Logo
Logo
×

সম্পাদকীয়

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সহিংসতা

নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি প্রয়োজন প্রত্যাবাসনের উদ্যোগ

Icon

সম্পাদকীয়

প্রকাশ: ০৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে সহিংসতা

কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরে অপরাধের প্রবণতা ও সহিংসতা কমছেই না। আধিপত্য বিস্তার ও মাদক ব্যবসাকে কেন্দ্র করে মঙ্গলবার রোহিঙ্গাদের দুই সশস্ত্র গোষ্ঠী আরসা ও আরএসও’র মধ্যে গোলাগুলিতে উখিয়ার তিন আশ্রয়শিবিরের ৪ রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। এ নিয়ে ১৫ দিনে নিহত হলেন ৯ জন।

পুলিশ ও রোহিঙ্গা নেতাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, গত সাড়ে ৮ মাসে রোহিঙ্গা আশ্রয় শিবিরে ৬১টি সংঘর্ষ ও গোলাগুলির ঘটনায় অন্তত ৭৪ জন রোহিঙ্গা নিহত হয়েছেন। বস্তুত কক্সবাজারের রোহিঙ্গা আশ্রয়শিবিরগুলো সন্ত্রাসীদের এক ধরনের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে।

জানা যায়, মাদকের কারবার, দোকানপাট, ব্যবসা-বাণিজ্য ও আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পের ভেতরে-বাইরে অনেক সশস্ত্র সন্ত্রাসী গ্রুপ গড়ে উঠেছে। এতে ক্যাম্পের অভ্যন্তরে প্রায়ই তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গোলাগুলি ও খুনাখুনির ঘটনা ঘটছে।

বস্তুত, নিজ বাসভূমি থেকে বিতাড়িত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী শুরু থেকেই বাংলাদেশের জন্য মূর্তিমান সমস্যা হিসাবে বিরাজ করছে। তাদের আইনশৃঙ্খলাবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণে স্থানীয়রা আতঙ্কের মধ্যে দিনাতিপাত করছেন। দুশ্চিন্তার বিষয় হলো, উত্তরোত্তর সংকটের মাত্রা বাড়লেও রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কোনোরকম অগ্রগতি পরিলক্ষিত হচ্ছে না।

২০১৭ সালে মিয়ানমার সেনাবাহিনীর নির্যাতনের মুখে পালিয়ে আসা রোহিঙ্গাগোষ্ঠীসহ প্রায় ১২ লাখ রোহিঙ্গা বর্তমানে কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফের ৩৩টি ক্যা¤প ও ভাসানচরে অবস্থান করছেন। রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য বাংলাদেশ সরকার বরাবরই জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে দাবি জানিয়ে আসছে।

কিন্তু দীর্ঘ প্রায় সাড়ে ছয় বছরে একজন রোহিঙ্গাকেও মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো সম্ভব হয়নি। ২০১৭ সালের নভেম্বরে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের সঙ্গে বাংলাদেশ চুক্তি স্বাক্ষর করলেও পরবর্তী সময়ে সে প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।

রোহিঙ্গারা নিজ দেশে ফিরে যাক, সেটা চায় না সন্ত্রাসী গোষ্ঠীগুলো। তাই প্রত্যাবাসন নিয়ে আলোচনা শুরু হলেই রোহিঙ্গা শিবিরে বেড়ে যায় সন্ত্রাসী তৎপরতা। মিয়ানমারে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন যাতে বাস্তবায়িত না হয়, সেজন্য বিভিন্ন ক্যাম্পের মাঝি বা নেতাদের টার্গেট করছে আক্রমণকারীরা।

এ কারণে রোহিঙ্গা নেতাদের অনেকে পরিবারের সদস্যদের নিয়ে শিবিরের বাইরে নিরাপদ জায়গায় বাসা ভাড়া করে থাকছেন বলেও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে। রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই তাদের ফিরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা জরুরি।

রোহিঙ্গা

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম