দুর্নীতি বৃদ্ধির স্বীকারোক্তি: প্রতিকারে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে
দেশে দুর্নীতির মাত্রা বেড়েছে। একদিকে ডলার সংকটের কারণ দেখিয়ে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি, অন্যদিকে নানা খাতে সীমাহীন দুর্নীতি-উভয় দিকের জাঁতাকলে পড়ে নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির যখন ত্রাহি অবস্থা, তখন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানও স্বীকার করেছেন, দেশে অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতির মাত্রা আগের তুলনায় বেড়েছে। সোমবার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ, রোববার জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি বিল-২০২৩ পাশের আলোচনায় বিরোধী দলের সংসদ-সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে তিনি একথা বলেন। এর আগে বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে গণফোরাম ও জাতীয় পার্টির একাধিক সদস্য বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ আনেন।
জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘একটি বিষয়ে সবার সঙ্গে আমিও একমত। সারা দেশের সর্বত্র, অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতির মাত্রা আগের তুলনায় আনুপাতিক হারে বেড়েছে।’ পরিকল্পনামন্ত্রীকে সাধুবাদ যে, মিথ্যার চাদর দিয়ে বাস্তব পরিস্থিতিকে তিনি আড়াল করতে চাননি। তবে সীমাহীনই হোক কিংবা আনুপাতিক, লাগামহীন দুর্নীতির ঘোড়াকে বাগে আনবে কে? সরকারকেই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে। এর আগে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের মতো দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু জনগণ দুর্নীতি কিংবা সিন্ডিকেটের করাল থাবা থেকে রেহাই পায়নি।
যে দেশ সাংবিধানিকভাবে ‘জনগণই সব ক্ষমতার উৎস’ নীতিতে বিশ্বাসী, সেখানে জনগণের স্বার্থেই অনিয়ম ও দুর্নীতির রাশ টানা জরুরি। তা না হলে মূল্যস্ফীতি আর দুর্নীতির বিরূপ প্রভাব জনসাধারণের জীবনযাত্রাকে খাদের কিনারায় নিয়ে ফেলবে। রোববার জাতীয় সংসদে পরিকল্পনামন্ত্রী দুর্নীতিকে একটা জাতীয় সমস্যা হিসাবেও উল্লেখ করেছেন।
প্রতিকার হিসাবে তিনি আইনকানুন পাশ করে, বর্তমান প্রযুক্তি ব্যবহার করে, জনমত তৈরি করে এবং জনগণের কাছে স্বচ্ছতা তুলে ধরে এর বিরুদ্ধে কাজ করার উপায়ও বাতলে দিয়েছেন। আমরা আশা করব, এসব শুধু কথার কথা নয়, আদতেই দুর্নীতি রোধে এই উপায়গুলো নিয়ে সরকার কাজ করবে। অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প, মেগা প্রকল্পের নামে অর্থ লুটের পথ বন্ধ করবে। রাজনীতিক, আমলা, ব্যবসায়ীসহ সুবিধাভোগী যেসব শ্রেণি অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থের পাহাড় গড়েছেন, সম্পদ পাচার করে বিদেশে বাড়ি-গাড়ি কিনেছেন, তাদের চিহ্নিত করা হবে। সেই সঙ্গে পাচার হওয়া লুটপাটের অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।
দুর্নীতি বৃদ্ধির স্বীকারোক্তি: প্রতিকারে সরকারকেই উদ্যোগ নিতে হবে
সম্পাদকীয়
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
দেশে দুর্নীতির মাত্রা বেড়েছে। একদিকে ডলার সংকটের কারণ দেখিয়ে ক্রমবর্ধমান মূল্যস্ফীতি, অন্যদিকে নানা খাতে সীমাহীন দুর্নীতি-উভয় দিকের জাঁতাকলে পড়ে নিম্ন ও নিম্নমধ্যবিত্ত শ্রেণির যখন ত্রাহি অবস্থা, তখন পরিকল্পনামন্ত্রী এমএ মান্নানও স্বীকার করেছেন, দেশে অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতির মাত্রা আগের তুলনায় বেড়েছে। সোমবার যুগান্তরের খবরে প্রকাশ, রোববার জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ পাবলিক প্রকিউরমেন্ট অথরিটি বিল-২০২৩ পাশের আলোচনায় বিরোধী দলের সংসদ-সদস্যদের বক্তব্যের জবাবে তিনি একথা বলেন। এর আগে বিলের আলোচনায় অংশ নিয়ে গণফোরাম ও জাতীয় পার্টির একাধিক সদস্য বিভিন্ন প্রকল্পে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ আনেন।
জবাবে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘একটি বিষয়ে সবার সঙ্গে আমিও একমত। সারা দেশের সর্বত্র, অনেক ক্ষেত্রে দুর্নীতির মাত্রা আগের তুলনায় আনুপাতিক হারে বেড়েছে।’ পরিকল্পনামন্ত্রীকে সাধুবাদ যে, মিথ্যার চাদর দিয়ে বাস্তব পরিস্থিতিকে তিনি আড়াল করতে চাননি। তবে সীমাহীনই হোক কিংবা আনুপাতিক, লাগামহীন দুর্নীতির ঘোড়াকে বাগে আনবে কে? সরকারকেই এ ব্যাপারে পদক্ষেপ নিতে হবে। এর আগে শিল্প প্রতিমন্ত্রী কামাল আহমেদ মজুমদার, স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক, বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি, কৃষিমন্ত্রী ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের মতো দায়িত্বশীল ব্যক্তিরা বিভিন্ন সময়ে এ বিষয়ে কথা বলেছেন। কিন্তু জনগণ দুর্নীতি কিংবা সিন্ডিকেটের করাল থাবা থেকে রেহাই পায়নি।
যে দেশ সাংবিধানিকভাবে ‘জনগণই সব ক্ষমতার উৎস’ নীতিতে বিশ্বাসী, সেখানে জনগণের স্বার্থেই অনিয়ম ও দুর্নীতির রাশ টানা জরুরি। তা না হলে মূল্যস্ফীতি আর দুর্নীতির বিরূপ প্রভাব জনসাধারণের জীবনযাত্রাকে খাদের কিনারায় নিয়ে ফেলবে। রোববার জাতীয় সংসদে পরিকল্পনামন্ত্রী দুর্নীতিকে একটা জাতীয় সমস্যা হিসাবেও উল্লেখ করেছেন।
প্রতিকার হিসাবে তিনি আইনকানুন পাশ করে, বর্তমান প্রযুক্তি ব্যবহার করে, জনমত তৈরি করে এবং জনগণের কাছে স্বচ্ছতা তুলে ধরে এর বিরুদ্ধে কাজ করার উপায়ও বাতলে দিয়েছেন। আমরা আশা করব, এসব শুধু কথার কথা নয়, আদতেই দুর্নীতি রোধে এই উপায়গুলো নিয়ে সরকার কাজ করবে। অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প, মেগা প্রকল্পের নামে অর্থ লুটের পথ বন্ধ করবে। রাজনীতিক, আমলা, ব্যবসায়ীসহ সুবিধাভোগী যেসব শ্রেণি অনিয়ম-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্থের পাহাড় গড়েছেন, সম্পদ পাচার করে বিদেশে বাড়ি-গাড়ি কিনেছেন, তাদের চিহ্নিত করা হবে। সেই সঙ্গে পাচার হওয়া লুটপাটের অর্থ দেশে ফিরিয়ে আনতে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নেবে, এটাই প্রত্যাশা।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023