ওমিক্রনের লক্ষণ ও তীব্রতা

 ডা. এম সেলিম উজ্জামান 
১৫ জানুয়ারি ২০২২, ১২:০০ এএম  |  প্রিন্ট সংস্করণ

করোনাভাইরাস ‘ওমিক্রন ভ্যারিয়েন্টটি’ আগের উদ্বেগজনক সংস্করণগুলোর থেকে আলাদা এবং খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়ার একটি অদ্ভুত ক্ষমতা রাখে। এটিও স্পষ্ট যে, ওমিক্রন-মিউটেশনগুলো আমাদের ভ্যাকসিন দ্বারা প্রদত্ত সুরক্ষা ক্ষমতার জন্য হুমকি হয়ে উঠতে পারে। বিস্তারিত লিখেছেন ডা. এম সেলিম উজ্জামান

‘ওমিক্রন’ করোনাভাইরাসের নতুন ভ্যারিয়েন্ট। এটি আগের সংস্করণগুলোর তুলনায় কম গুরুতর। তবে বেশি সংক্রামক। এ ছাড়াও ওমিক্রনের লক্ষণের ঝুঁকি নির্ভর করে টিকা এবং বুস্টার ডোজ নেওয়া হয়েছে কিনাসহ বয়স, সামগ্রিক স্বাস্থ্যগত অবস্থা এবং রোগ প্রতিরোধের পুষ্টিগত অবস্থার উপর। ‘ওমিক্রন সংক্রমণ’ পরবর্তী উপসর্গগুলো দ্রুত আসে, লক্ষণগুলো প্রকাশ হতে তিন দিন সময় লাগে, যা ডেল্টার ক্ষেত্রে প্রায় চার দিন সময় নেয়, এবং আগে কোভিড-১৯-এ পাঁচ দিন এরও বেশি সময় নিয়েছে। তবে আগের করোনাভাইরাস ভ্যারিয়েন্টগুলোর মতো ওমিক্রনে সংক্রমিত বেশিরভাগ রোগীর সমস্যাগুলো তুলনামূলকভাবে দ্রুত সমাধান হয় এবং হাসপাতালে ভর্তির তেমন প্রয়োজনও হয় না।

ওমিক্রন ভেরিয়েন্টের লক্ষণগুলো সাধারণ শ্বাসযন্ত্রের সংক্রমণের মতো, যেমন- সর্দি, গলা ব্যথা, নাক বন্ধ এবং হালকা-কাশি এবং জ্বর জ্বর ভাব। ৫টি প্রধান উপসর্গ/লক্ষণ হলো- সর্দি, নাক দিয়ে পানি পড়া, মাথা ব্যথা, তীব্র ক্লান্তি, হাঁচি এবং গলা ব্যথা। তবে কো-মরবিড রোগীর (ডায়াবেটিস, স্থূলতা, ক্যানসার, হৃদরোগ, হাঁপানি, ব্রঙ্কাইটিস, ইমিউনোসাপ্রেসড, অন্যান্য দীর্ঘস্থায়ী জটিল রোগ এবং যাদের অন্য উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ গুরুতর রোগ আছে, বয়স্ক ব্যক্তি বা অন্তর্নিহিত সমস্যা/রোগের অধিকারী ব্যক্তিরা, এসব অবস্থার কারণে) ক্ষেত্রে সেকেন্ডারি ইনফেকশন ও অন্যান্য গুরুতর রোগে জীবন-হুমকির অবস্থা হতে পারে। কিছু রোগীর ক্ষেত্রে আইসিইউ এবং মেকানিক্যাল ভেন্টিলেটর প্রয়োজর্ন হতে পারে। ওমিক্রনের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আগের ভেরিয়েন্টগুলোর মতো গন্ধ ও স্বাদ হ্রাস পায় না এবং রোগীদের (বয়স্ক রোগীসহ) শ্বাসকষ্টের সমস্যাও তুলনামূলকভাবে কম। এছাড়া ভাইরাসের আপাত পরিবর্তনে ফুসফুসে গুরুতর সংক্রমণও সাধারণত কম। তবে অনেকেই বমি-বমি ভাব, রাতে শরীরে ঘাম এবং পিঠের নিচের দিকে ব্যথা, উপসর্গগুলো কথা উল্লেখ করেন।

ওমিক্রন কীভাবে প্রতিরোধ করবেন :

ষসঠিকভাবে নাক-মুখ ঢেকে মাস্ক পরুন।

ষসঠিকভাবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার ব্যবহার করুন।

ষপ্রত্যেককে টিকা নিন এবং অন্যকে উৎসাহিত করুন।

ষজনাকীর্ণ স্থানে অপ্রয়োজনীয় ভ্রমণ এড়িয়ে চলুন।

ষঅসুস্থবোধ করলে দ্রুত পরীক্ষা করে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং বেসিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলুন।

লেখক : ফিজিশিয়ান সায়েন্টিস্ট, ইমার্জিং ইনফেকশাস ডিজিজ, আইইডিসিআর, ঢাকা

যুগান্তর ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করুন