কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্পে দুর্নীতি
জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে
সম্পাদকীয়
প্রকাশ: ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
কৃষি যান্ত্রিকীকরণে খরচ কমে, উৎপাদন বাড়ে। এতে কায়িক শ্রমও কমে আসে। দেশে কৃষি উৎপাদন বাড়লেও উদ্বেগজনক হারে কৃষি শ্রমিক কমেছে। এক জমিতে একাধিক ফসল উৎপাদন করতে চাইলে যন্ত্র ব্যবহারের বিকল্প নেই।
গত ১৫ বছরে দেশে ধান, আলু, সরিষাসহ বিভিন্ন ফসলের উৎপাদন প্রায় তিনগুণ বেড়েছে। কৃষিক্ষেত্রে শ্রমিকের চাহিদা বাড়লেও শ্রমিক পাওয়া যাচ্ছে না। ফসল আহরণে অপচয় কমানো, উৎপাদন বৃদ্ধি, আহরণের সময় বাঁচানো এবং মুনাফা নিশ্চিত করতে সরকার সমন্বিত ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প গ্রহণ করেছে।
এ প্রকল্পের আওতায় ভর্তুকিমূল্যে কৃষকদের ১২ ধরনের ৫১ হাজার ৩০০টি কৃষিযন্ত্র দেওয়ার কথা রয়েছে। ২০২০ থেকে ২০২৫ সাল মেয়াদে কৃষি যান্ত্রিকীকরণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে; বাস্তবায়নে ব্যয় ধরা হয়েছে ৩ হাজার ২০ কোটি টাকা। দুঃখজনক হলো, শুরু থেকেই প্রকল্পটি নিয়ে নানা অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। প্রকল্পটি সম্প্রতি নিবিড় পরিবীক্ষণ করে বাস্তবায়ন, পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। তৃতীয় পক্ষ হিসাবে একটি সংস্থার মাধ্যমে এ প্রকল্প মূল্যায়ন করা হয়। ওই সংস্থার প্রতিবেদনে বলা হয়, আলোচিত প্রকল্প বাস্তবায়নে নানা ধরনের অনিয়মের আশ্রয় নেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি এ প্রকল্পের অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ এসেছে দুর্নীতি দমন কমিশনে (দুদক)। অভিযোগ আমলে নিয়ে তা তদন্তের জন্য দুদক নথি পাঠায় কৃষি মন্ত্রণালয়ে। মন্ত্রণালয় অভিযোগ তদন্তে একটি কমিটি গঠন করেছে। বিড়ম্বনায় পড়া কৃষকদের দাবি, সরকার তাদের ভর্তুকিমূল্যে কৃষিযন্ত্র সরবরাহ করেছে; বিক্রয়োত্তর সেবাও তারা পেতে চান। ভর্তুকিমূল্যে কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহের জন্য ৩৪ কোম্পানিকে নিয়োগ দেওয়া হয়।
কিন্তু কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত সেবা পাচ্ছেন না। সরবরাহকৃত যন্ত্রের ত্রুটি শনাক্ত করে তা মেরামতের বিষয়টি ওয়ারেন্টিতে অন্তর্ভুক্ত আছে। কিন্তু আইএমইডির সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জরিপে অংশ নেওয়া প্রায় ৭৪ শতাংশ কৃষক অভিযোগ করেছেন, ভর্তুকি পাওয়ার যোগ্যদের তালিকায় নাম ওঠাতে তারা অসুবিধায় পড়ছেন। বহু কৃষক বলেছেন, তারা অর্থ দেওয়ার পরও যন্ত্রপাতি পেতে বেগ পেয়েছেন।
অনেক কৃষকের দাবি, তারা নিুমানের সরঞ্জাম পেয়েছেন। এ প্রকল্পের দুর্নীতি চিহ্নিত করতে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত সবার শাস্তি নিশ্চিত করা দরকার। দেশের খাদ্য নিরাপত্তার স্বার্থে কৃষকদের জন্য প্রণোদনা অব্যাহত রাখতে হবে। এক্ষেত্রে যাতে কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতি না হয়, তাও নিশ্চিত করতে হবে।
