দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা: এডিস নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ আমলে নিন
অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। গত আট মাসে এ রোগে বিপুলসংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে মৃত্যু ছাড়িয়েছে ৭০০।
বস্তুত কর্তৃপক্ষের দায়সারা কার্যক্রমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। দুর্বল জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় ডেঙ্গুতে প্রাণহানি বাড়ছে। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে মানুষের আর্থিক ক্ষতি ছাড়াও মানসিক চাপ বাড়ছে। এতে দেশের মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন। দেশে প্রায় দুই যুগ ধরে ডেঙ্গু চোখ রাঙাচ্ছে। প্রশ্ন হলো, বিষয়টি নিয়ে যাদের ভাবার কথা, তারা কী করছেন?
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ডেঙ্গুসহ যে কোনো রোগের চিকিৎসা নেওয়া দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। সরকারি হাসপাতালে চাহিদা অনুযায়ী শয্যা, চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে না পেরে অনেক ডেঙ্গু রোগী বেসরকারি হাসপাতালে ছুটছেন। সেখানে ব্যয়বহুল চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়ার সহজ উপায় হলো কার্যকরভাবে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা। আর এ মুহূর্তে করণীয় হলো, ডেঙ্গু আক্রান্ত সাধারণ রোগীরা যাতে সরকারি হাসপাতালে সব ধরনের সেবা পেতে পারেন, তা নিশ্চিত করা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের নেওয়া পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়, এক্ষেত্রে বহু ত্রুটিও রয়েছে। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।
অনুকূল আবহাওয়া, জনঘনত্ব ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। গবেষকদের মতে, আগামী এক-দেড় মাস পরিস্থিতি খারাপ থাকার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। কলকাতাবাসী ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সফল হলেও আমরা তা পারিনি। বিষয়টি দুঃখজনক। দেশে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ স্বল্পতার বিষয়টি আলোচনায় আসে। দুঃখজনক হলো, বরাদ্দকৃত অর্থের সদ্ব্যবহারে কর্তৃপক্ষের জোরালো তৎপরতা দৃশ্যমান নয়; বরং গণমাধ্যমে প্রকশিত তথ্য থেকে কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমে দায়সারা মনোভাবই পরিলক্ষিত হয়। দুর্বল জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার কারণে বছরব্যাপী মানুষকে কতভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তা বারবার আলোচনায় আসে।
জলবায়ু পরিবর্তন, অপরিকল্পিত নগরায়ণসহ বিভিন্ন কারণে এডিসের উৎপাত বেড়েছে। আরও জানা যায়, এডিস মশা দেশের প্রতিকূল জলবায়ুর সঙ্গে টিকে থাকার সক্ষমতাও অর্জন করতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এডিসের উৎপাত শুধু বর্ষাকালে নয়, বছরজুড়েই থাকবে। কাজেই ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে সারা বছর মশক নিধন ও অন্যান্য কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। যেভাবেই হোক ডেঙ্গুর উৎস পুরোপুরি নির্মূল করতে হবে। মশক নিধনে কী করণীয় তা দেশবাসীর মনে ভালোভাবে গেঁথে দিতে হবে এবং তাদের দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
দুর্বল স্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনা: এডিস নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞ পরামর্শ আমলে নিন
সম্পাদকীয়
১০ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
অতীতের সব রেকর্ড ভেঙে এবার ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যুর নতুন রেকর্ড তৈরি হয়েছে। গত আট মাসে এ রোগে বিপুলসংখ্যক মানুষ আক্রান্ত হয়েছেন। ইতোমধ্যে মৃত্যু ছাড়িয়েছে ৭০০।
বস্তুত কর্তৃপক্ষের দায়সারা কার্যক্রমে ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। দুর্বল জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনায় ডেঙ্গুতে প্রাণহানি বাড়ছে। চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে মানুষের আর্থিক ক্ষতি ছাড়াও মানসিক চাপ বাড়ছে। এতে দেশের মানুষ বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছেন। দেশে প্রায় দুই যুগ ধরে ডেঙ্গু চোখ রাঙাচ্ছে। প্রশ্ন হলো, বিষয়টি নিয়ে যাদের ভাবার কথা, তারা কী করছেন?
দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে ডেঙ্গুসহ যে কোনো রোগের চিকিৎসা নেওয়া দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষের জন্য কঠিন হয়ে পড়ছে। সরকারি হাসপাতালে চাহিদা অনুযায়ী শয্যা, চিকিৎসা ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা করাতে না পেরে অনেক ডেঙ্গু রোগী বেসরকারি হাসপাতালে ছুটছেন। সেখানে ব্যয়বহুল চিকিৎসা ব্যয় মেটাতে হিমশিম খাচ্ছেন তারা। এ পরিস্থিতি থেকে মুক্তি পাওয়ার সহজ উপায় হলো কার্যকরভাবে এডিস মশা নিয়ন্ত্রণ করা। আর এ মুহূর্তে করণীয় হলো, ডেঙ্গু আক্রান্ত সাধারণ রোগীরা যাতে সরকারি হাসপাতালে সব ধরনের সেবা পেতে পারেন, তা নিশ্চিত করা। বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে কর্তৃপক্ষের নেওয়া পদক্ষেপ যথেষ্ট নয়, এক্ষেত্রে বহু ত্রুটিও রয়েছে। এডিস মশা নিয়ন্ত্রণে বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ অনুযায়ী পদক্ষেপ নিতে হবে।
অনুকূল আবহাওয়া, জনঘনত্ব ও জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে দেশে ডেঙ্গু পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। গবেষকদের মতে, আগামী এক-দেড় মাস পরিস্থিতি খারাপ থাকার আশঙ্কা রয়েছে। এ অবস্থায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। কলকাতাবাসী ডেঙ্গু নিয়ন্ত্রণে সফল হলেও আমরা তা পারিনি। বিষয়টি দুঃখজনক। দেশে স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ স্বল্পতার বিষয়টি আলোচনায় আসে। দুঃখজনক হলো, বরাদ্দকৃত অর্থের সদ্ব্যবহারে কর্তৃপক্ষের জোরালো তৎপরতা দৃশ্যমান নয়; বরং গণমাধ্যমে প্রকশিত তথ্য থেকে কর্তৃপক্ষের কার্যক্রমে দায়সারা মনোভাবই পরিলক্ষিত হয়। দুর্বল জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার কারণে বছরব্যাপী মানুষকে কতভাবে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে, তা বারবার আলোচনায় আসে।
জলবায়ু পরিবর্তন, অপরিকল্পিত নগরায়ণসহ বিভিন্ন কারণে এডিসের উৎপাত বেড়েছে। আরও জানা যায়, এডিস মশা দেশের প্রতিকূল জলবায়ুর সঙ্গে টিকে থাকার সক্ষমতাও অর্জন করতে শুরু করেছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এডিসের উৎপাত শুধু বর্ষাকালে নয়, বছরজুড়েই থাকবে। কাজেই ডেঙ্গু থেকে রক্ষা পেতে সারা বছর মশক নিধন ও অন্যান্য কার্যক্রম অব্যাহত রাখতে হবে। যেভাবেই হোক ডেঙ্গুর উৎস পুরোপুরি নির্মূল করতে হবে। মশক নিধনে কী করণীয় তা দেশবাসীর মনে ভালোভাবে গেঁথে দিতে হবে এবং তাদের দায়িত্ব পালনে উদ্বুদ্ধ করতে হবে।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023