবতায় সারা দেশের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
দেশে বর্তমানে ন্যূনতম ৭৩৫টি ফায়ার স্টেশন প্রয়োজন এবং এসব স্টেশনের বিপরীতে জনবল প্রয়োজন ৩১ হাজারেরও বেশি। বর্তমানে ফায়ার স্টেশন আছে মাত্র ৪৯৫টি। এর বিপরীতে জনবল আছে মাত্র ১৪ হাজার ৪৬৮ জন। চালু থাকা স্টেশনেই জনবল থাকার কথা ১৬ হাজার ২৩১ জন। অর্থাৎ ঘাটতি আছে ১ হাজার ৭৫৭ জন। দেশে বিদ্যমান ফায়ার স্টেশনগুলোয় অগ্নিনির্বাপণের জন্য বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম থাকার কথা ২৮ হাজার ২২৩টি। অথচ সব মিলে সরঞ্জাম রয়েছে ১৬ হাজার ৭৬৯টি। অনেক সরঞ্জাম ইতোমধ্যে অকেজো হয়ে গেছে। বর্তমানে অনেক স্টেশনেই সরঞ্জামের মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এ ঘাটতি বাড়ছে। এছাড়া রয়েছে প্রশিক্ষণ ঘাটতিও। এসব সমস্যা ও ঘাটতি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
দেশে বিদ্যমান ফায়ার স্টেশনের মধ্যে ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত মাত্র ৯২টি। ‘এ’ শ্রেণির তুলনায় ‘বি’ ও ‘সি’ শ্রেণিভুক্ত ফায়ার স্টেশনের সংখ্যা বেশি। কাজেই ‘বি’ ও ‘সি’ শ্রেণিভুক্ত ফায়ার স্টেশগুলোকে পর্যায়ক্রমে ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত করার পদক্ষেপ নিতে হবে। ফায়ার স্টেশনগুলো এখনো সম্পূর্ণভাবে নীতিমালা অনুযায়ী গড়ে ওঠেনি। ফায়ার সার্ভিস বর্তমানে প্রয়োজনের তুলনায় পাঁচগুণ কম জনবল দিয়ে চলছে। কাজেই জনবল ও সরঞ্জাম সংকট দূর করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। উন্নত দেশগুলোয় লোকসংখ্যার অনুপাতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী সংখ্যা ঠিক করা হয়। যেহেতু আমাদের দেশে ঝুঁকির তুলনায় ফায়ার স্টেশন কম, সেহেতু ফায়ার সার্ভিসের সার্বিক সক্ষমতা বাড়াতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা
জনবল ও সরঞ্জাম সংকট দূর করুন
অপরিকল্পিত নগরায়ণ ও দুর্বল অবকাঠামোর কারণে রাজধানীসহ সারা দেশের বহু স্থাপনা মারাত্মক অগ্নিঝুঁকিতে রয়েছে।
এ প্রেক্ষাপটে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের সার্বিক সামর্থ্য বাড়ানো জরুরি। জানা যায়, ঝুঁকির তুলনায় দেশে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সে জনবল ও সরঞ্জাম ঘাটতি রয়েছে। প্রতিষ্ঠার পর থেকে প্রতি দশকেই সংস্থাটির সক্ষমতা প্রায় দ্বিগুণ হারে বাড়লেও একই সঙ্গে দেশে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে ইমারত ও জনসংখ্যা।
ফলে ঝুঁকির তুলনায় পিছিয়ে রয়েছে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা। সারা দেশের স্টেশনগুলোয় এখনো পর্যাপ্ত জনবল ও সরঞ্জাম দিতে পারেনি সংস্থাটি; প্রত্যাশিত বিশ্বমানের প্রশিক্ষণও পাননি অধিকাংশ কর্মী। বছরের পর বছর মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে নিজস্ব কৌশল কাজে লাগিয়ে অগ্নিনির্বাপণ ও উদ্ধারকাজ পরিচালনা করছেন এ সংস্থার সদস্যরা। এভাবে কাজ করতে গিয়ে অনেকের মৃত্যুও হয়েছে। এমন বাস্তবতায় সারা দেশের অগ্নিনিরাপত্তা ব্যবস্থা ঢেলে সাজানোর পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
দেশে বর্তমানে ন্যূনতম ৭৩৫টি ফায়ার স্টেশন প্রয়োজন এবং এসব স্টেশনের বিপরীতে জনবল প্রয়োজন ৩১ হাজারেরও বেশি। বর্তমানে ফায়ার স্টেশন আছে মাত্র ৪৯৫টি। এর বিপরীতে জনবল আছে মাত্র ১৪ হাজার ৪৬৮ জন। চালু থাকা স্টেশনেই জনবল থাকার কথা ১৬ হাজার ২৩১ জন। অর্থাৎ ঘাটতি আছে ১ হাজার ৭৫৭ জন। দেশে বিদ্যমান ফায়ার স্টেশনগুলোয় অগ্নিনির্বাপণের জন্য বিভিন্ন ধরনের সরঞ্জাম থাকার কথা ২৮ হাজার ২২৩টি। অথচ সব মিলে সরঞ্জাম রয়েছে ১৬ হাজার ৭৬৯টি। অনেক সরঞ্জাম ইতোমধ্যে অকেজো হয়ে গেছে। বর্তমানে অনেক স্টেশনেই সরঞ্জামের মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে এ ঘাটতি বাড়ছে। এছাড়া রয়েছে প্রশিক্ষণ ঘাটতিও। এসব সমস্যা ও ঘাটতি মোকাবিলায় দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।
দেশে বিদ্যমান ফায়ার স্টেশনের মধ্যে ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত মাত্র ৯২টি। ‘এ’ শ্রেণির তুলনায় ‘বি’ ও ‘সি’ শ্রেণিভুক্ত ফায়ার স্টেশনের সংখ্যা বেশি। কাজেই ‘বি’ ও ‘সি’ শ্রেণিভুক্ত ফায়ার স্টেশগুলোকে পর্যায়ক্রমে ‘এ’ শ্রেণিভুক্ত করার পদক্ষেপ নিতে হবে। ফায়ার স্টেশনগুলো এখনো সম্পূর্ণভাবে নীতিমালা অনুযায়ী গড়ে ওঠেনি। ফায়ার সার্ভিস বর্তমানে প্রয়োজনের তুলনায় পাঁচগুণ কম জনবল দিয়ে চলছে। কাজেই জনবল ও সরঞ্জাম সংকট দূর করতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে। উন্নত দেশগুলোয় লোকসংখ্যার অনুপাতে ফায়ার সার্ভিসের কর্মী সংখ্যা ঠিক করা হয়। যেহেতু আমাদের দেশে ঝুঁকির তুলনায় ফায়ার স্টেশন কম, সেহেতু ফায়ার সার্ভিসের সার্বিক সক্ষমতা বাড়াতে দ্রুত পদক্ষেপ নিতে হবে।