Logo
Logo
×

সুস্থ থাকুন

শিশুর ওজন ও উচ্চতা বৃদ্ধিতে পুষ্টির সম্পর্ক

Icon

তামান্না রুবিন

প্রকাশ: ২৮ জানুয়ারি ২০২২, ০৬:০০ পিএম

প্রিন্ট সংস্করণ

সঠিকভাবে শিশুর বৃদ্ধি ও বিকাশ হচ্ছে কিনা, তা নিয়মিত জানতে হবে। শিশু ভূমিষ্ঠের পর ১ম সপ্তাহে ওজন কমে এবং ২-৩ সপ্তাহে ওজন স্থির থাকে। এটা স্বাভাবিক। এরপর থেকে ধীরে ধীরে ওজন বাড়তে থাকে। প্রথম ৩ মাসে দৈনিক গড়ে ওজন বাড়ে ২৫-৩০ গ্রাম এবং পরবর্তী মাসগুলোতে কিছুটা ধীরে ওজন বাড়তে থাকে। ৩-১২ মাসে গড়ে ৪০ গ্রাম এবং ৬ মাস বয়সে শিশুর ওজন জন্মের সময়ের ওজনের দ্বিগুণ হয়, ১ বছরে ৩ গুণ, ২ বছরে ৪ গুণ, ৩ বছরে ৫ গুণ এবং ৫ বছরে ৬ গুণ হয়। জন্ম ওজনের পার্থক্যের কারণে একই বয়সি দুটি শিশুর ওজনের কিছুটা তারতম্য ঘটতে পারে। তবে, সঠিক পরিচর্যা আর পুষ্টি পেলে তা স্বাভাবিক ওজনে পৌঁছে। শিশু যদি পর্যাপ্ত পুষ্টি পায়, বার বার রোগাক্রান্ত না হয়, সেই সঙ্গে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা, টিকা এবং একই সঙ্গে যত্নময় পরিবেশ পায় তাহলে শিশু স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠে। শিশুর বর্ধন ও বিকাশ পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। শিশুর বয়স বাড়ার সঙ্গে তার ওজন ও উচ্চতা যেমন বৃদ্ধি পায় তেমনি তার অঙ্গ সঞ্চলন, শক্তি, সামর্থ্য ও বৃদ্ধি পায়। যেমন-

শিশুর বয়স প্রতি মাসে গড় ওজন বৃদ্ধি

জন্ম হতে ৬ মাস ৬০০-৮০০ গ্রাম

৭-১২ মাস ৩০০-৪০০ গ্রাম

১৩-২৪ মাস ১৫০-২০০ গ্রাম

শিশুর বয়স শিশুর র্বধন ও বিকাশ

৩.৮-৯.২ (গড়ে ৬) মাস শিশু সাহায্য ছাড়া বসতে পারে

৫.২-১৩.৫ (গড়ে ৮.৫) মাস হাত ও হাঁটু দিয়ে হামাগুড়ি দিতে পারে

৫.৯-১৩.৭ (গড়ে ৯.২) মাস সাহায্য নিয়ে হাঁটতে পারে

৮.২-১৭.৬ (গড়ে ১২.১) মাস একা একা হাঁটতে পারে

শিশুর মা-বাবা অথবা কেয়ারগিভার যিনি, তাকে বেশ কিছু বিষয় খেয়াল রাখতে হবে, যেমন- জন্মের পর যত দ্রুত সম্ভব শিশুকে শাল দুধ বা কোলোস্ট্রাম দেওয়া, ৬ মাস পর্যন্ত অর্থাৎ ১৮০ দিন এক্সক্লুসিভ ব্রেস্ট ফিডিং, ১৮১ দিনে পৌঁছালে কমপ্লিমেন্টারি ফিডিং তাকে সঠিকভাবে দেওয়া হচ্ছে কিনা। সেই সঙ্গে খেয়াল রাখা জরুরি খাবারটির ফ্রিকোয়েন্সি, এমাউন্ট, টেক্সচার যেন সঠিক হয়, ডাইভারসিফাইড হয়। যথেষ্ট পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা অবলম্বন এবং অ্যাকটিভ রেসপন্স বা সক্রিয়ভাবে শিশুকে খাওয়ানোর বিষয়টিও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

শিশুর স্বাভাবিক বৃদ্ধি ব্যাহত, ঘনঘন রোগাক্রান্ত হওয়া, প্রয়োজনমতো ভিটামিন ‘এ’ সাপ্লিমেন্ট দেওয়া এবং কৃমিতে আক্রান্ত হলে কৃমিনাশক দেওয়া সেসব বিষয়ে ও যথেষ্ট সচেতনতা জরুরি। শিশু কোনো কারণে অসুস্থ হলে ওজন কমতে পারে, কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে সে ঘনঘন অসুস্থ হচ্ছে কিনা, শিশুর যদি ওজন হ্রাস পায় অথবা স্থির থাকে তবে বুঝতে হবে শিশুর পুষ্টি সরবরাহ যথার্থ হচ্ছে না। এমন হতে থাকলে অবশ্যই আপনার নিকটবর্তী একজন পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন।

লেখক : পথ্য ও পুষ্টিবিদ, আল-রাজী হাসপাতাল, ঢাকা

Logo

সম্পাদক : আবদুল হাই শিকদার

প্রকাশক : সালমা ইসলাম