স্যালাইন সংকট

 সম্পাদকীয় 
১১ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

গত কয়েক মাসে দেশে ডেঙ্গু রোগী বেড়েছে জ্যামিতিক হারে। এতে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ডেঙ্গু রোগীর কী ধরনের দুর্ভোগ পোহাতে হয়েছে তা গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদনগুলোর দিকে তাকালেই স্পষ্ট হয়। ডেঙ্গু রোগী বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে ডাবের চহিদা বেড়েছে। এ কারণে কয়েক মাস ধরেই ডাব বিক্রি হচ্ছে চড়া দামে। জানা যায়, যশোরে ইনজেক্টেবল স্যালাইন সরবরাহে তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। দেড় মাস ধরে সরকারি, বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা রোগী ও স্বজনরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। সরকারি হাসপাতালে ডেঙ্গু রোগীদের জন্য স্যালাইন সরবরাহ নিশ্চিত করা হলেও বেসরকারি হাসপাতালের ডেঙ্গু রোগীরা তা ঠিকমতো পাচ্ছেন না। রোগীর স্বজনরা জানান, খোলাবাজারে স্যালাইন বিক্রি হচ্ছে অতিরিক্ত দামে। ফার্মেসি-সংশ্লিষ্টদের দাবি, চাহিদার তুলনায় স্যালাইনের সরবরাহ কম। সংকটের অজুহাতে অসাধু ব্যবসায়ীরা কয়েকগুণ দামে স্যালাইন বিক্রি করছে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে মুমূর্ষু ও সার্জারির রোগীরা।

কেবল যশোর নয়, দেশের বিভিন্ন এলাকায়ই ইনজেক্টেবল স্যালাইন সরবরাহে তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে। জানা যায়, কৃত্রিম স্যালাইন সংকট সৃষ্টি করে সংঘবদ্ধ চক্র ক্রেতার কাছ থেকে হাতিয়ে নিচ্ছে অতিরিক্ত অর্থ। সম্প্রতি স্যালাইনের এ সংকটের কারণে দেশের বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসাসেবায় কী নাজুক পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে তাও আলোচিত। প্রশ্ন হলো, এসব বিষয়ে যাদের তদারকি করার কথা তারা কী করছেন? ভুক্তভোগী রোগী ও স্বজনদের অভিযোগ, স্যালাইন সংকটের পেছনে রয়েছে সংঘবদ্ধ একটি চক্রের কারসাজি। এমন পরিস্থিতিতে সাধারণ মানুষ কতটা বিপাকে পড়েছে তা সহজেই অনুমেয়। কারণ আমরা জানি দেশের বিপুলসংখ্যক মানুষ নিতপণ্যের চড়া দামে এমনিতেই দিশেহারা। অনেক সময় চিকিৎসকের কাছে যেতে পারেন না।

দুঃখজনক হলো অসাধু ব্যবসায়ীদের কারসাজির কারণে সীমিত ও স্বল্প-আয়ের মানুষের দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে; তারা রীতিমতো দিশেহারা। এ অবস্থায় নিম্ন-আয়ের কোনো পরিবারের সদস্য ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হলে তারা কতটা উৎকণ্ঠিত হয় তা সহজেই অনুময়। ভারত থেকে স্যালাইন আমদানির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। তা দ্রুত দেশে পৌঁছানোর কথা রয়েছে। এটি ইতিবাচক। স্যালাইন উৎপাদন পর্যায় থেকে ভোক্তার হাতে পৌঁছানোর আগ পর্যন্ত প্রতিটি পর্যায়ে জোরালো তদারকি অব্যাহত রাখতে হবে। কারসাজি করে কেউ যাতে পার পেতে না পারে, তা নিশ্চিত করতে হবে। এডিস নিয়ন্ত্রণে জোরালো পদক্ষেপ নিতে হবে। জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থাপনার ত্রুটি দূর করার জন্যও নিতে হবে যথাযথ পদক্ষেপ।

 

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন