Logo
Logo
×

ঘরে বাইরে

এবারও ঘরেই নববর্ষ

আসছে বৈশাখ, করোনার এই মহামারিতে লকডাউন শুরু হয়েছে ৫ এপ্রিল থেকে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে সবাই বর্ষবরণ করবে এটাই প্রত্যাশা। বাঙালির প্রাণের উৎসব বর্ষবরণ ঘরোয়াভাবে পালন করলেও অনেকে নতুন পোশাকে নিজেকে রাঙাবেন। লিখেছেন-

Icon

কেয়া আমান

প্রকাশ: ০৫ এপ্রিল ২০২১, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

আর ক’দিন পরই বাঙালির প্রাণের উৎসব পহেলা বৈশাখ। করোনার এ সময়ে বিগত বছরের সুখ-দুঃখ, আনন্দ বেদনার হিসাব চুকে নতুন বছরের নতুন স্বপ্ন আর সম্ভাবনার মঙ্গল কামনায় বৈশাখের প্রথম দিন বর্ষবরণ উৎসব উদযাপন করা হয়। পহেলা বৈশাখে যে উৎসবমুখর পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তার বড় অনুষঙ্গ নতুন পোশাক ও সাজগোজ। কিন্তু এবার করোনা বেড়ে যাওয়ায় গতবারের মতো উৎসবের আমেজ থাকবে না।

তাই বলে উৎসব পালন হবে না এটা বলা ভুল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে ঘরোয়া আয়োজনে এবার বৈশাখ পালন করবে। অনেকে ঘরোয়াভাবে বৈশাখ পালন করতে নতুন পোশাক নিয়েছেন।

এ সময়ে গরমের জন্য সুতি কাপড়ই সবচেয়ে আরামদায়ক। ইদানীং তাঁতের কাপড়ও বৈশাখী ফ্যাশনে প্রাধান্য পাচ্ছে। নকশায় উঠে আসে বাঙালি সংস্কৃতি, ঐতিহ্য, প্রকৃতি।

শাড়িতেই লুকিয়ে থাকে ষোলোআনা বাঙালিয়ানা। বৈশাখী সাজে সুতি শাড়ি ছাড়াও সিল্ক, মসলিন, জামদানি পরতে পারেন। মূলত সাদা ও লালের জমিনে শাড়ির পাড় ও আঁচল সাজানো হয়েছে বিভিন্ন রং, ঐতিহ্যবাহী নকশা ও দেশীয় মোটিভে। ঘিয়া জমিনে মণিপুরি নকশার চিকন লাল পাড়ের শাড়িও রয়েছে পছন্দের তালিকায়। শাড়ির নকশায় পটচিত্র, টেরাকোটা, মুখোশ, জমিদার বাড়ি, ঢোল, তবলা, কলকাসহ বিভিন্ন বাঙালিয়ানা ঐতিহ্য ফুটিয়ে তোলা হয়েছে হ্যান্ডপেইন্ট, হাতের কাজ, ব্লক, স্ক্রিনপেইন্টের মাধ্যমে। এখন নকশা করা ব্লাউজ বেশ চলছে। পহেলা বৈশাখে এবার ব্লক, বাটিক, শিবুরি ও টাইডাই, গামছা চেক ব্লাউজ খুব চলবে। চলবে বড় ফুলেল প্রিন্টের ব্লাউজও। এক রঙের বা প্লেইন পাড়ের শাড়ির সঙ্গে এ ধরনের ব্লাউজ দারুণ ফুটবে।

গরমের শাড়িতে স্বস্তি বোধ না করলে অনায়াসে পরতে পারেন সালোয়ার-কামিজ, কুর্তি, টপস, তাগা কিংবা টিউনিকের সঙ্গে জিন্স, পালাজ্জো, পাটিয়ালি কিংবা স্টাইলিশ যে কোনো প্যান্ট। ভিন্নতা আসবে স্কার্টেও। ট্রাউজার প্যান্ট কিংবা একরঙা স্ট্রাইপের প্যান্টের সঙ্গে বোহিমিয়ান থিমের টিউনিকেও পরিপূর্ণ হবে বৈশাখী সাজ। শখের হাঁড়ি, হাতপাখা, আল্পনাসহ হরেক রকম লোকজ নকশায় বর্ণিল এবার বৈশাখের পোশাকগুলো। ফিউশন কিংবা দেশীয় পোশাকের প্যাটার্নে তেমন কোনো পরিবর্তন হয়নি। বৈশাখী মোটিভ এবং ফেব্রিকই বেশি গুরুত্ব পাচ্ছে পোশাকে।

রঙ বাংলাদেশের কর্ণধার ও ফ্যাশন ডিজাইনার সৌমিক দাস জানান, ‘করোনাকালের নানা সমস্যা, যন্ত্রণা সত্ত্বেও বাঙালি ঠিকই বৈশাখের প্রথম প্রহরে বরণ করে নেবে বছরের প্রথম দিনটিকে। এবারের বৈশাখে পোশাকের মোটিভ হিসাবে ব্যবহার করা হয়েছে শতরঞ্জি, উজবেক সুজানী, মধুবনী ও মানডালা। রঙের ক্ষেত্রে গুরুত্ব পেয়েছে লাল, সাদা, নীল, মেজেন্ট, পেস্ট, কমলা, টিয়া, ক্রিম ও ফিরোজা। ফেব্রিক হিসাবে থাকছে তাঁত, সুতি, হাফসিল্ক ও মসলিন। ভেল্যু অ্যাডে স্ক্রিনপ্রিন্ট, ব্লকপ্রিন্ট, অ্যাম্ব্রয়ডারি, প্যাঁচওয়ার্ক, হাতের কাজ ও কারচুপির ওপর এবার গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।’

বিবিআনা’র ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও ফ্যাশন ডিজাইনার লিপি খন্দকার বলেন, ‘গত বছর করোনার কারণে আর এবার রোজা পড়ে যাওয়ায় আমরা বৈশাখ নিয়ে খুব বেশি কাজ করিনি। গত বছর কাগজ কাটাই মোটিফ, অর্থাৎ আগে ঘর সাজাতে কিংবা উৎসবে কাগজ কেটে ফুল, পাতাসহ যে ডিজাইনগুলো করা হতো সে নকশাগুলো পোশাকের থিম হিসাবে ব্যবহার করেছিলাম।’

করোনা বেড়ে যাওয়ায় যে কোনো সামাজিক অনুষ্ঠান এড়িয়ে যাওয়া ভালো। বাসায় নিজের পরিবারের সঙ্গে ঘরোয়াভাবে নতুন পোশাকে বৈশাখ উদযাপন করুন।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম