প্রকৃতি
মন মাতে ছাতিম ফুলের ঘ্রাণে
অলোক আচার্য
প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২২, ০৬:০০ পিএম
প্রিন্ট সংস্করণ
|
ফলো করুন |
|
|---|---|
শীতের শুরুতেই ফোটে ছাতিম ফুল। স্থানীয়ভাবে একে ‘ছাতিয়ান, ছাত্তিয়ান’ নামেও ডাকা হয়। তবে ফুলটির একটি বড় বৈশিষ্ট্য হলো তীব্র গন্ধযুক্ত ফুল। এর ইংরেজি নাম ‘ডেভিলস ট্রি’। রয়েছে বহু ঔষধি গুণাগুণ। সন্ধ্যার পরই রাস্তার আশপাশে বা বাড়ির পাশ থেকে তীব্র গন্ধযুক্ত কোনো ফুলের ঘ্রাণ ভেসে আসে, তবে সেটি ছাতিম হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কারণ, অনেক দূর থেকেই ছাতিম ফুলের গন্ধ পাওয়া যায়। গ্রাম-বাংলার রাস্তাঘাট, নদীর তীর, বসতবাড়ির অনাবাদি জায়গা, স্কুল-কলেজের পাশে এ গাছ দেখা যায়। অনেক উঁচু গাছ হয় বিধায় এর গন্ধ অনেক দূর পর্যন্ত যায়। ছাতিম ফুলের সৌন্দর্যও মোহিত করে প্রকৃতিপ্রেমীকে। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ছাতিম ফুলের গন্ধের তীব্রতা। সম্ভবত ছাতার মতো চারদিকে ছড়িয়ে থাকে বলেই এ গাছের নাম ছাতিম। উইকিপিডিয়া থেকে জানা যায়, ছাতিম গাছ ‘অ্যাপোসাইনেসি’ বর্গের অন্তর্ভুক্ত একটি উদ্ভিদ। এর বৈজ্ঞানিক নাম Alstonia scholaris. এর আদি নিবাস ভারতীয় উপমহাদেশ ও দক্ষিণ পূর্ব এশিয়ায়। ক্রান্তীয় অঞ্চলের এ গাছটি বাংলাদেশসহ ভারতীয় উপমহাদেশের সর্বত্র জন্মে। গাছটি আর্দ্র, কর্দমাক্ত, জলসিক্ত স্থানে জন্মে। ছাতিম মূলত সাতটি পাতা একসঙ্গে থাকে বলে সংস্কৃত ভাষায় একে সপ্তবর্ণা বা সপ্তপর্ণা নামে ডাকা হয়। এ গাছ দীর্ঘ ৪০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়। গাছটির মূল আকর্ষণ হলো এর ফুল। শাখার শীর্ষে থোকায় থোকায় ক্ষুদ্রাকৃতির ফুল ফোটে। সেই ফুল থেকেই সন্ধ্যার পর তীব্র গন্ধ বের হয়। এ তীব্র মন মাতানো গন্ধে মুখ ফিরিয়ে থাকতে পারেননি কবি-সাহিত্যিকরাও। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘আরণ্যকে’ ছাতিম গাছের চমৎকার বর্ণনা রয়েছে।
