নজরুল স্মৃতিবিজড়িত নামাপাড়া
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। মাত্র ২৩ বছরের সাহিত্যিক জীবনে সৃষ্টির যে প্রাচুর্য তা তুলনাবিহীন। সাহিত্যের নানা শাখায় বিচরণ করলেও তার প্রধান পরিচয় তিনি কবি। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট (১২ ভাদ্র) মৃত্যুবরণ করেন। কবির স্মৃতিবিজড়িত ত্রিশালের নামাপাড়া নিয়ে লিখেছেন-
ময়মনসিংহের ত্রিশাল নামাপাড়ায় শুকনি বিলের পাশে যে বটবৃক্ষে বসে বিদ্রোহী কবি নজরুল আনমনে বাঁশি বাজাতেন, সেটা এখন কালজয়ী সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
বিদ্রোহী কবির প্রতি শ্রদ্ধা ও তার গৌরবগাথা স্মৃতিকে চিরকালের জন্য অম্লান করে রাখতে ত্রিশালবাসী প্রতিষ্ঠা করেছেন নজরুল একাডেমি (নজরুলের বাল্য বিদ্যাপিঠ), বিদ্রোহী কবি নজরুল স্মৃতি পাঠাগার, কবি নজরুল স্মৃতি সংসদ, কবি নজরুল জামে মসজিদ ও দুখুমিয়া থিয়েটারসহ আনাচে-কানাচে অসংখ্য সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। ১৯১৪ সালে ত্রিশালের কৃতী সন্তান কাজী রফিজ উল্লাহ দারোগার সঙ্গে আসানসোলের একটি রুটির দোকানে পরিচয় হয় কবির।
সেখান থেকে ত্রিশালের কাজীর শিমলা দারোগাবাড়িতে কবিকে নিয়ে আসেন কাজী রফিজ। তাকে লেখাপড়ার জন্য ভর্তি করা হয় তৎকালীন দরিরামপুর হাইস্কুলে (বর্তমান সরকারি নজরুল একাডেমিতে)। তখন এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন বিপিন চন্দ্র। তিনি শিক্ষার্থীদের কঠোর শাসনের মধ্যে রাখতেন।
ওই শিক্ষকের স্মরণে শ্রেণিকক্ষের সামনে কবির লেখা ‘আমি এক পাড়াগাঁয়ে স্কুল পালান ছেলে, তার ওপর পেটে ডুবুরি নামিয়ে দিলেও ‘ক’ অক্ষর খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্কুলের হেডমাস্টারের চেহারা মনে করতেই আজও আমার জল তেষ্টা পেয়ে যায়’ ওই উক্তিটি মোজাইক করে রাখা হয়েছে।
কাজীর শিমলা গ্রামের রফিজ উল্লাহ দারোগাবাড়ির আঙ্গিনায় গড়ে উঠেছে নজরুল স্মৃতিকেন্দ্র। যেখানে কেটেছে কবির কৈশোর জীবন। বংশধররা কবির স্মৃতিকে ধরে রাখতে স্মৃতিকেন্দ্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য দিয়েছেন জমি। রফিজ উল্লাহ দারোগাবাড়ি স্মৃতিকেন্দ্রে রয়েছে কবির থাকার ব্যবহৃত খাট। পাঠাগারে আছে প্রায় পাঁচ হাজার বই। বিচুতিয়া বেপারিবাড়িতে রয়েছে আরেকটি স্মৃতিকেন্দ্র। কবির বংশধর হাফেজ আবুল কাশেম বলেন, আমি বিচুতিয়া বেপারিবাড়ির চতুর্থ বংশধর।
আমার বড় বাপ নজরুলকে জায়গির রাখেন। বিশ্ববিদ্যালয় ও স্মৃতিকেন্দ্রে আমরা জমিদান করেছি। কাজী রফিজ উল্লাহ দারোগাবাড়ির বংশধর নাতি কাজী মোকলেছুর রহমান বলেন, কবি নজরুলের নামে এখানে একটি পাঠাগার ছিল, তা বন্ধ করে স্মৃতিকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। রফিজ উল্লাহ দারোগাবাড়ি স্মৃতিকেন্দ্রের লাইব্রেরি সহকারী রাসেল হোসাইন বলেন, এখানে নজরুলের প্রথম পদচারণা। দুই স্মৃতিকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, কবি যে খাটে থাকতেন তা দ্রুত সময়ের মধ্যে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে দর্শনার্থী ছুটে আসেন কবির স্মৃতিবিজড়িত স্থান দেখতে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নামে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সবুজেঘেরা এক মনোরম পরিবেশ। সকাল-বিকাল আসছে দূরদূরান্ত থেকে কবিভক্ত দর্শনার্থী। কবির নামে স্মৃতিকেন্দ্র ঘুরে দর্শনার্থী সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকার কথা বলছেন। স্মৃতিবিজড়িত ত্রিশালে কবি যে পুকুরে গোসল করতেন, মাছ ধরতেন, সেই পুকুরঘাট দেখতে প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থী আসছেন।
নজরুল স্মৃতিবিজড়িত নামাপাড়া
জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম। মাত্র ২৩ বছরের সাহিত্যিক জীবনে সৃষ্টির যে প্রাচুর্য তা তুলনাবিহীন। সাহিত্যের নানা শাখায় বিচরণ করলেও তার প্রধান পরিচয় তিনি কবি। ১৯৭৬ সালের ২৯ আগস্ট (১২ ভাদ্র) মৃত্যুবরণ করেন। কবির স্মৃতিবিজড়িত ত্রিশালের নামাপাড়া নিয়ে লিখেছেন-
খোরশিদুল আলম মজিব
২৩ আগস্ট ২০২২, ০০:০০:০০ | প্রিন্ট সংস্করণ
ময়মনসিংহের ত্রিশাল নামাপাড়ায় শুকনি বিলের পাশে যে বটবৃক্ষে বসে বিদ্রোহী কবি নজরুল আনমনে বাঁশি বাজাতেন, সেটা এখন কালজয়ী সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
বিদ্রোহী কবির প্রতি শ্রদ্ধা ও তার গৌরবগাথা স্মৃতিকে চিরকালের জন্য অম্লান করে রাখতে ত্রিশালবাসী প্রতিষ্ঠা করেছেন নজরুল একাডেমি (নজরুলের বাল্য বিদ্যাপিঠ), বিদ্রোহী কবি নজরুল স্মৃতি পাঠাগার, কবি নজরুল স্মৃতি সংসদ, কবি নজরুল জামে মসজিদ ও দুখুমিয়া থিয়েটারসহ আনাচে-কানাচে অসংখ্য সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন। ১৯১৪ সালে ত্রিশালের কৃতী সন্তান কাজী রফিজ উল্লাহ দারোগার সঙ্গে আসানসোলের একটি রুটির দোকানে পরিচয় হয় কবির।
সেখান থেকে ত্রিশালের কাজীর শিমলা দারোগাবাড়িতে কবিকে নিয়ে আসেন কাজী রফিজ। তাকে লেখাপড়ার জন্য ভর্তি করা হয় তৎকালীন দরিরামপুর হাইস্কুলে (বর্তমান সরকারি নজরুল একাডেমিতে)। তখন এ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ছিলেন বিপিন চন্দ্র। তিনি শিক্ষার্থীদের কঠোর শাসনের মধ্যে রাখতেন।
ওই শিক্ষকের স্মরণে শ্রেণিকক্ষের সামনে কবির লেখা ‘আমি এক পাড়াগাঁয়ে স্কুল পালান ছেলে, তার ওপর পেটে ডুবুরি নামিয়ে দিলেও ‘ক’ অক্ষর খুঁজে পাওয়া যাবে না। স্কুলের হেডমাস্টারের চেহারা মনে করতেই আজও আমার জল তেষ্টা পেয়ে যায়’ ওই উক্তিটি মোজাইক করে রাখা হয়েছে।
কাজীর শিমলা গ্রামের রফিজ উল্লাহ দারোগাবাড়ির আঙ্গিনায় গড়ে উঠেছে নজরুল স্মৃতিকেন্দ্র। যেখানে কেটেছে কবির কৈশোর জীবন। বংশধররা কবির স্মৃতিকে ধরে রাখতে স্মৃতিকেন্দ্র ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য দিয়েছেন জমি। রফিজ উল্লাহ দারোগাবাড়ি স্মৃতিকেন্দ্রে রয়েছে কবির থাকার ব্যবহৃত খাট। পাঠাগারে আছে প্রায় পাঁচ হাজার বই। বিচুতিয়া বেপারিবাড়িতে রয়েছে আরেকটি স্মৃতিকেন্দ্র। কবির বংশধর হাফেজ আবুল কাশেম বলেন, আমি বিচুতিয়া বেপারিবাড়ির চতুর্থ বংশধর।
আমার বড় বাপ নজরুলকে জায়গির রাখেন। বিশ্ববিদ্যালয় ও স্মৃতিকেন্দ্রে আমরা জমিদান করেছি। কাজী রফিজ উল্লাহ দারোগাবাড়ির বংশধর নাতি কাজী মোকলেছুর রহমান বলেন, কবি নজরুলের নামে এখানে একটি পাঠাগার ছিল, তা বন্ধ করে স্মৃতিকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে। রফিজ উল্লাহ দারোগাবাড়ি স্মৃতিকেন্দ্রের লাইব্রেরি সহকারী রাসেল হোসাইন বলেন, এখানে নজরুলের প্রথম পদচারণা। দুই স্মৃতিকেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আক্তারুজ্জামান বলেন, কবি যে খাটে থাকতেন তা দ্রুত সময়ের মধ্যে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন।
দেশের বিভিন্ন জেলা-উপজেলা থেকে দর্শনার্থী ছুটে আসেন কবির স্মৃতিবিজড়িত স্থান দেখতে। জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের নামে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস সবুজেঘেরা এক মনোরম পরিবেশ। সকাল-বিকাল আসছে দূরদূরান্ত থেকে কবিভক্ত দর্শনার্থী। কবির নামে স্মৃতিকেন্দ্র ঘুরে দর্শনার্থী সম্ভাবনাময় পর্যটন এলাকার কথা বলছেন। স্মৃতিবিজড়িত ত্রিশালে কবি যে পুকুরে গোসল করতেন, মাছ ধরতেন, সেই পুকুরঘাট দেখতে প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে দর্শনার্থী আসছেন।
সম্পাদক : সাইফুল আলম, প্রকাশক : সালমা ইসলাম
প্রকাশক কর্তৃক ক-২৪৪ প্রগতি সরণি, কুড়িল (বিশ্বরোড), বারিধারা, ঢাকা-১২২৯ থেকে প্রকাশিত এবং যমুনা প্রিন্টিং এন্ড পাবলিশিং লিঃ থেকে মুদ্রিত।
পিএবিএক্স : ৯৮২৪০৫৪-৬১, রিপোর্টিং : ৯৮২৩০৭৩, বিজ্ঞাপন : ৯৮২৪০৬২, ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৩, সার্কুলেশন : ৯৮২৪০৭২। ফ্যাক্স : ৯৮২৪০৬৬
E-mail: jugantor.mail@gmail.com
© সর্বস্বত্ব স্বত্বাধিকার সংরক্ষিত
এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা, ছবি, অডিও, ভিডিও অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি।
Developed by The Daily Jugantor © 2023