Logo
Logo
×

ঘরে বাইরে

ফ্যাশনে পিছিয়ে নেই ছোটরাও

Icon

ফারিন সুমাইয়া

প্রকাশ: ২১ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০০ এএম

প্রিন্ট সংস্করণ

ঋতুর পালা বদলে এবার আগমন শীতের। হাঁটিহাঁটি পা পা করে তার জানান দিচ্ছে প্রকৃতি। রঙিন ফুলে ভরে ওঠা সবুজ লতাপাতার গাছগুলো শীতের সকালের কুয়াশায় হয়ে উঠবে মলিন। শিশিরে ভিজে উঠবে ঘাস আর সূর্যের দেখা মিলতে অপেক্ষা করতে হবে লম্বা সময়। হাড়হীম শীত থেকে বাঁচতে উষ্ণতার চাদর গায়ে জড়াবে সবাই। শহরের বাইরের অলিগলিতে আগুন পোহাতে চোখে পড়বে ছোট ছোট ভিড়। শীতের এ সময়ে তাই গল্প-গুজবে মেতে ওঠে সবাই।

চায়ের কাপ আর কেটলির ব্যস্ততা সবচেয়ে বেশি দোকানে দোকানে। মোড়ে মোড়ে পিঠাপুলির পসরাও বসে যায় নানা পদের ভর্তা নিয়ে। শীতের আগমন মলিনতা নিয়ে এলেও তার মধ্যে থাকে ভিন্ন বৈচিত্র্য। তবে শীত এলে সঙ্গে নিয়ে আসে ঠান্ডা, সর্দি, কাশির মতো নানা রোগবালাই। তাই বড়দের পাশাপাশি সুরক্ষা প্রয়োজন বাড়ির ছোট্ট সদস্যদের।

শীতের আগমনের ঠিক আগের এ মুহূর্তে ছোট্ট সদস্যদের চাই বাড়তি যত্ন। যেহেতু একদিকে ঋতুর পালা বদল, অন্যদিকে শীতের আগমনে শিশু ঠান্ডা-সর্দির মতো রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হয় সবচেয়ে বেশি। শীতের আগমনের ঠিক এসময় পোশাক পরিবর্তনের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। গরমের পোশাকের জায়গা দখল করে নেবে শীতের পোশাক। যেহেতু শীত শুরুর দিকে, তাই ভারী পোশাক এড়িয়ে চলতে হবে এখন। হাতালম্বা পোশাকেই আরাম মিলবে। ফুলহাতার পোশাকের পাশাপাশি ফুলপ্যান্ট আর একটু ঢিলেঢালা লম্বাটে ফ্রক, কামিজ এ সময়ের আবহাওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযোগী। হাতালম্বা শার্ট, কামিজ কিংবা ফ্রক কেবল ঘরের শীতের আমেজের জন্যই উপযোগী। বাইরে যাওয়ার বেলায় একটু ভারী পোশাকে সাজিয়ে তুলতে হবে শিশুকে। এ ক্ষেত্রে ব্লেজার, জ্যাকেট অথবা পাতলা সোয়েটার এ সময়ের শীত সুরক্ষায় সবচেয়ে আরামদায়ক। এতে শীতের হাত থেকে সুরক্ষায় থাকবে শিশু আর দেখতেও লাগবে দারুণ। ঘরে কিংবা বাইরের যে কোনো অনুষ্ঠান ছাড়াও স্কুলের সকালের দিকের পোশাকের সঙ্গে চাই মানানসই গরম কাপড়। এক্ষেত্রে স্কুল ড্রেসের সঙ্গে মিলিয়ে কালো কিংবা নীল রঙের সোয়েটার সবচেয়ে ভালো। বাইরের অনুষ্ঠানের ক্ষেত্রে আলাদা জ্যাকেট বা ভারী কাপড়ের পোশাক শিশুর জন্য বেছে নিতে পারেন।

অন্যদিকে বয়সের পাশাপাশি শিশুর পছন্দের দিকটি মাথায় রেখে পোশাক বেছে নিতে হবে। খুব ছোট্ট শিশুদের জন্য আঁটসাঁট কিংবা ভারী মোটা কাপড়ের পোশাক এড়িয়ে যেতে হবে। কিছুটা ভারী কাপড়ের সুতির পোশাক কিংবা ফুলহাতা গেঞ্জি রাখতে পারেন নিত্যদিনের পোশাকের তালিকায়। এ ক্ষেত্রে জাম্পস্যুট সবচেয়ে ভালো। এতে শিশু শীত থেকে থাকবে সম্পূর্ণ সুরক্ষিত। এ ছাড়া বড় শিশুদের কানটুপি কিংবা পায়ের মোজা পরাতে পারেন। এতে শিশু দ্রুত উষ্ণতা পাবে। এ ছাড়া আরও একটু বয়সে বড় শিশুর বেলায় গরম কাপড়ের তালিকায় যুক্ত করতে পারেন হুডি কিংবা ড্যানিমের জ্যাকেট। পোশাকের এ ভিন্নতার ক্ষেত্রে আরও আছে রঙের তালিকা। মেয়ে শিশুদের ক্ষেত্রে গোলাপি, হালকা সবুজ, মেজেন্ডা এ রংগুলো বেশি পছন্দের হয়ে থাকে। ছেলেদের ক্ষেত্রে লাল, কমলা, নীল রঙের ব্যবহার পোশাকের রঙের মধ্যে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে।

এছাড়া মেয়েদের ক্ষেত্রে সালোয়ার-কামিজের সঙ্গে ড্যানিমের জ্যাকেট, কুর্তির সঙ্গে পাতলা সোয়েটার মানানসই। আর ছেলেদের পোশাকের টি-শার্টের সঙ্গে চামড়ার লং জ্যাকেট কিংবা ফুলহাতার শার্টের সঙ্গে হাফ সোয়েটার মানিয়ে যায় সহজেই। তবে শীতের পোশাকের বাইরে যেই পোশাক শিশুকে পরানো হচ্ছে, তা যাতে খুব আঁটসাঁট না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। এতে করে শিশু আরাম পাবে; পাশাপাশি শীত থেকেও সুরক্ষিত থাকবে। বাইরে কোথাও যাওয়ার সময় শিশুদের ক্ষেত্রে আলাদা শীতের কাপড় সঙ্গে নেওয়া প্রয়োজন। এতে শীতের কাপড় নোংরা হয়ে গেলেও তা পালটে দেওয়া নিয়ে ঝামেলা হবে না। অন্যদিকে শীতের সময় কান কিংবা হাত-পায়ের অংশ শীতের বাতাস সবার আগে তার আগমন বার্তা দেয়। তাই শিশুকে শীতের পোশাকের পাশাপাশি এ সময়ে পায়ের মোজা জোড়া পরিয়ে রাখা ভালো। কানটুপি পরাতে পারেন শীতের বাতাস বুঝে। এর বাইরে স্পাইডার ম্যান, ব্যাটম্যানসহ নানা কার্টুন চরিত্রের ডিজানের শীতের পোশাক পাওয়া যায়। এতে করে শিশু শীতের পোশাকের প্রতি আরও বেশি আকৃষ্ট হবে। মেয়েদের ক্ষেত্রে নানা ডিজাইন, সিনড্রেলার মতো কার্টুন চরিত্রগুলো পোশাকের ডিজাইনে চোখে পড়ে। আরও থাকে হ্যারি পটার, পোকেমন, আয়রনম্যানের চরিত্র। এতে করে শীতের পোশাকেও ভিন্নতা আসে। ডিজাইনের বেলাতেও ছেলে এবং মেয়ে শিশুদের কথা মাথায় রেখে কাটিংয়ের ক্ষেত্রে ভিন্নতা রাখা হয়; যাতে করে শিশু শীতের পোশাক আরাম আর স্বাচ্ছন্দ্যে পরতে পারে।

পোশাকের পাশাপাশি শিশুর যাতে অতিরিক্ত ঘাম না হয়, সে বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে। তাই গরম কাপড় এখনোই শিশুকে পরানো যাবে না। শিশুর যাতে ঠান্ডা না লাগে, সে বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে। শিশুর গোসলে উষ্ণ গরম পানি ব্যবহার করতে হবে। খুব ছোট্ট শিশুর বেলায় সকালে নরম রোদ পোহানোর বিষয়টি নিয়ম করে প্রতিদিনের তালিকায় রাখতে পারেন। খাবার-দাবারের বেলায় শিশু যাতে বাইরের খাবার না খায় আর এ সময়ের মৌসুমি ফলমূল খায়, সেভাবেই তার খাবার তালিকা সাজাতে হবে। এতে করে শিশু বাইরে এবং ভেতর সবদিক থেকেই থাকবে সুরক্ষিত আর শীতের পুরো মৌসুমজুড়েই থাকবে সুস্থ।

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম