Logo
Logo
×

প্রকৃতি ও জীবন

আগুনরঙা কৃষ্ণচূড়া

Icon

কানিজ কবির

প্রকাশ: ২৬ এপ্রিল ২০১৯, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

‘কৃষ্ণচূড়ার রাঙা মঞ্জুরি কর্ণে-

আমি ভুবন ভুলাতে আসি গন্ধে ও বর্ণে’

কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই মনোমুগ্ধকর গানে আমরা উপলব্ধি করি কৃষ্ণচূড়ার সৌন্দর্য। প্রখর রোদে পোড়া প্রকৃতি যেন নিজেও তার প্রাণ ফিরে পায় কৃষ্ণচূড়া ফুল ফোটার মাঝে। পথচারীর পথচলা কিছুটা হলেও শ্লথ হয় ফুলের দিকে চেয়ে অথবা গাছের নিচে দাঁড়িয়ে। উষ্ণ আবহাওয়ায় দৃষ্টি ও মনকে শান্তির পরশ বুলিয়ে দিতে কৃষ্ণচূড়া ফুলের কোনো জুড়ি নেই। গ্রীষ্মজুড়ে পাতাহীন গাছেও অজস্র ধারায় ফুল ফোটে। প্রকৃতির এই রুক্ষ-শুষ্ক মৌসুমে কৃষ্ণচূড়া আসে মানব মনকে শীতল পরশ বোলাতে, ক্লান্তি দূর করে নব উদ্যমে জাগিয়ে তুলতে।

টকটকে লাল অথবা গাঢ় কমলা লাল ছোপে ভরা কৃষ্ণচূড়া আমাদের মন রাঙিয়ে দেয়। গ্রীষ্মের খরতাপে শরীর মন যখন ক্লান্ত, তখন ক্লান্ত-শ্রান্ত মনকে হঠাৎ বৃষ্টির মতো জুড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে একটি মাত্র গুচ্ছ ফুলের বৃক্ষ- কৃষ্ণচূড়া। কৃষ্ণচূড়া একটি বৃক্ষ জাতীয় উদ্ভিদ যার বৈজ্ঞানিক নাম উবষড়হরী ৎবমরধ. এ গাছ চমৎকার পত্র-পল্লব এবং আগুনলাল ফুলের জন্য প্রসিদ্ধ। এর আদিনিবাস পূর্ব আফ্রিকার মাদাগাস্কারে। উষ্ণ ও শুকনো আবহাওয়া এ ফুলের উপযোগী। হংকং, ক্যারাবিয়ান অঞ্চল, তাইওয়ান, দক্ষিণ চীন, বাংলাদেশ, ভারতসহ আরও অনেক দেশেই কৃষ্ণচূড়ার দেখা মেলে। তবে ফুল ফোটার সময়কাল একই নয়, ভিন্ন ভিন্ন দেশে এটি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে আবির্ভূত হয়। ভিনদেশি হওয়ার পরও কৃষ্ণচূড়া আমাদের দেশি ফুলের মাঝে জায়গা করে নিয়েছে। শাখা পল্লবে ছড়ানো চার পত্রবিশিষ্ট এ ফুল উজ্জ্বল লাল, কমলা বা এদের সংমিশ্রণে হয়। উষ্ণ আবহাওয়ার উপযুক্ত এ বৃক্ষ নিজস্ব সৌন্দর্যে অতুলনীয়। সৌন্দর্য বিলানো ছাড়াও গাছটি গ্রীষ্মকালে ছায়া দিতে বিশেষভাবে পারঙ্গম।

গ্রীষ্মকাল বিশেষ করে বৈশাখ মাস কৃষ্ণচূড়া ফোটার সময়। এ সময় বাংলাদেশের সব জায়গায় থোকায় থোকায় কৃষ্ণচূড়া ফোটে তার নিজস্ব বৈশিষ্ট্য নিয়ে। চন্দ্রিমা উদ্যান, সংসদ ভবনের একাংশ জুড়ে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায়, রমনা পার্ক, বোটানিক্যাল উদ্যান, সোহরাওয়ার্দী উদ্যান, সচিবালয়ের দক্ষিণ পাশ, হাইকোর্ট প্রাঙ্গণ, বিমানবন্দর রাস্তার দু’পাশে। এ ছাড়া দেশের গ্রাম কিংবা শহরে কৃষ্ণচূড়া ফুটতে দেখা যায়।

লেখক : প্রকৃতিবিষয়ক লেখক

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম