সিলেটে শত বছরের দুর্গাবাড়ি
লেখা ও ছবি সুমন্ত গুপ্ত
প্রকাশ: ০৭ অক্টোবর ২০১৯, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
ছোট বেলায় বাবার কাছে শুনেছি দুর্গাবাড়ির কথা। অনেক দিন ধরে শুধু পরিকল্পনাই করছিলাম সিলেটের শতবছরের পুরনো দুর্গাবাড়িতে ঘুরতে যাব কিন্তু নানা কারণে যাওয়া হয়ে উঠছিল না। এবার পরিকল্পনা করেই ফেললাম আমার সব সময়ের ভ্রমণসঙ্গী মাকে নিয়ে বেরিয়ে পরব দেবীদর্শনে। নির্ধারিত সময়ের কিছু পরেই আমরা বের হলাম গন্তব্যপানে। বন্দরবাজার, মিরাবাজার, টিলাগড় পেরিয়ে এগিয়ে চলছি আমরা। কিছু সময় পর পৌঁছলাম শতবর্ষ পুরনো দুর্গাবাড়ির প্রবেশদ্বারে। দুর্গাবাড়ির জন্য এ এলাকার নামই দুর্গাবাড়ি রোড। মূল সড়ক থেকে কিছুটা পথ হেঁটে পৌঁছতে হয় মূল মন্দিরে। শান্ত, নিরিবিলি পরিবেশ, নেই কোনো কোলাহল শুধু সবুজ আর সবুজ। এবার আমাদের সিঁড়ি পেরিয়ে পৌঁছতে হবে মূল মন্দিরে। নগ্ন পায়ে আমরা এগিয়ে চললাম।
মা এক এক করে সিঁড়ি গুনছেন আর পাড়ি দিচ্ছেন। মা গুনে গুনে বললেন, এখানে পঁয়ত্রিশটা সিঁড়ি পাড়ি দিয়েছি আমরা। সিঁড়ি ডিঙিয়ে পৌঁছলাম মূল মন্দিরে। দর্শনার্থীদের বিশ্রামের জন্য আছে বসার স্থান। চারপাশের ধূপ ধূনার গন্ধ এক অন্য রকম পরিবেশের তৈরি করেছে। শেষ পর্যন্ত মাতৃদর্শন হল। পরে এগিয়ে চললাম পাশের শিব মন্দিরে, অসাধারণ কারুকার্যময় শিব মন্দির। অনেকেই এসেছেন দেবীদর্শনে। কেউ কেউ মনের বাসনা পূরণের জন্য মোমবাতি, আগরবাতি জ্বালিয়ে দিচ্ছেন। কথা হচ্ছিল দুর্গাবাড়ির পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত রাজেশ চক্রবর্তীর সঙ্গে। তিনি বললেন, কলকাতার সম্ভ্রান্ত জমিদার ব্রজেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী এ দুর্গাবাড়ি প্রতিষ্ঠা করেন। এ ব্যাপারে ব্রজেন্দ্র নারায়ণ চৌধুরী সম্পাদিত স্মৃতি প্রতীতি নামক বইয়ে উল্লেখ আছে। তিনি সিলেট সরকারি মহিলা কলেজেরও প্রতিষ্ঠাতা।
যাবেন কীভাবে : দুর্গাবাড়ি মন্দির যেতে হলে আপনাকে বাস/ট্রেন করে আসতে হবে সিলেট শহরে। প্রতিদিন ঢাকা থেকে সিলেটের উদ্দেশ্যে বাস/ট্রেন ছাড়ে, ভাড়া পড়বে ৩২০ থেকে ১২০০ টাকা। সিলেট শহরের যে কোনো প্রান্ত থেকে দুর্গাবাড়ি যাব বললেই আপনাকে নিয়ে যাবে শতবছরের পুরনো দুর্গাবাড়িতে। রিকশা/সিএনজি ভাড়া নেবে ৪০ থেকে ১০০ টাকা।
